সকল সেক্টরে ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত কর
বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে ৩১ মার্চ ও ১ এপ্রিল’১৭ সারা দেশের নির্ধারিত সদস্যদের নিয়ে দুই দিনব্যাপী কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক শিক্ষা শিবির ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। এবারের রাজনৈতিক শিক্ষা শিবিরের বিষয় ছিল ‘সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি’ ও ‘মাক্সিম গোর্কির মা’ উপন্যাস। নির্ধারিত বিষয়ের উপর অংশগ্রহণকারী কমরেডরা আলোচনা করেন। বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি কমরেড জহিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে রাজনৈতিক শিক্ষা শিবিরে শ্রমিক আন্দোলনের নানা দিক তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশর সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় কার্যপরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী।
কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী তার আলোচনায় বলেন, “মুক্তিযুদ্ধসহ সকল গণতান্ত্রিক সংগ্রামে শ্রমিকের রক্ত ঝরলেও, স্বাধীন দেশে তীব্র শ্রম শোষণের কারণে শ্রমিকরা মানবেতর জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। ধনীদের সম্পদ প্রতিনিয়ত বাড়ছে, কিন্তু শ্রমিক-কৃষক গরিব-মধ্যবিত্ত বিপুল জনসাধারণ মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, অভাব-অনটনে হাঁসফাঁস করছে। এদেশের সম্পদ সৃষ্টিতে যাদের অবদান সবচেয়ে বেশি সেই শ্রমিক হাড়ভাঙ্গা খাঁটুনি খেটেও মানুষের মতো বাঁচার উপযোগী মজুরি পায় না, কৃষক ফসলের ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত, প্রবাসী শ্রমিকরা প্রায় দাসের মত জীবনযাপন করে, মধ্যবিত্ত শিক্ষিত শ্রমশক্তি অনিশ্চয়তাপূর্ণ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত, ছিন্নমূল বস্তিবাসীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। মুষ্টিমেয় ধনকুবের গোষ্ঠী এদেশের জমি-কারখানা-উৎপাদন যন্ত্রসহ সবকিছুর মালিক, তাদের স্বার্থেই অর্থনীতি-রাজনীতি-সমাজ পরিচালিত হচ্ছে। বুর্জোয়া রাজনৈতিক দলসমূহ এই ব্যবস্থাকেই টিকিয়ে রেখে তার সুবিধা ভোগ করতে চায়। ব্যক্তিমালিকানাভিত্তিক এই পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কারণেই উদয়াস্ত পরিশ্রম করেও গরিবের দুর্দশা কাটে না, অন্যদিকে মালিকরা টাকার পাহাড় গড়ে। এই অবস্থা পাল্টাতে হলে চাই শ্রমিকদের সংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ লড়াই। যতদিন রাষ্ট্র মালিকশ্রেণীর হাতে থাকবে, শ্রমিকশ্রেণীর দুর্দশা কাটবে না। তাই অর্থনৈতিক দাবি-দাওয়া আদায়ের পাশাপাশি রাজনীতি সচেতন বিপ্লবী ধারার শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।”
শিক্ষা শিবিরে নির্ধারিত বিষয়ের উপর আলোচনা করেন বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় কার্যপরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড মানস নন্দী ও বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড উজ্জ্বল রায়। শিক্ষা শিবির থেকে শ্রমজীবী মানুষের মুক্তির জন্য বিপ্লবী ধারার শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়।