প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবনা ৮০০০ টাকা মানি না এবং অবিলম্বে মজুরি ১৬,০০০ টাকা কার্যকরার দাবিতে১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, সকাল ১১.৩০ টায় গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের বর্তমান সমন্বয়কারী এ্যাড. মাহবুবুর রহমান ইসমাইলের সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের অন্যতম নেতা বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক জুলহাসনাইন বাবু, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু, গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি জহিরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ওএসকে গার্মেন্টস এন্ড টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মোঃ ইয়াসিন, গার্মেন্টস শ্রমিক মুক্তি আন্দোলনের সভাপতি শবনম হাফিজ, বিপ্লবী গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলনের সংগঠক বিপ্লব ভট্টাচার্য এবং বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি অরবিন্দ ব্যাপারী বিন্দু প্রমুখ।
বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রীর ৮,০০০ টাকার মজুরির প্রস্তাব প্রত্যাখান করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ১২টি সংগঠনের জোট গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলন ন্যায্য মজুরির দাবিতে আন্দোলন করে আসছে অথচ তিনি(প্রধানমন্ত্রী) সে আবেদনে সাড়া না দিয়ে মালিকদের পক্ষ নিলেন। বছরের পর বছর ধরে বেসিক ১০,০০০টাকাসহ মোট নি¤œতম মজুরি ১৬,০০০টাকার পক্ষে যুক্তি-তর্ক এবং সেগুলোর স্বপক্ষে গবেষণাও হাজির করা হয়েছিল। সে-অনুযায়ী শ্রমিক কনভেনশনও হয়েছিল। অথচ এখন জোটের প্রস্তাব, অন্যান্য বেশিরভাগ শ্রমিক সংগঠনের প্রস্তাব এবং সিপিডির প্রস্তাবসহ সবার প্রস্তাবকেই মজুরি ঘোষণায় আমলে নেয়া হলো না।
নেতৃবৃন্দ বলেন, মজুরি ঘোষণার ৮,০০০ টাকায় যাতায়াত ভাতা হিসেবে ৩৫০, চিকিৎসার খরচ ৬০০ টাকা ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এখানে ২,০৫০ টাকায় কি ধরনের বাসা শ্রমিকেরা পাবেন? মাসিক খাদ্য খরচ ধরা হয়েছে ৯০০ টাকা। এই টাকায় কি ধরনের পুষ্টিকর খাবার খাওয়া সম্ভব? এই টাকার খাবারে নিত্যদিন কঠোর পরিশ্রম আর বিশ^মানের উৎপাদনশীলতা কী সম্ভব? এগুলো হচ্ছে কৌতুক! কাজেই এ অবস্থায় প্রতিটি শ্রমিককে আরো বেশি ওভারটাইম করতে হবে আর তারই গ্রাউন্ড তৈরি করল এই নতুন মজুরি। কেননা শ্রমিকেরা ওভারটাইম ছাড়া এই টাকায় পুরো মাসিক খরচের সমন্বয় করতে পারবে না। নেতৃবৃন্দ বলেন, এই টাকায় শ্রমিকরা চলতে পারবেন না বলেই তারা এ মজুরি প্রত্যাখান করেছে। সবচেয়ে বড় রপ্তানি আয়কারী এই খাতটির মজুরি দেশীয় ভিত্তি অনুযায়ী সাথে সাথে আন্তর্জাতিক মজুরির তুলনা হিসাব করেই হওয়া উচিত। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, এই প্রতি মূহুর্তে মালিকদের সক্ষমতা বেড়েই চলেছে। রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে। আর সাম্প্রতিক পুরো বিশে^র মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে অতি ধনীদের উত্থানও সে স্বাক্ষই দেয়। অবিলম্বে ৮,০০০ টাকার প্রস্তাবকে পুনর্মূল্যায়ণ করে নি¤œতম সর্বমোট মজুরি ১৬,০০০টাকা ঘোষণা করুন এবং মাত্র নিচের ১টি গ্রেড নয় বাকি ৬টি গ্রেডের মজুরির ন্যায্য ঘোষণা দিন।
আগামীকাল ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, সকাল ১১টায় ২২/১ ঢাকার তোপখানা রোডের ৫ম তলায় বাসদ (মার্কসবাদীর) অফিসে[নিম্নতম মজুরি বোর্ডের পাশে] গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সংবাদ সম্মেলনে মজুরির আন্দোলন এবং আগামী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সংবাদমাধ্যমের সকল প্রতিষ্ঠানকে এই খবর সংগ্রহে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হচ্ছে।