[১৫ জুলাই ২০২২ বিএমএ মিলনায়তনে বাসদ(মার্কসবাদী)’র প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক, এদেশের অনন্যসাধারণ কমিউনিস্ট বিপ্লবী কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীর স্মরণসভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক, বিশিষ্ট প্রবন্ধকার ও শিক্ষাবিদ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বক্তব্য রাখেন। অডিও রেকর্ডকৃত বক্তব্যটি কম্পোজ করে প্রকাশ করা হলো।]
প্রীতিভাজন সভাপতি এবং উপস্থিত বন্ধুগণ,
কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী আমাদের সকলের বন্ধু ছিলেন। আমারও ব্যক্তিগতভাবে বন্ধু ছিলেন। কেবল রাজনৈতিকভাবে নয়, ব্যক্তিগতভাবেও। এবং আমার সুযোগ হয়েছে তার সঙ্গে বিভিন্ন সময় কাজ করার এবং ওই যে নজরুল জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে SUCI যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল, সেইখানে তাদেরই আমন্ত্রণে মুবিনুল হায়দার চৌধুরীর সাথে আমি গিয়েছিলাম। এবং তাদের কাজকর্ম দেখেছি, তাদের চিন্তাধারা এবং তাদের কর্মপদ্ধতির সাথে পরিচিত হয়েছি। এ-কথাটা অন্যরা বলেছেন এখানে, সে কথাটা আমিও বলি। কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী সম্পর্কে অনেক কথা আমরা বলতে পারব। কিন্তু এককথায় বলতে গেলে বলতে হবে যে, তিনি বিপ্লবী ছিলেন। সার্বক্ষণিক বিপ্লবী ছিলেন। এবং এই বিপ্লবের চিন্তা তাঁকে ধাওয়া করেছে, ওই যে বলা হয় না–কমিউনিজমের প্রেতাত্মা ইউরোপকে ধাওয়া করেছিল একসময়। তেমনি মুবিনুল হায়দার চৌধুরীকে তার বিপরীত প্রেতাত্মা, এই পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের প্রেতাত্মা ধাওয়া করেছিল এবং সেই ভূত তার কাঁধ থেকে কখনো নামেনি। সেই জন্য তাঁর এই বিপ্লবী পরিচয়টাই প্রধান পরিচয়। এবং যারা প্রকৃতই সমাজ পরিবর্তনে বিশ্বাস করেন তাদেরকে অবশ্যই বিপ্লবী হতে হবে। এটা আমাদের অনেকের অভিজ্ঞতা, মুবিনুল হায়দার চৌধুরীর অভিজ্ঞতা।
যে কথাটা আমরা জানি যে, উঁনি বাংলাদেশের একটি ক্রান্তিকালে এসেছিলেন সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনকে সুগঠিত করার জন্য। সেই সময়টা একটা অস্থির সময় ছিল, বিভ্রান্তির সময় ছিল এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল গঠিত হয়েছিল। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের পরিচয়, তাদের নামের মধ্যে যে জাতীয় ছিল সেইটা কোনো আপতিক ঘটনা ছিল না। আসলেই তাদের মধ্যে জাতীয় ব্যাপারটা ছিল। সমাজতন্ত্রের আওয়াজ তারা তুলেছিলেন, বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের কথাও তারা বলেছেন, কিন্তু জাতীয়তাবাদী চেতনাটা তো ছিল। জাতীয় ব্যাপারটা নামাতে পারেনি তাদের চিন্তা-চেতনা থেকে। মুবিনুল হায়দার যেটা করলেন সেটা হলো, ওই চিন্তাটাকে সরিয়ে দিয়ে ওটাকে বাদ দিয়ে বাসদ গড়ার প্রক্রিয়ায় তিনি অংশ নিলেন এবং বাসদ গড়ে উঠলো ওই জাতীয়তাবাদকে ত্যাগ করে। জাতীয়তাবাদের যে ভূমিকা তা আমরা জানি, তার ভিত্তিতেই এই বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠার পরেই যেটা কর্তব্য ছিল সেটা সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের এবং মুবিনুল হায়দার চৌধুরী, তার যে কাজ ছিল তার মধ্যে দিয়ে বাসদকে গঠিত করার মধ্যে দিয়ে তা করেছেন। এবং সেজন্য বাসদ সমাজতান্ত্রিক দল হয়ে গেছে, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক আর থাকেনি।
এবং সেই সময় তিনটি জিনিস আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়–একটা হচ্ছে, এটা তিনি SUCI থেকেই এনেছেন সেটা আমরা জানি। তিনি তাঁর উত্তরাধিকার বহন করেছেন। এই রাষ্ট্রের চরিত্র ছিল পুঁজিবাদী। এখানে আধা সামন্ত আধা ঔপনিবেশিক এ সমস্ত কথা বলা হয়েছে। ঔপনিবেশিকতা আছে আমরা জানতাম। এবং সামন্তবাদ ভূমিতে না থাকুক, কৃষিতে না থাকুক, অর্থনীতিতে না থাকুক, সংস্কৃতিতে ছিল, সেটাও আমরা জানতাম। কিন্তু রাষ্ট্রের চরিত্র ছিল পুঁজিবাদী। এই যে ব্রিটিশ রাষ্ট্র, পাকিস্তানি রাষ্ট্র এই অগ্রসরমানতার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশে যে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয়েছিল তা পুঁজিবাদী রাষ্ট্র। এই পুঁজিবাদকে চিহ্নিত করা একটা বড় কর্তব্য ছিল সে সময়। এখানের বিপ্লব যে পুঁজিবাদ বিরোধী হবে এবং সেটা যে সমাজতান্ত্রিক হবে–সেই উপলব্ধিটা প্রয়োজন ছিল।
দ্বিতীয় যে কাজটা তিনি করেছেন সেটা হচ্ছে এই যে, বিপ্লব হচ্ছে সার্বক্ষণিক কাজ, পেশাদারী কাজ। এই পেশাদারিত্বটা বিপ্লবের ক্ষেত্রে আনতে হবে। এটা কেবল অবসর বিনোদনের কাজ নয়, মাঝে মাঝে করার কাজ নয়। এটা সার্বক্ষণিকভাবে করতে হবে এই ধারণাটা এনেছেন।
আর সবচেয়ে যে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন আমার কাছে মনে হয় যে, বিপ্লবের জন্য সাংস্কৃতিক প্রস্তুতির প্রয়োজন হয় এবং সাংস্কৃতিক প্রস্তুতি ভিন্ন বিপ্লব হবে না। বিপ্লব মানে তলোয়ার নিয়ে বেরিয়ে পড়া নয়, বিপ্লব মানে কেবল গুলি খাওয়া নয়, বিপ্লব মানে কেবল অভ্যুত্থান নয়–বিপ্লব মানে পরিবর্তন। এবং সেই পরিবর্তন হচ্ছে সমাজের পরিবর্তন, সমাজ বিপ্লব। সেই সমাজ বিপ্লবের জন্য যে সাংস্কৃতিক প্রস্তুতি প্রয়োজন, যে জ্ঞান অনুশীলনের প্রয়োজন, ইতিহাস এবং ঐতিহ্যকে জানা প্রয়োজন, যে পূর্ব অভিজ্ঞতা নিজেদের মধ্যে ধারণ করা প্রয়োজন সেটাকে গুরুত্ব দিতেন মুবিনুল হায়দার চৌধুরী এবং তাদের যে দল SUCI, তারাও দিত। যে সাংস্কৃতিক কাজটা আমরা SUCI-এর মধ্যে দেখেছি, তারা পুস্তিকা প্রকাশ করেছেন, তারা নানান বিষয়ে লিখেছেন, শিবদাস ঘোষের বক্তৃতা-রচনাবলি প্রকাশ করেছেন এবং তারা সাংস্কৃতিকভাবে সচেতন ছিলেন। ওই যে নজরুল জয়ন্তী তারা উদযাপন করছিলো। এবং সেই সাংস্কৃতিক জায়গাটা মুবিনুল হায়দার চৌধুরী বুঝতেন এবং সেইটি তিনি আনার জন্য তৎপরতা করছিলেন। কাজেই পুঁজিবাদী রাষ্ট্র নির্ধারণ, সার্বক্ষণিক বিপ্লবী এবং সাংস্কৃতিক প্রস্তুতি–এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কাজেই তিনি অনুপ্রেরণার সৃষ্টি করেছেন। ওই ধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন।
আমরা এটাও বলব যে SUCI-এর যে কাজটা সেই কাজটার মধ্যে সংস্কৃতি কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই অর্থে যে, SUCI যে মার্কসবাদ-লেনিনবাদ, তারা স্ট্যালিনকে ধারণ করেন, মাও সে তুং-কে ধারণ করেন। কিন্তু ওই চিন্তাধারাকে প্রয়োগ করতে গেলে স্থানীয় যে সংস্কৃতি সেই সংস্কৃতিকে জানতে হবে, বুঝতে হবে এবং তার মধ্যে যে বিপ্লবী উপাদান আছে তাকে গ্রহণ করতে হবে। এই কাজটা SUCI করেছে। এবং করতে গিয়ে তারা এই ভারতীয় পরিপ্রেক্ষিতে কী করে সমাজ বিপ্লব করা যায় তা তারা চিন্তা করেছেন। সেই চিন্তাটা তাদের মধ্যে ছিল এবং সেই চিন্তাটাকে মুবিনুল হায়দার চৌধুরী এখানে নিয়ে এসেছিলেন। আমাদের দেশে যে বিপ্লবী আন্দোলন হচ্ছে সেই আন্দোলন বুর্জোয়াদের বিরুদ্ধে। এখানে আমার বন্ধু হাসান ফকরীর সাথে আমি কথা বলছিলাম। আমরা বলছিলাম যে, আমরা তো বুর্জোয়াদের বিরুদ্ধে লড়ছি। কিন্তু বুর্জোয়াদের যে মতাদর্শ তা হলো বিচ্ছিন্নতা, টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়া, সংকীর্ণ হওয়া। আলাদা হয়ে যাওয়া। এবং ঐ রোগ আমাদের সমাজ বিপ্লবের আন্দোলনের মধ্যেও প্রবেশ করেছে। সেজন্য আমরা টুকরো টুকরো হচ্ছি, সংকীর্ণ হচ্ছি। বুর্জোয়াদের যেমন পরিবারগুলো পর্যন্ত ভেঙে যাচ্ছে। সেরকম আমাদের দলগুলোও ভেঙে যাচ্ছে। এই জায়গাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই জায়গাটায় সংস্কৃতির কথা আসে। আমরা যে আন্দোলন করব তা ওই পুঁজিবাদের যে মতাদর্শ–যে মুনাফালিপ্সা, যে বিচ্ছিন্নতাবাদ, যে ভোগবাদিতা, সেইগুলোকে উন্মোচিত করে এই সত্য তুলে ধরবে এবং ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হবে। ঐক্য ছাড়া বিপ্লব সম্ভবপর নয় এবং সেই ঐক্যের জন্য জ্ঞান অনুশীলনের প্রয়োজন।
সেই কথাটা খুব জরুরি যে, আজকে পুঁজিবাদ নৃশংস। আমরা মনে করি যে, সর্বশেষ জায়গাতে এসে পৌঁছেছে। এই পুজিবাদের যে নৃশংসতা, যে অনৈতিকতা, সেইটা পৃথিবীকে ধ্বংস করে দেবে। এই পৃথিবীকে মনুষ্য বসবাসের উপযুক্ত রাখবে না। কাজেই মানুষের সভ্যতা এখন একটা ক্রান্তির মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। এখন কোন দিকে যাবে মানুষ? সেকি আরও পুঁজিবাদের ধারাতেই যাবে, গিয়ে আরও ধ্বংস করবে, নাকি পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে? এবং হাজার হাজার বছরের যে ব্যক্তিমালিকানার ইতিহাসকে ত্যাগ করে সামাজিক মালিকানার জায়গায় যেতে হবে। যাবে কি যাবে না সেটা হচ্ছে আজকে বড় প্রশ্ন। এবং সেই জায়গাটার আমরা মুখোমুখি হয়েছি যে, বিপ্লব করতে হলে সামাজিক বিপ্লব করতে হবে। এবং সেই বিপ্লব হচ্ছে এই পুজিবাদকে প্রত্যাখ্যান করা, তার মূল্যবোধকে-দৃষ্টিভঙ্গীকে-তার আদর্শকে প্রত্যাখ্যান করা। এবং বিচ্ছিন্নতাকে প্রত্যাখ্যান করা। সংলগ্ন হওয়া, ঐক্যবদ্ধ হওয়া। আজকে পুঁজিবাদ যে কাজগুলো করছে, আমাদের বাংলাদেশেও করছে। বাম আন্দোলনের মধ্যে যে বিভ্রান্তি যে বিচ্যুতি আমরা দেখি, যারা এককালে বামপন্থী আন্দোলনে শুরু করেছিলেন বিপ্লব করবেন ভেবেছিলেন, তারা যে বিচ্ছিন্ন হয়েছেন, তারা যে অন্য জায়গায় চলে গেছেন, তার বস্তুগত কারণ আছে। বস্তুগত কারণ হচ্ছে অর্থনৈতিক, এখানে কোনো সামাজিক নিশ্চয়তা নেই, জীবিকার তো নেই-ই, জীবনেরও নেই। এক পর্যায়ে গিয়ে তাদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে।
এখন কথা হচ্ছে–এই পুঁজিবাদ দুটো কাজ করে আমরা জানি। একদিকে প্রলোভন দেখায়, অন্যদিকে ভয় দেখায়। আজকে বাংলাদেশে এ যে কত বড় সত্য তা আমরা মর্মে মর্মে উপলব্ধি করছি। আমরা ভয়ের মধ্যে আছি। প্রতিমুহূর্তে ভয়ের মধ্যে আছি, নানান রকমের ভয়। সেই ভয়ের ব্যাখ্যা করে আমি সময় নষ্ট করবো না। কিন্তু আবার ওদিকে প্রলোভনও আছে, সুযোগ আছে। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হওয়ার পরে অপরিমেয় সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল এবং সেই সুযোগগুলোকে গ্রহণ করতে গিয়ে এখানে যারা লুণ্ঠনকারী, তারা দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করে দিলো। এবং দরিদ্র বাংলাদেশকে একধরনের উন্নতি দেখালো–সেই উন্নতি শতকরা দশজন লোকের উন্নতি। নব্বই জন সেই উন্নতি থেকে বঞ্চিত। কাজেই এই যে প্রলোভন এবং ভয় সেটা এখন শত্রু।
আরেকটা শত্রু, সেটা হচ্ছে হতাশা। হতাশার চাইতে বড় মারাত্মক ব্যাধি আর হয় না। বিশেষ করে, বিপ্লবী আন্দোলনের জন্য। মনে হচ্ছে যেন কিছু হবে না, মনে হচ্ছে যেন সম্ভব নয়, মনে হচ্ছে যেন শত্রুপক্ষ অনেক শক্তিশালী। এই যে হতাশাটা দেখা দিয়েছে, সেই হতাশাটা তখনই আসে যখন আপনি একা হয়ে যান। এবং আজকে বাংলাদেশে যে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। দরিদ্র মানুষের আত্মহত্যা পুরোনো। কিন্তু এখন মধ্যবিত্ত, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, সাংবাদিক আত্মহত্যা করছে হতাশার মধ্যে দিয়ে। কী রকম পরিস্থিতি হলে একজন মানুষ আত্মহত্যা করে। অনেক মানুষ আত্মহত্যার প্রান্তসীমায় পৌঁছে গেছে এবং সেই আত্মহত্যা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যদি পাশে কেউ না থাকে, যদি আশা না থাকে, তাহলে আমরা হতাশার মধ্যেই পড়ে যাব। কাজেই আজকে যেটা প্রয়োজন–এই যে বুর্জোয়াদের সাংস্কৃতিক প্রত্যাখ্যান আমরা করব, পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করব। তাদের যে পদ্ধতিগুলো, সেগুলো আমরা ত্যাগ করব। কিন্তু আমরা যখন বিপ্লবের জন্য দাঁড়াব, তখন আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যে হতাশাটা আমাদের আচ্ছন্ন করে রেখেছে, সেই হতাশার জায়গা থেকে আমাদের সরে আসতে হবে। হতাশা থেকে সরে আসার বড় রাস্তা হচ্ছে ঐক্যবদ্ধ হওয়া। কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এই কথাগুলো সবাই মনে করছেন যে, আজীবন বিপ্লবী ছিলেন এই অর্থে–কোনো সময়ে, নানান বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে গেছেন, ভাঙা গড়ার মধ্যে দিয়ে গেছেন, সেগুলো আমরা জানি কিন্তু তার মধ্যেও কখনো দেখিনি যে, তিনি মুহূর্তের জন্যও হতাশ হয়েছেন। তাই হতাশার বিরুদ্ধে সংগ্রামও বিপ্লবী সংগ্রাম।
আজকে এই সংকট শুধু বাংলাদেশের নয়, সারা পৃথিবীর সংকট। এই পৃথিবীকে বাঁচাতে হলে পুরনো যে জগৎ, পুরোনো যে ব্যক্তিমালিকানার জগৎ–সেটাকে প্রত্যাখ্যান করে শুধু নয় সেটাকে বিধ্বস্ত করে নতুন পৃথিবী গড়তে হবে। সেই পৃথিবী সামাজিক মালিকানার এবং এই সংগ্রামেই আমাদের বন্ধু, আমাদের শিক্ষক মুবিনুল হায়দার চৌধুরী ছিলেন, তিনি থাকবেন। তাঁর স্মৃতির প্রতি আপনাদের সকলের সঙ্গে মিলে আমিও গভীর শ্রদ্ধা জানাই।
ধন্যবাদ।