বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র, কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ বিকেল সাড়ে ৪টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা বাহিনীর সদস্য কর্তৃক দুই মারমা তরুণীকে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের প্রতিবাদে এবং নিপীড়নকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সভাপতি সীমা দত্তের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নারীমুক্তি কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ সম্পাদক তসলিমা আক্তার, সদস্য নাঈমা খালেদ মনিকা, ফারজানা আক্তার মালা।
সমাবেশে নারী নেত্রীরা বলেন, গত ২১ জানুয়ারি ২০১৮ পার্বত্য চট্টগ্রামের বিলাইছড়ি গ্রামে তল্লাশি চালানোর নামে সেনাবাহিনীর সদস্য কর্তৃক দুই মারমা তরুণী ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের ঘটনা আদিবাসীসহ সারা দেশের বিবেকবান মানুষকে স্তম্ভিত করেছে। এর আগেও পার্বত্য চট্টগ্রামে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক আদিবাসী নারী ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের ঘটনার বিচার ও সুষ্ঠ তদন্ত হয়নী। বাংলাদেশের সংবিধানে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে আইন থাকা সত্বেও নারী নির্যাতনের ঘটনা অহরহ ঘটেই চলছে এবং নারী নির্যাতনকারীরা আইনের ফাঁক ফোকর দিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও নারী সংগঠন নারীদের নিরাপত্তার দাবিতে সরব থাকলেও ধর্ষণের বিচার না করা ও বিচার বিলম্বিত করাসহ মহাজোট সরকারের উদাসিনতাই নারী নির্যাতনের ক্ষেত্র তৈরী করছে। যৌন হয়রানি শুধু নারীর বিরুদ্ধে নয়, মানবতার বিরুদ্ধেও চরম অপরাধ। বর্তমান পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা মানুষের মূল্যবোধ নৈতিকতাকে ধ্বংস করে যে ভোগবাদী, বিলাসী মনন কাঠামো তৈরী করছে তারই বহিঃপ্রকাশ এই ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন। সারা দেশে বিভিন্ন জায়গায় প্রতিনিয়তই এই ঘটনার পুনরাবৃতি ঘটছে কারণ অতীতে যারা ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন অপরাধের সাথে যুক্ত ছিল তাদের সুষ্ঠু বিচার ও আইন অনুযায়ী শাস্তি না দেয়ায় অপরাধীরা অপরাধ করেই চলেছে।
তাই নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রামে দুই মারমা তরুণীকে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের সাথে জড়িত সেনা বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার এবং বিচারের আওতায় আনার সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। এবং একই সাথে সমাজের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সংগঠিত প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর বিভিন্ন রাজপথ প্রদক্ষিণ করে।