Thursday, April 25, 2024
Homeসংবাদ ও প্রেস বিজ্ঞপ্তিপার্টি সংবাদলাক্কাতুরা চা বাগান শ্রমিক উচ্ছেদের প্রতিবাদে স্মারকলিপি পেশ

লাক্কাতুরা চা বাগান শ্রমিক উচ্ছেদের প্রতিবাদে স্মারকলিপি পেশ

Sylhet 12 03 14

বিভাগীয় স্টেডিয়ামের রাস্তা সংস্কারের নামে লাক্কাতুরা বাগানের শ্রমিকদের উচ্ছেদের প্রতিবাদে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে জেলা প্রশাসকের নিকট ১২ মাচর্ বুধবার দুপুর ১২টায় স্মারকলিপি পেশ করা হয়। স্মারকলিপি পেশের পূর্বে লাক্কাতুরা বাজার থেকে শতাধিক শ্রমিকের একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে এক সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন চা শ্রমিক ফেডারেশন সিলেট জেলার আহবায়ক বীরেন সিং। বক্তব্য রাখেন বাসদ কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটি সিলেট জেলার আহবায়ক কমরেড উজ্জ্বল রায়, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক হৃদেশ মুদি, বাসদ কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটি সিলেট জেলার সদস্য এ্যাডভোকেট হুমায়ূন রশীদ সোয়েব, লাক্কাতুরা চা বাগানের শ্রমিক লাংকাট লোহার, আমেনা বেগম, চা শ্রমিক ফেডারেশন মালনীছড়া শাখার আহবায়ক সন্তোষ নায়েক, বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন সিলেট জেলার সাধারন সম্পাদক সুশান্ত সিনহা, সদস্য মহিতোষ দেব মলয় প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তাগন বলেন, সিলেটের নব নির্মিত বিভাগীয় স্টেডিয়াম লাক্কাতুরা চা বাগানে অবস্থিত। সামনে ‘টি-টুয়েন্টি’ ও প্রমিলা ক্রিকেট বিশ্বকাপের আয়োজনের জোয়ার চলছে এই স্টেডিয়ামকে ঘিরে, সবকিছুকে নতুন করে ঢেলে সাজানো হচ্ছে । কিন্তু এর অন্তরালে হারিয়ে যাচ্ছে শত শত চা শ্রমিকের জীবনের শেষ সম্বলটুকুও। লাক্কাতুরা চা বগানে বিভাগীয় স্টেডিয়াম নির্মান কালে ৩০টি শ্রমিক পরিবারকে তাদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করা হলেও এখনও পর্যন্ত কোন ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হয় নি। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি আরও ১৩টি পরিবারকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে বিভাগীয় স্টেডিয়ামের রাস্তা সম্প্রসারনের নামে। বিভাগীয় স্টেডিয়ামের পূর্ব প্রান্ত অর্থাৎ শ্রমিকদের বসবাসের জায়গার উপর দিয়ে রাস্তা নির্মানের জন্যে ভাঙ্গা হচ্ছে শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, কেটে নেয়া হচ্ছে শ্রমিকদের লাগানো বিভিন্ন গাছপালা। অথচ স্টেডিয়ামের পশ্চিম প্রান্ত দিয়ে রাস্তা নির্মান করলে এই সমস্যার কোনটিই ঘটতো না। একদিকে বিভাগীয় স্টেডিয়ামের ফলে শ্রমিকরা তাদের ভূমি থেকে যেমন উচ্ছেদ হচ্ছেন, অন্যদিকে সাম্রাজ্যবাদী বহুজাতিক কোম্পানি শেভরন ইতিমধ্যে বাগানের পূর্ব প্রান্তের জমি দখল করে নিয়েছে।অথচ চা শিল্পের আইন অনুযায়ী বাগানের জমিতে অন্য কিছু করার সুযোগ নেই। ফলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে লাক্কাতুরা চা বাগান বাস্তবে থাকবে কি না। চা শিল্পের বাস্তব অবস্থার কারনেই বাগানে চা শ্রমিকদের এখানে অবস্থান। তাই যে দিন থেকে চা বাগান আছে সেদিন থেকে চা শ্রমিকরাও সেখানে বসবাস করছেন, অর্থাৎ গত দেড়’শ বছর থেকে শ্রমিকরা বাগানে অবস্থান করছেন। বাংলাদেশের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে এই জনগোষ্টির বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকলেও স্বাধীন দেশের ৪২ বছর পরও অর্জিত হয়নি ভূমির অধিকারটুকু । ফলে চা-শ্রমিকদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ হওয়া মানে এদেশের তাদের মাথা গুজার জায়গাও থাকবে না। এই পরিস্থিতি থেকে চা শ্রমিকদের রক্ষার জন্য ক্ষতিগ্রস্থ শ্রমিকদের পুনর্বাসনের জন্যে নতুন বাড়ী নির্মান ও ১লক্ষ টাকা নগদ ক্ষতিপূরণ প্রদান, কোন অজুহাতে বাগানের জমি অন্য খাতে বরাদ্দ বন্ধ, বাগানকে কেন্দ্র করে সকল সিদ্ধান্ত লিখিত আকারে শ্রমিকদের সামনে ঘোষনা করা, বিভাগীয় স্টেডিয়ামের নানা কর্মক্ষেত্রে চা-শ্রমিক ও বাগানের যুবকদের যোগ্যতা ও অগ্রধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া এবং শ্রমিকদের ভূমির অধিকার নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।

সমাবেশ শেষে নেতৃবৃন্দ জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। জেলা প্রশাসকের পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ মতিয়ার রহমান।

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments