বাসদ (মার্কসবাদী)’র দাবি পক্ষের ডাক
ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন রুখে দাঁড়ান! জনজীবনের সংকট নিরসন ও গণতান্ত্রিক অধিকারের দাবিতে আন্দোলন গড়ে তুলুন
জনজীবনের জ্বলন্ত সমস্যা সমাধানের দাবিতে বাসদ (মার্কসবাদী) সারাদেশে দাবিপক্ষ ঘোষণা করেছে। দেশে চলছে ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন, নিত্যপ্রয়োজনীয় সমস্ত কিছুর মূল্য ঊর্ধ্বমুখী। এ অবস্থায় বাসদ (মার্কসবাদী) দীর্ঘস্থায়ী ও ধারাবাহিক গণআন্দোলনের ডাক দিয়েছে। আগামী ৫ থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী দাবিসমূহ প্রচার করা হবে। দাবিগুলো হচ্ছে—
১. চালের দাম কমাতে হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে TCB কে সক্রিয় করতে হবে। আর্মি-পুলিশের রেটে রেশনব্যবস্থা চালু কর। গ্যাস-বিদ্যুতের বর্ধিত দাম প্রত্যাহার কর।
২. শ্রমিকের ন্যূনতম জাতীয় মজুরি ১৬০০০ টাকা নির্ধারণ কর, অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত কর।
৩. ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত কর। স্বল্পমূল্যে কৃষি উপকরণ সরবরাহ কর। বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের দীর্ঘমেয়াদি সহায়তা দাও।
৪. ‘ঘরে ঘরে চাকুির’র প্রতিশ্রুতি রক্ষা কর। বেকারদের নাম তালিকাভুক্ত করে কর্মসংস্থান না হওয়া পর্যন্ত তাদেরকে বেকার ভাতা দিতে হবে। রাষ্ট্রীয় শূণ্যপদে নিয়োগ দাও।
৫. পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা বাতিল কর। প্রশ্নফাঁস ও শিক্ষাবাণিজ্য বন্ধ কর।
৬. চিকিৎসাখাতে ব্যবসা বন্ধ কর। সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থার অধীনে প্রত্যেক নাগরিকের উপযুক্ত চিকিৎসাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে।
৭. নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে দোষীদের দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাও। পর্ণোগ্রাফী, মাদক ও জুয়ার বিস্তার রোধ কর।
৮. দুর্নীতি ও লুটপাট বন্ধ কর। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নাও।
৯. রাষ্ট্রীয় হেফাজতে বিচারবহির্ভূত হত্যা-গুম-ক্রসফায়ার বন্ধ কর। মত প্রকাশের অধিকার হরণ করা চলবে না।
১০. জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)’র সাধারণ সম্পাদক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী এক বিবৃতিতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা প্রসঙ্গে নিম্নোক্ত প্রতিক্রিয়া প্রদান করেছেন —
“নিজেরা স্বৈরতান্ত্রিক ও দুর্নীতিগ্রস্ত শাসন চালিয়ে অনির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকার যখন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের দুর্নীতির বিচারে অতি তৎপর হয়, তখন স্বাভাবিকভাবেই এর উদ্দেশ্য সম্পর্কে জনমনে সন্দেহ জাগে। সম্প্রতি বিচারবিভাগের ওপর সরকারি নিয়ন্ত্রণ যেভাবে পাকাপোক্ত করা হয়েছে তাতে সন্দেহ আরো ঘনীভূত হয়েছে। ৫ জানুয়ারি ২০১৪-এর মতো আরেকটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন প্রহসনের নির্বাচন করতে সরকারের রাজনৈতিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এই রায় ব্যবহৃত হবে — তা মনে করার যথেষ্ট কারণ আছে।”
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, “বিএনপি আমলসহ প্রত্যেকটি সরকারের সময়েই শীর্ষ মহলের সংশ্লিষ্টতায় দুর্নীতি ও লুটপাট হয়েছে — এ কথা মানুষ অভিজ্ঞতা থেকেই বিশ্বাস করে। আওয়ামী লীগ সরকারের গত ৯ বছরের শাসনামলে দলীয় লোকদের সংশ্লিষ্টতায় ব্যাংক-শেয়ারবাজার লুট, অর্থ পাচার, বিদ্যুৎ খাতসহ বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্পে হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি হয়েছে। এসম্পর্কে ওঠা অভিযোগগুলোর কোনোটিরই সুষ্ঠু তদন্ত-বিচার-শাস্তি হয়নি, বরং অপরাধীদের প্রশ্রয় দেয়া হয়েছে। সরকারের সহযোগী হওয়ায় মহাদুর্নীতিবাজ এরশাদের মামলাগুলোরও কোনো অগ্রগতি নেই। ফলে, দুর্নীতিবাজদের বিচারে সরকার আন্তরিক — এ কথা মনে করার কোনো কারণ নেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে শেখ হাসিনার নামে দায়েরকৃত মামলাগুলো প্রত্যাহার করে খালেদা জিয়ার মামলা চালানোর ঘটনাতেই সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ও নৈতিক অবস্থান পরিষ্কার হয়ে যায়।”
কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী বলেন, “বর্তমান যুগে বুর্জোয়া ব্যবস্থা আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত। শাসকগোষ্ঠী পরস্পরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার উদ্দেশ্যে, দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যবস্থার অবসান প্রকৃতপক্ষে এরা কেউই চায় না। ফলে আজ একদিকে দুর্নীতিবাজ বুর্জোয়া দলগুলোকে প্রত্যাখান করা দরকার, অন্যদিকে বিরোধী শক্তিকে নির্মূল করে দমনমূলক ফ্যাসিবাদী শাসন দীর্ঘায়িত করার চক্রান্তের বিরুদ্ধে সো”চার হওয়া প্রয়োজন।”
পিইসি পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে স্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচির উদ্বোধন
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে গত ২ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বরে পিইসি পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে স্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নাঈমা খালেদ মনিকার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক স্নেহাদ্রি চক্রবর্ত্তী রিন্টুর পরিচালনায় স্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, গবেষক, প্রাবন্ধিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সংখ্যাতিরিক্ত অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক। বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস এর সহযোগী অধ্যাপক ড. মোশাহিদা সুলতানা, সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা: জয়দীপ ভট্টাচার্য।
বক্তরা বলেন, শিক্ষার মূলভিত্তি হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা। সারা বিশ্বে শিশুশিক্ষাকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়, গবেষণা হয় শিক্ষা পদ্ধতি নিয়ে। আর আমাদের দেশে শিশুদেরকে গিনিপিগ বানিয়ে বছর বছর শিক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তন করা হয়। বিগত দশ বছরে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তন হয়েছে অনেক। কখনো সৃজনশীল, কখনো ৭টি সৃজনশীল, কখনো বা প্রশ্নপত্র ও পরীক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তন। ২০০৯ সাল থেকে বর্তমান সরকার প্রাথমিক সমাপনী শিক্ষা (পিইসি) পরীক্ষা চালু করে। ইতোমধ্যেই এই পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে অভিভাবক এবং দেশের শিক্ষিত মহলে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আমরা মনে করি, এই পরীক্ষা শিশুদের মানসিক বিকাশে সহায়তার বদলে শিক্ষাব্যবসার পথকেই ত্বরাণিত করছে। তাই অবিলম্বে পিইসি পরিক্ষা বাতিল করা হোক।’
স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান থেকে আগামী ২২ এপ্রিল ’১৮ দেশব্যাপী জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এবং ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সংগৃহীত স্বাক্ষরসহ স্মারকলিপি পেশ করা হবে।
হুমায়ূন কবীর লাল সালাম
কমরেড হুমায়ূন কবির বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) পড়ার সময় সমাজ পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে রাজনীতিতে যুক্ত হন। ১৯৮৪ সালে তিনি সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বুয়েট শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৮৮ সালে সভাপতি নির্বাচিত হন। এই সময়ে তিনি মন-প্রাণ ঢেলে সংগঠনের কাজে নিজেকে নিবেদন করেছিলেন। পরবর্তীতে পারিবারিক কারণে চাকুরিতে যোগ দেন। যখন যেখানে চাকুরি করেছেন, পার্টির সাথে নিবিড় যোগাযোগ রাখতেন, ভালো-মন্দ জানতে চাইতেন, সাধ্যমত সহযোগিতার চেষ্টা করতেন। দেশের বাইরে যাবার আগে তিনি দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে উচ্চ পদস্থ প্রকৌশলী হিসাবে কর্মরত ছিলেন। সে সময় পার্বতীপুর, ফুলবাড়ীতে সংগঠন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তিনি ভূমিকা রাখেন। ফুলবাড়ীতে ভূমিরক্ষার আন্দোলনেও তিনি সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। এলাকার শ্রমজীবী মানুষের সাথে তাঁর ছিল নিবিড় বন্ধত্ব। তিনি দিনাজপুর জেলা পার্টিরও সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে দলের অভ্যন্তরে মার্কসবাদ-লেনিনবাদ ও শিবদাস ঘোষের চিন্তাধারার ভিত্তিতে দল পরিচালিত হবে কিনা — এ সম্পর্কিত মতবাদিক বিতর্কে তিনি আদর্শিক অবস্থান গ্রহণ করেন এবং তারপর জীবনের শেষদিন পর্যন্ত বাসদ (মার্কসবাদী)’র একজন সক্রিয় সমর্থক হিসেবে কাজ করে যান। বিশেষ পরিস্থিতিতে তাঁকে সপরিবারে কানাডায় চলে যেতে হয়েছিল। সেখান থেকেও তিনি পার্টির সাথে জীবন্ত সম্পর্ক রক্ষা করেন। দিনাজপুরের পার্বতীপুরে পারাবারিক সম্পত্তির একটি অংশ ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’র মাধ্যমে পার্টিকে দেয়া যায় কিনা — সে চেষ্টাও তিনি করেন।
সমাজতান্ত্রিক আদর্শের প্রতি নিবেদিত প্রাণ মানুষ হুমায়ূন কবীর অত্যন্ত সরল জীবন যাপন করতেন। নিরহঙ্কারী এই মানুষটি নিজের জীবনে মার্কসবাদ-লেনিনবাদ-শিবদাস ঘোষের চিন্তার অনুশীলন করার চেষ্টা করেছিলেন। কানাডায় থাকাকালীন তাঁর ফুসফুস ক্যান্সার ধরা পড়ে। ক্যান্সারের চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই কমরেড হুমায়ূন কবীর গত ৪ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। আমরা তাঁর সংগ্রামী স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।
কমরেড হুমায়ূন কবীর — লাল সালাম!
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কাউন্সিল ও সম্মেলন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচন, আবাসন সংকট নিরসন করে সন্ত্রাস-দখলদারিত্বমুক্ত গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস নিশ্চিত করার দাবিতে গত ৬ ফেব্রুয়ারি অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে অনুষ্ঠিত হলো সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ১১তম সম্মেলন। উদ্বোধনী র্যালির পর বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নাঈমা খালেদ মনিকা ও বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় কার্যপরিচালনা কমিটির সদস্য সাইফুজ্জামান সাকন। সম্মেলনে সালমান সিদ্দিকীকে সভাপতি ও প্রগতি বর্মণ তমাকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৩ সদস্যের কমিটিকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।
চট্টগ্রাম নগর : শিক্ষাব্যবসা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগর শাখার ৮ম সম্মেলন গত ৭ ফেব্রুয়ারি ঐতিহাসিক শহীদ মিনারে উদ্বোধন করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নাঈমা খালেদ মনিকা। এরপর শিক্ষার বিভিন্ন দাবি নিয়ে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। আরো বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী)-র কেন্দ্রীয় কার্যপরিচালনা কমিটির সদস্য মানস নন্দী। সম্মেলনে আরিফ মঈনুদ্দিনকে সভাপতি ও জয়তু সুশীলকে সাধারণ সম্পাদক করে গঠিত হয় ১১ সদস্যের কমিটি। সম্মেলনের শুরুতে ও শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় : ট্রাইমিস্টার নয়, সেমিস্টার পদ্ধতি কার্যকর করা ও বছর বছর টিউশন ফি বৃদ্ধি বন্ধ করার দাবিকে সামনে রেখে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রথম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় গত ৭ই ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে। সম্মেলন উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ রানা। সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় কার্যপরিচালনা কমিটির সদস্য সাইফুজ্জামান সাকন, স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মামুন আল রশিদ ও কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার। সম্মেলনে অরূপ দাস শ্যামকে সভাপতি ও অভিমিতা স্বর্ণাকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৯ সদস্যের কমিটি পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। সম্মেলন শেষে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়।
চার ফসলি জমি ধ্বংস করে বিদ্যুৎ প্রকল্প চাই না
গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেক্সিমকো পাওয়ার কোম্পানি এবং চীনের টিবিয়ে কোম্পানিকে কাজ দেওয়ার জন্য প্রায় ১০০০ একর জমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ৪ ফসলি জমি রক্ষায় সোচ্চার হয়েছে বাস্তুভিটা, আবাদী জমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটি।
আন্দোলনের চাপে লাঠশালার সব জমি অধিগ্রহণ করতে না পেরে কোম্পানি এখন হানা দিচ্ছে পাশ্ববর্তী এলাকা ঘোর্দাসহ অন্যান্য এলাকায়। জমি দখলের নতুন কৌশল নিয়েছে দাম বাড়িয়ে দিয়ে। এলাকার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে জমি রক্ষায়।
আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি রংপুর বিভাগীয় কমিশনারকে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।
নোয়াখালীর নবগ্রাম বাজারে বাসদ (মার্কসবাদী)’র অফিস দখলের অপচেষ্টা
নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার নবগ্রাম বাজারের বাসদ (মার্কসবাদী) কার্যালয়ের তালা ভেঙ্গে গত ১৪ জানুয়ারি দখল করে নিয়েছে স্থানীয় যুবলীগ নেতা জহিরুল ইসলাম। তার দাবি, বাসদ (খালেকুজ্জামান)-এর কেন্দ্রীয় নেতা রাজেকুজ্জামান রতনের কাছ থেকে জমিটি নোটারী পাবলিক দলিলের মাধ্যমে সে কিনে নিয়েছে। অথচ, বাজারের সবাই ঘরটিকে বাসদ (মার্কসবাদী)-র অফিস হিসেবে চেনে। এই অফিস এবং অত্র এলাকায় নবগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা বাসদ (মার্কসবাদী) নোয়াখালী জেলার সমন্বয়ক দলিলের রহমান দুলাল। দলিলের রহমান দুলাল ভূমিহীন আন্দোলনের সংগঠক হিসেবে এই অঞ্চলে পরিচিত। ১৯৯০ সালে সরকারি খাস জমিতে নবগ্রাম বাজার প্রতিষ্ঠার সময় তাঁর আবেদনের প্রেক্ষিতে বাজার কমিটি ঐ জায়গাটি বরাদ্দ দেয়। এই জায়গার উপরে খড়ের ঘর নির্মাণ করে তিনি থাকতেন। ১৯৯৪ সালে ঐ ঘরে তিনি স্কুল চালু করেন। ১৯৯৭ সালে নির্ধারিত মূল্য পরিশোধ করে তিনি ভিটে বরাদ্দের রশিদ পান। এরপর থেকেই এত বছর ধরে তাঁর নেতৃত্বে ওই অফিসকে কেন্দ্র করে দলের সাংগঠনিক কাজ পরিচালিত হয়ে আসছে।
গত ১৮ জানুয়ারি নবগ্রাম আঞ্চলিক অফিস দখলের প্রতিবাদে নোয়াখালীর মাইজদীতে মানববন্ধন-সমাবেশ করা হয়। বাসদ (মার্কসবাদী)’র আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ৩০ জানুয়ারি বিকাল ৪টায় কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও কবিরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সরেজমিন তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে যান। অফিসারদ্বয় বাদী, বিবাদী ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের বক্তব্য শুনেন। এই মর্মে অফিসারদ্বয় সিদ্ধান্ত দেন যে, নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে কোনো জায়গা-জমি ক্রয় বিক্রয় করা যায় না, এটা আইনত অবৈধ। রাজেকুজ্জামান রতন নোটারির মাধ্যমে যে ভিটি বিক্রি করেছে তা আইনত সঠিক নয়। কারণ যেহেতু নবগ্রাম বাজারের জায়গা সরকারি খাস জমি, সেহেতু তার মালিক আইনত জেলা প্রশাসক। অন্যদিকে দলিলের রহমান দুলাল ১৯৯০ সাল থেকে ঘর করে দখলে আছেন। সেহেতু দখল শর্তে তিনি এই ভিটির মালিক। আদালতে দেং ৪৫৭/২০১৩নং মামলা থাকার কারণে এবং বিতর্কিত ভূমি হওয়াতে উক্ত ঘর ও ভিটিটি আদালতের মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। মামলা নিষ্পত্তি হলে বাজারের ভিটি হিসেবে বন্দোবস্ত দেওয়া হবে এবং বন্দোবস্ত পাওয়ার ক্ষেত্রে দলিলের রহমান দুলাল এর অগ্রাধিকার থাকবে।