একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বাম গণতান্ত্রিক জোটের প্রেস ব্রিফিং-এ নেতৃবৃন্দ নির্বাচন ও নির্বাচনের ফলাফলকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। প্রেস ব্রিফিং-এ নেতৃবৃন্দ বলেন, গোটা দেশকে অবরুদ্ধ করে কোটি কোটি ভোটারদের ভোটাধিকার হরণ করে আরও একবার যে জবরদস্তীমূলক প্রহসনের নির্বাচন মঞ্চস্থ করা হলো বাম গণতান্ত্রিক জোট এই নির্বাচন ও নির্বাচনের ফলাফলকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে।
প্রেস ব্রিফিং-এ লিখিত বক্তব্য রাখেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় নেতা শুভ্রাংশ চক্রবর্তী, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশিদ ফিরোজ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণতান্ত্রিক বিপ্øবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের মোশাররফ হোসেন নান্নু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের হামিদুল হক এবং গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা মনির উদ্দিন পাপ্পুসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
প্রেস ব্রিফিং-এ নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, আগের রাতে ব্যালট বাক্সে ভর্তি করে রাখা নিরাপত্তার নামে নজিরবিহীন ভয়ভীতি ও আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানের প্রতি নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা ও ন্যাক্কারজনক ভূমিকা, বাম জোটের একাধিক প্রর্থীসহ বিরোধীদলগুলোর প্রার্থী ও এজেন্টদের আটক, শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত, কেন্দ্র থেকে জোর করে বের করে দেওয়ায় দেশবাসীও তাই মনে করে।
প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়ে গোটা নির্বাচনকে ব্যর্থ করে দেওয়া হয়েছে ও আশঙ্ক্ষানুযায়ী নির্বাচনে সরকারের ছকেরই বাস্তবায়ন করা হয়েছে উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, ভোর থেকেই দেশব্যাপী ভোট কেন্দ্র দখল, প্রকাশ্য জালিয়াতি, ব্যালট পেপারে প্রকাশ্যে নৌকা মার্কার সিল মারতে বাধ্য করা, বিরোধী দলীয় ভোটারদের জোর করে ভোট কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া, কোথাও সকাল ১০টা থেকে ১২টার মধ্যে ব্যালট পেপার শেষ হয়ে যাওয়া প্রভৃতি অসংখ্য ঘটনার মধ্যে দিয়ে সমগ্র নির্বাচনকে পুরোপুরি অর্থহীন ও হাস্যকর করে তোলা হয়েছে।
ব্রিফিং-এ বলা হয়, এই সমুদয় তৎপরতার মধ্য দিয়ে দেশব্যাপি ভোটারদের মধ্যে ভোট নিয়ে যেটুকু আগ্রহ তৈরি হয়েছিল তাকে পুরোপুরি নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। বাম গণতান্ত্রিক জোটের প্রেস ব্রিফিং-এ উল্লেখ করা হয় যে, দলীয় সরকারের অধিনে বাংলাদেশে ন্যূনতম গণতান্ত্রিক পরিবেশে অবাধ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের যে কোন অবকাশ নেই তা আরেকবার প্রমাণ করল। এই নির্বাচন ফলাফল গ্রহণযোগ্য হবে না। এই নির্বাচনে জনগণের মতামতের কোনো প্রতিফলন ঘটেনি।