বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ কেন্দ্রীয় কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী আজ ১৮ ডিসেম্বর এক বিবৃতিতে কাদের মোল্লার ফাঁসির প্রতিক্রিয়ায় কাদের মোল্লার পক্ষাবলম্বন করে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে প্রস্তাব গ্রহণ এবং সে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘কাদের মোল্লা নিরপরাধ এবং পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষায় ভূমিকার কারণেই তাকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসি দেয়া হয়েছে’ – এই মর্মে পাকিস্তান পার্লামেন্ট যে প্রস্তাব গ্রহণ করেছে তা বাংলাদেশের জনগণের মাঝে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। কারণ ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক বাঙালিদের বিরুদ্ধে পরিচালিত গণহত্যা-ধর্ষণ-লুণ্ঠনের সহযোগী হিসেবে কাদের মোল্লা ও তার দল জামাতে ইসলামী বাংলাদেশের জনগণের কাছে ঘৃণিত ও ধিকৃত, গণহত্যাকারী ও যুদ্ধাপরাধী হিসাবে চিহ্নিত। দীর্ঘ ৪২ বছর পর হলেও বাংলাদেশের নিজস্ব আইন মোতাবেক প্রকাশ্য আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থন ও আপিলের সুযোগ দিয়ে ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্তদের বিচার হচ্ছে এবং বিচারিক প্রক্রিয়ায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর কাদের মোল্লার ফাঁসি হয়েছে। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কর্তৃক যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার পক্ষাবলম্বন ও তার ভূমিকার প্রশংসার মধ্য দিয়ে প্রতীয়মান হচ্ছে যে, ১৯৭১ সালের গণহত্যার জন্য পাকিস্তান এখনো অনুতপ্ত নয় বরং সেদিন তাদের ভূমিকাকে তারা সঠিক বলেই মনে করেন।
বিবৃতিতে কমরেড মুবিনুল হায়দার বলেন, ২য় মহাযুদ্ধের সময়ে কোরিয়া-চীনে পরিচালিত গণহত্যার জন্য জাপান ক্ষমা চেয়েছে, আলজেরিয়ায় স্বাধীনতাসংগ্রাম দমনে নৃশংসতার জন্য ফ্রান্স ক্ষমা প্রার্থনা করেছে, কিন্তু বিশ্বের ইতিহাসে কুখ্যাত ৩০ লাখ বাঙালির গণহত্যার জন্য পাকিস্তান কখনো বাংলাদেশের জনগণের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেনি। কাদের মোল্লার বিষয়ে তারা যে বিবৃতি দিয়েছেন তা বাংলাদেশের জনমত ও বিচারব্যবস্থার প্রতি অবমাননা এবং একটি স্বাধীন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর সামিল।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ’৭১এর ভূমিকার জন্য ক্ষমা না চাওয়ার পরও আমাদের শাসকগোষ্ঠী পাকিস্তানের সাথে মিত্রতা রক্ষা করে চলেছে। আর এ কারণেই আজ পাকিস্তান বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাতে দুঃসাহস দেখাচ্ছে। তিনি বলেন, কাদের মোল্লার পক্ষাবলম্বন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো এবং ১৯৭১-এর ভূমিকার জন্য পাকিস্তানকে অবশ্যই ক্ষমা চাইতে হবে।