বাম গণতান্ত্রিক জোটের এক প্রেসব্রিফ্রিংয়ে দেশবাসীর প্রতি সকল সন্ত্রাস-ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮ মুক্তিভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে অসুষ্ঠিত প্রেসব্রিফ্রিংয়ে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার স্বার্থে গণআন্দোলনের পথে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। আগামীকাল সকাল সকাল ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজের ভোট নিজেই দিতে হবে, যেন অন্য কেউ দিতে না পারে। বাম জোটের কর্মীদের প্রতি নির্দেশ দিয়ে বলা হয়, সকল সন্ত্রাস, ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে সারাদেশে ভোটকেন্দ্রে থাকবেন। সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে ভোটাধিকার রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন।
এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম। ব্রিফ্রিংয়ে বলা হয়, নির্বাচনকালীন তদারকি সরকার, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ও সংসদ বাতিলের দাবীকে উপেক্ষা করে অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনের প্রাক্কালে, একতরফা পরিবেশে একথা দিবালোকের মত স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, বর্তমান বাস্তবতায় দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব না। ২০১৪ সালের মতো এবারও খালি মাঠে গোল করার সুযোগ না পেয়ে আওয়ামী লীগ সরকার প্রশাসনকে ব্যবহার করে সন্ত্রাস, হামলা, মামলা, হুমকি-ধামকি দিয়ে ‘নিয়ন্ত্রিত ভোটে আনুষ্ঠানিকভাবে জেতার’ আয়োজন সম্পন্ন করেছে।
প্রেসব্রিফ্রিংয়ে আরো বলা হয়, সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে নির্বাচন কমিশনের কোন কার্যকর উদ্যোগ দেখা যায়নি বরং সরকারের নীল নকশা বাস্তবায়নে তারা তৎপর রয়েছে। নির্বাচন কমিশন দাবি করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যদি তাই হয়, তাহলে যে সকল গ্রেপ্তার, হামলা, মামলা হচ্ছে তা কমিশনের হুকুমেই হচ্ছে। অর্থাৎ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, সরকার, প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন একাকার হয়ে ‘নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনের’ নীল নকশা বাস্তবায়ন করছে। এটি বস্তবায়িত হলে, তা দেশের ইতিহাসে নজিবিহীন, অন্যতম কলংকজনক নির্বাচন হিসেবে চিহ্নিত হবে। দেশের মানুষই কেবল তার ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে সরকারের এই নীল নকশা প্রতিহত করতে পারে। তাই দেশের গণতন্ত্র রক্ষার জন্য আমরা দেশবাসীকে ৩০ ডিসেম্বর সকল সন্ত্রাস-ভয়ভীতি উপেক্ষা করে সকাল-সকাল ভোট কেন্দ্রে গিয়ে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
প্রেসব্রিফ্রিংয়ে আরো জানানো হয়, ৩০ ডিসেম্বর সারাদিনের ঘটনাবলী পর্যালোচনা করে বাম গণতান্ত্রিক জোট তাদের বক্তব্য তুলে ধরবে ও পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নেতা শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের হামিদুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের ফিরোজ আহমেদসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।