• প্রচ্ছদ
  • প্রেস রিলিজ
  • সাম্যবাদ
  • পুস্তিকা
    • পার্টির পুস্তিকা
    • অন্যান্য পুস্তিকা
    • স্মারকগ্রন্থ
  • শ্রমিক বার্তা
  • যোগাযোগ
Friday, February 3, 2023
Socialist Party of Bangladesh (Marxist)
  • প্রচ্ছদ
  • প্রেস রিলিজ
  • সাম্যবাদ
  • পুস্তিকা
    • পার্টির পুস্তিকা
    • অন্যান্য পুস্তিকা
    • স্মারকগ্রন্থ
  • শ্রমিক বার্তা
  • যোগাযোগ
No Result
View All Result
  • প্রচ্ছদ
  • প্রেস রিলিজ
  • সাম্যবাদ
  • পুস্তিকা
    • পার্টির পুস্তিকা
    • অন্যান্য পুস্তিকা
    • স্মারকগ্রন্থ
  • শ্রমিক বার্তা
  • যোগাযোগ
No Result
View All Result
Socialist Party of Bangladesh (Marxist)
No Result
View All Result

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা

সাম্রাজ্যবাদীদের স্বার্থের দ্বন্দ্ব ও আধিপত্য বিস্তারের লড়াই; প্রাণ ও মূল্য দিচ্ছে সাধারণ মানুষ

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ উন্মাদনা ও অর্থনৈতিক সংকট বাড়িয়েছে। রাশিয়ার তেল রপ্তানির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে তেলের দাম দ্রুতগতিতে বাড়ছে। রাশিয়ার শস্য ও সার রপ্তানী বন্ধ হলে বিশ্ববাজারে এসব পণ্যের দামও বাড়বে। তেল ও সার আমদানির ওপর নির্ভরশীল বাংলাদেশের কৃষকসহ দুনিয়ার সাধারণ মানুষের জীবনে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে। অন্যদিকে মুনাফা বাড়বে অস্ত্রব্যবসায়ী, তেল কোম্পানি ও ভোগ্যপণ্যের ব্যবসায়ীদের। জার্মানী সামরিক বাজেট বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে, একই পথ অনুসরণ করবে আরো দেশ। কোভিড মহামারীতে ৫০ লক্ষাধিক মৃত্যু ও অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে শিক্ষা নিয়ে সামরিক ব্যয় কমিয়ে স্বাস্থ্য—বৈজ্ঞানিক গবেষণা—জনকল্যাণে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি উঠেছিল বিশ্বব্যাপী, বাস্তবে ঘটছে উল্টোটা। কিন্তু কেন এই যুদ্ধ, কারা এর জন্য দায়ী, সমাধান কোন্ পথে?

রাশিয়ার দাবি–১. ইউক্রেন আমেরিকার নেতৃত্বাধীন ন্যাটো সামরিক জোটে যোগ দেবার পরিকল্পনা স্থায়ীভাবে ত্যাগ করে নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণ করুক; ২. ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় রুশভাষী জনগণের ওপর নির্যাতন—সামরিক হামলা বন্ধ করুক এবং সেখানকার জনগণের ইচ্ছানুযায়ী ডোনেটস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলের স্বাধীনতা ঘোষণা মেনে নিক; ৩. ইউক্রেনের সরকার, সেনাবাহিনী ও জাতীয়তাবাদীদের মধ্যে মিশে থাকা রুশবিদ্বেষী নব্য নাৎসীবাদীদের নির্মূল করুক।

এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করলে বর্তমান সংকটের প্রেক্ষাপট ও কার্যকারণ বুঝতে সাহায্য হবে।

রাশিয়া ও ন্যাটো 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীতে ১৯৪৯ সালে ন্যাটো (North Atlantic Treaty Organisation-NATO) সামরিক জোট গঠিত হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের পুঁজিবাদী দেশগুলোর সমন্বয়ে গঠিত এই জোটের ঘোষিত লক্ষ্য ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন ও পূর্ব ইউরোপের সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোর প্রভাবে ইউরোপের বাকী অংশে সমাজতন্ত্রের বিস্তারের সম্ভাবনা সামরিক পন্থায় রোধ করা। এই জোটের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর নিরাপত্তা সম্মিলিত ন্যাটো বাহিনী দেখবে, যুদ্ধে তারা একে অপরকে সাহায্য করবে, সদস্য দেশগুলোতে ন্যাটো বাহিনীর ঘাঁটি—সৈন্য—অস্ত্রসম্ভার সবসময় মোতায়েন থাকবে। এর প্রতিক্রিয়ায় সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোর নিরাপত্তার জন্য ১৯৫৪ সালে ওয়ারশ সামরিক জোট গঠিত হয়। ১৯৯০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙ্গন ও পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে সমাজতন্ত্রের অবসান ঘটে, ওয়ারশ জোটও বিলুপ্ত হয়ে যায়। স্বাভাবিকভাবেই ন্যাটো জোটেরও অস্তিত্বের প্রয়োজন থাকার কথা নয়। কিন্তু ন্যাটো জোট টিকে থাকে, বরং একে আরো শক্তিশালী করা হয়। শুধু তাই নয়, পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোকেও একে একে ন্যাটোর সদস্য করা হয়। অথচ দুই জার্মানীর একত্রীকরণের সময় তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রাশিয়াকে মৌখিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, ‘পূর্ব দিকে ন্যাটোর সীমানা এক ইঞ্চিও বাড়ানো হবে না’। রাশিয়া ন্যাটোতে যোগদানের আগ্রহ প্রকাশ করলেও তা অগ্রাহ্য করা হয়। বিপরীতে, কাছাকাছি দেশগুলোতে শত্রুভাবাপন্ন ন্যাটো জোটের সামরিক স্থাপনা—ঘাঁটি—অস্ত্রসম্ভার রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে তারা বিবেচনা করে। বিশেষ করে, পাশের দেশ ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দিতে চাইলে রাশিয়া তা মেনে নিতে চায়নি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পূর্ব ইউরোপের ওপর দিয়ে এসে সোভিয়েত ইউনিয়নের ওপর জার্মানীর হিটলার বাহিনীর বিধ্বংসী আক্রমণে ২ কোটি ৭০ লক্ষ সোভিয়েত প্রাণহানি; তার আগে ফ্রান্স থেকে এ পথে এসে নেপোলিয়ন বাহিনীর রাশিয়া আগ্রাসনে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি ও জাতীয় প্রতিরোধ যুদ্ধের স্মৃতি রাশিয়ার জনমনে স্বাভাবিকভাবেই দাগ কেটে আছে। এই প্রেক্ষাপট কাজে লাগিয়ে রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তার ইউক্রেন আক্রমণের যৌক্তিকতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছেন। তিনি যুক্তি করেছেন–‘পাশের দেশ মেক্সিকোয় রাশিয়া সামরিক ঘাঁটি ও ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করতে চাইলে আমেরিকা কি তা মেনে নেবে’? তাদের কথা হলো, আমেরিকার মনরো ডকট্রিন যেমন বলে, “বাইরের কোনো শক্তি পশ্চিম গোলার্ধে অর্থাৎ উত্তর বা দক্ষিণ আমেরিকায় এমন কিছু করতে পারবে না, যা তার অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়”, রাশিয়াও একই কথা বার বার বলেছে কিন্তু আমেরিকা কিংবা ন্যাটো তা কানেও তুলেনি।

প্রতিদ্বন্দ্বী পরাশক্তি সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর মার্কিন নেতৃত্বে ন্যাটো ক্রমবর্ধমানভাবে আক্রমণাত্মক সামরিক জোটের ভূমিকা নেয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার ‘একমেরু বিশ্ব’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য অর্জনে ন্যাটোকে কাজে লাগায়। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক আধিপত্য বিস্তার ও বজায় রাখতে মার্কিনীরা তাদের সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব ব্যবহার করে। একাজে তার বিশ্বস্ত সহযোগী হলো অনুগত ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদীরা, অন্যদিকে স্বার্থের দ্বন্দ্ব থাকলেও জার্মান—ফ্রান্স—ইতালিয়ান সাম্রাজ্যবাদীরা দুনিয়া লুটের ভাগ পাওয়ার জন্য মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের আগ্রাসী কর্মকাণ্ডে হাত মেলায়। ন্যাটো জাতিসংঘকে পাশ কাটিয়ে নানা অজুহাতে ১৯৯৯ সালে যুগোশ্লাভিয়া, ২০০১ সালে আফগানিস্তান, ২০০৩—এ ইরাক, ২০১১—এ লিবিয়া, ২০১৩ সালে সিরিয়ায় সামরিক আগ্রাসন—হামলা চালায়। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর দুর্বল হয়ে পড়া পুঁজিবাদী রাশিয়া এসব আক্রমণের বিরুদ্ধে থাকলেও বাধা দিতে পারেনি বা চায়নি। এমনকি একটির পর একটি পূর্ব ইউরোপীয় দেশকে ন্যাটোভুক্ত করার সময় রাশিয়ার প্রতিবাদ ও নিরাপত্তা উদ্বেগকে গ্রাহ্য করা হয়নি। এই সময়কালে পুতিনের নেতৃত্বে পুঁজিবাদী রাশিয়া কিছুটা গুছিয়ে ওঠে। বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদ, দক্ষ জনশক্তি, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের রেখে যাওয়া অর্থনৈতিক ও সামরিক অবকাঠামো কাজে লাগিয়ে তারা বিশ্ব পুঁজিবাদী বাজার দখলে অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হয়। তারা নিজেদের প্রভাবাধীন অঞ্চলে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় অগ্রসর হয়। এর লক্ষণ দেখা যায় সিরিয়ায় বন্ধুভাবাপন্ন আসাদ সরকার ও একমাত্র বৈদেশিক রুশ সামরিক ঘাঁটি রক্ষায় সামরিক সাহায্য পাঠানোর মধ্য দিয়ে।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

২০১৪ সালে তৎকালীন রুশপন্থী ইয়ানুকোভিচ সরকার ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অর্থনৈতিক সহযোগিতা প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে রাশিয়ার সাথে ঋণচুক্তি করলে ওই সরকারের বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভের সূচনা হয়। অর্থনৈতিক দুর্দশাগ্রস্ত ইউক্রেনীয় জনসাধারণের অনেকে তখন মনে করেছিলো–ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সাথে থাকলে ইউরোপের দেশগুলোতে বেকারদের কাজের সুযোগ বাড়বে, তাদের সাহায্যে অর্থনীতির উন্নতি হবে। এই গণবিক্ষোভের সুযোগে মার্কিনসহ ন্যাটো দেশগুলোর সরাসরি হস্তক্ষেপে এক সাজানো গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে রুশপন্থী সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে পশ্চিমাদের অনুগত ইউক্রেনীয় জাতীয়তাবাদীরা ক্ষমতা দখল করে। ইউক্রেনে রাশিয়ার প্রভাব কমাতে উগ্র জাতীয়তাবাদী শক্তি ও নব্য—নাৎসীবাদী সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোকে সরাসরি মদদ দেয় পশ্চিমা দেশগুলো।

২০১৪ সালে এমন পরিস্থিতি তৈরি হলো কেন তা বুঝতে হলে আমাদের আরেকটু পেছনে যেতে হবে। সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত ইউক্রেন ও রাশিয়া ভেঙে আলাদা রাষ্ট্র হয়ে যায়, ১৯৯১ সালে, যখন প্রতিবিপ্লবের মাধ্যমে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যায়। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙার পর পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ইউক্রেন পরিচালিত হতে থাকে। পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদীদের মহৎ পরামর্শে চলতে চলতে এককালের সমৃদ্ধ ইউক্রেন একটি দরিদ্র দেশে পরিণত হচ্ছিল দিন দিন। ইউক্রেনের নিজস্ব শিল্প ও কৃষিকে ধ্বংস করে পশ্চিমারা দেশটিকে তাদের উপর নির্ভর করে তুলছিলো। এটাই অর্থনৈতিক আধিপত্য স্থাপনের সাম্রাজ্যবাদী নীতি।

এদিকে ভেঙে যাওয়া সোভিয়েতের অঙ্গরাজ্যগুলিকে যুক্ত করে পুঁজিবাদী রাশিয়া একদিকে রাশিয়ান ফেডারেশন এবং অন্য দিকে কমনওয়েলথ অফ ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্টেটস (সিআইএস) গঠন করে এই রাজ্যগুলির উপর তার রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক প্রভাব বজায় রাখার চেষ্টা করছিল। কারণ সমাজতন্ত্র ছেড়ে দেয়ার পর পুঁজিবাদী রাশিয়া তার পুরানো শক্তিশালী সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির ভিতটাকে ব্যবহার করে আমেরিকার শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে বাজার দখলের লড়াইয়ে নামে। এর ফলে মার্কিন ও ইউরোপিয়ান সাম্রাজ্যবাদের সাথে তার দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এই দ্বন্দ্ব তীব্র হতে থাকে। কারণ এ ক্ষেত্রে শুধু রাজনৈতিক স্বার্থই নয়, আমেরিকার প্রত্যক্ষ অর্থনৈতিক স্বার্থও যুক্ত হয়েছিল। বর্তমান অর্থনীতিতে জ্বালানি হিসাবে প্রাকৃতিক গ্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ববাজারে জ্বালানি গ্যাস উৎপাদন ও সরবরাহের ক্ষেত্রে আমেরিকা সম্প্রতি রাশিয়াকে পিছনে ফেলে এক নম্বরে উঠে এসেছে। কিন্তু আমেরিকার গ্যাসের উৎপাদন এবং পরিবহন খরচ অনেক বেশি। জার্মানিসহ পশ্চিম ইউরোপের অধিকাংশ দেশে তরল প্রাকৃতিক গ্যাসের বাজার তুলনামূলকভাবে সস্তা রাশিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের উপর প্রধানত নির্ভরশীল। এক্ষেত্রে জার্মানির আমেরিকাকে ইউরোপের বাজারে ঢুকতে না দেওয়ার মানসিকতাও যুক্ত হয়েছিল। আমেরিকা তার জ্বালানি গ্যাস উৎপাদক সংস্থাগুলির স্বার্থে ইউরোপীয় ইউনিয়নের গ্যাসের বাজারে নানা কৌশলে ঢুকতে চেষ্টা করছে। সেক্ষেত্রে রাশিয়ার ইউক্রেনের মধ্য দিয়ে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ লাইন ছিন্ন করা আমেরিকার অন্যতম লক্ষ্য। ইউক্রেনকে ন্যাটোর সাথে যুক্ত করার পিছনে আমেরিকার যে সমস্ত অর্থনৈতিক স্বার্থ কাজ করছে, এটা তার অন্যতম। এ ছাড়া ইউক্রেনের ভৌগলিক অবস্থান সিআইএস রাষ্ট্রগুলির উপর রাশিয়ার সামরিক আধিপত্য খর্ব করা এবং পূর্ব ইউরোপের বিভিন্ন দেশের উপর আমেরিকার সামরিক—রাজনৈতিক প্রভাব বজায় রাখাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর।

আমেরিকার ষড়যন্ত্রের রাজনীতি

সিআইএ—কে ব্যবহার করে আমেরিকা বিভিন্ন দেশে তার ষড়যন্ত্রের রাজনীতি কিভাবে বাস্তবায়ন করে তার ব্যাখ্যা করা নিষ্প্রয়োজন। ইউক্রেনকে কেন্দ্র করেও এই চক্রান্ত সে শুরু করে। ইউক্রেনের রুশবিরোধী ভূমিকার একটা দীর্ঘ ইতিহাস আছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইউক্রেনের প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিগুলো হিটলারকে সাহায্য করেছিলো। জাতীয়তাবাদ ও দেশপ্রেমের নামে সেই পুরনো ফ্যাসিস্ট শক্তির উত্তরসূরিরা ইউক্রেনে এখনও আছে। তাই জর্জিয়াকে দিয়ে পশ্চিমী সাম্রাজ্যবাদীরা যা পারেনি তা ইউক্রেনকে দিয়ে বাস্তবায়নের চিন্তা করল। একের পর এক ঘটনায় ইউক্রেনের শাসককূলের মধ্যে রাশিয়াবিরোধী শক্তির সমাবেশ বাড়তে থাকলো।

একইসাথে আমেরিকা অন্যান্য প্রাক্তন সোভিয়েত অঙ্গরাজ্যগুলিতেও তার গুপ্তচর বাহিনী সিআইএ—কে হাতিয়ার করে রুশবিরোধী উপজাতীয় মানসিকতা এবং ভাষা ও সাংস্কৃতিক পার্থক্যকে কাজে লাগিয়ে জাতিদাঙ্গায় উস্কানি দেওয়ার কাজটিও চালাতে থাকে। ইউক্রেনের ভেতরের রুশবিরোধী গোষ্ঠীগুলিকে উস্কানি দিয়ে ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য করার জন্য ইউক্রেনীয় রাজনীতিবিদদের উপর চাপ বাড়াতে থাকে।

এই প্রেক্ষিতে দেখা যায়, ২০০৪ সালে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ইউনুকোভিচ ভোটে জেতেন, কিন্তু ভিক্টর ইউশেঙ্ককোর সমর্থক ও উগ্র জাতীয়তাবাদী শক্তিগুলো যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সরাসরি অর্থ সাহায্যে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তুলে বিপুল গণবিক্ষোভ, অসহযোগিতা ও সন্ত্রাসের সৃষ্টি করে (কথিত অরেঞ্জ বিপ্লব) সরকারকে বাধ্য করে নতুন করে নির্বাচন দিতে। তাতে ভিক্টর ইউশেঙ্ককো জয়ী হন। এতে পশ্চিম ইউক্রেনের রুশবিরোধী উগ্রজাতীয়তাবাদের শক্তি বৃদ্ধি ঘটে। যুবপ্রজন্মের মধ্যে রুশবিরোধী মনোভাব ছড়াতে থাকে। ২০০৪ সালে উগ্রবাদীদের কাঁধে চড়ে ক্ষমতার আসা এককালের কমিউনিস্ট নেতা ভিক্টর ইউশেঙ্ককো প্রাক্তন নাৎসি কোলাবরেটর স্তেপান বান্দেরাকে জাতীয় বীর আখ্যা দেয় এবং তার স্মারক ডাক টিকেট বের করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে স্তেপান বান্দেরার ‘ইউক্রাইনিয়ান ন্যাশনালিস্ট অর্গানাইজেশন’পশ্চিম ইউক্রেনে কয়েক লাখ ইহুদি, পোলিশ, ইউক্রেনিয়ান ও রাশিয়ানকে হত্যা করেছিলো।

২০১৪ সালে জনগণের ভোটেই আবার নির্বাচিত হয়ে আসেন ভিক্টর ইউনুকোভিচ। কিন্তু ২০০৪ সালে রিহার্সাল দেওয়া ‘অরেঞ্জ বিপ্লব-এর কুশী-লবরা আবার মাঠে নামে। এবার এরা আরও শক্তিশালী, সংহত ও হিংস্র। তাদের সঙ্গে হাত মেলায় ইউক্রেনের বৃহৎ পুঁজিপতিরা। কূটনীতির নিয়ম ভঙ্গ করে আমেরিকান দূতাবাসের কর্মকর্তারাও এতে যোগ দেন।

দেশে মারাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এই পর্যায়ে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদীরা ইউনুকোভিচের সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে মধ্যস্থতার পদক্ষেপ নেয়। সরকার সেটা মেনে নেয়। ২১ ফেব্রুয়ারিতে পোল্যান্ড, ফ্রান্স ও জার্মানির মধ্যস্থতায় ডিসেম্বরের মধ্যে নির্ধারিত সময়ের আগেই নির্বাচন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভিক্টর ইউনুকোভিচ ও বিরোধীদলগুলো চুক্তি স্বাক্ষর করে। কিন্তু তার একদিনের মধ্যেই সশস্ত্র উগ্রবাদীরা পার্লামেন্ট ও প্রেসিডেন্ট ভবনে আক্রমণ চালায়, প্রেসিডেন্ট ও তার পক্ষের এমপিরা জীবন নিয়ে পালায়। পার্লামেন্ট ভোটাভুটি করে ইউনুকোভিচকে ক্ষমতাচ্যুত করে। নতুন সংসদ তৈরি হয়, প্রেসিডেন্ট হন পেট্রো পোরোশেঙ্কো।

উগ্রজাতীয়তাবাদী, ফ্যাসিবাদী, নাৎসী ইউক্রেন সরকারের নৃশংসতা

ক্ষমতায় আসে তিন পার্টির কোয়ালিশন। তাদের ২টি ন্যাটোমুখী জাতীয়তাবাদী ও কট্টর রুশবিরোধী, তৃতীয়টি ফ্রিডম পার্টি নামের উগ্রজাতীয়তাবাদী ফ্যাসিস্ট পার্টি। তারা এথনিক রুশদের অধিকার খর্ব করার আইন পাশ করে রুশভাষাকে একটি আঞ্চলিক ও সংখ্যালঘু ভাষা ঘোষণা করে দ্বিতীয় রাষ্ট্রীয় ভাষার স্ট্যাটাস থেকে খারিজ করে দেয়। শুধু তাই নয় পূর্ব ইউক্রেনের এথনিক রুশ জনগণ যেহেতু মাইদানে অংশগ্রহণ করেনি, তারা উগ্র জাতীয়তাবাদীদের আক্রমণের শিকার হতে থাকে। ওডেসায় ৪০ জন এথনিক রাশিয়ানকে একটি দালানে বন্দি করে আগুন জ্বালিয়ে হত্যা করা হয়। ইউক্রেনে, পুরনো সোভিয়েত আমলের সমস্ত স্থাপত্য ভাঙা শুরু হয়। বিবিসি, সিএনএন বারবার করে সম্প্রচার করতে শুরু করে কিভাবে লেনিনের মূর্তি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু পশ্চিমা মিডিয়া যেটা দেখায়নি, সেটা হচ্ছে, হাজার হাজার রুশ ভাষীদের তাদের ঘর থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, কমিউনিস্ট পার্টিকে ব্যান করা হচ্ছে, তাদের কর্মীদের খুন করা হচ্ছে, ট্রেড ইউনিয়ন কর্মীদের তাদের মিটিং চলাকালীন জীবন্ত জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই নাৎসিবাদীদের হাত ধরেই ক্ষমতায় আসেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি।

এই অবস্থায় ইউক্রেনের রুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ পূর্বাঞ্চলে ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ক নামের দুটি এলাকার জনগণ নতুন ইউক্রেন সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। সেনাবাহিনী পাঠিয়ে ওই অঞ্চল দখল করতে ব্যর্থ হয়ে সেখানে বেসামরিক জনপদে বোমাবর্ষণ ও অবরোধ এখন পর্যন্ত চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেন। ২০১৫ সালে জার্মানি ও ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় ইউক্রেন ও রাশিয়া মিনস্ক—২ চুক্তি স্বাক্ষর করে। এর শর্ত ছিল–ওই অঞ্চলকে ইউক্রেনের অধীনে বিশেষ স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের মর্যাদা দেয়া হবে, সেখানে নির্বাচন আয়োজন করে তাদের নিজেদের সরকার গঠনের সুযোগ দেয়া হবে এবং তাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের অবসান করা হবে। এর বিনিময়ে রাশিয়া বিদ্রোহীদের সমর্থন দান বন্ধ করবে, বিদ্রোহীরা অস্ত্রসমর্পণ করবে। কিন্তু ইউক্রেন সরকার ওই চুক্তি এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন করেনি, বরং পশ্চিমাদের সহায়তায় ওই অঞ্চলকে পদানত করার চেষ্টা করছে। ফলে গত ৭ বছর ধরে সেখানে যুদ্ধ চলছে। জাতিসংঘের হিসাবে এ পর্যন্ত ১৫ হাজারের বেশি মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলের স্বাধীনতা ঘোষণাকারী সরকারের আবেদনক্রমে রাশিয়া গত ২১ ফেব্রুয়ারি তাদের স্বীকৃতি দিয়েছে।

আগ্রাসনবিরোধী যুদ্ধ নয়, রাশিয়ার আক্রমণও আরেকটি সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন

ইউক্রেনের শাসকদের প্রকৃত চরিত্র, সাম্রাজ্যবাদী মদদে সৃষ্ট উগ্র জাতীয়তাবাদ ও রুশবিরোধী মনোভাব, ন্যাটোতে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে রাশিয়ার নাকের ডগায় আমেরিকান সেনাঘাঁটি স্থাপনের সুস্পষ্ট ইঙ্গিতের পরেও এ কথা ভাবা ভুল যে, পুতিনের ইউক্রেন আক্রমণ শুধু পশ্চিমী সাম্রাজ্যবাদীদের আগ্রাসী পরিকল্পনার জবাব দেয়ার জন্য। এর পেছনে রাশিয়ার নিজস্ব সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থও কাজ করেছে। রাশিয়ার একচেটিয়া পুঁজিপতিরা ইউরোপের বাজার চায়। কৃষ্ণসাগরের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চায়। তুরস্ক হয়ে সিরিয়া পর্যন্ত পুরো স্থলভাগের উপর নিয়ন্ত্রণ কব্জা করতে চায়। তেল-গ্যাস ইত্যাদি নিয়ে রাশিয়ার অর্থনৈতিক স্বার্থ ও পুঁজিপতিদের মুনাফার জাল কম বিস্তৃত নয়। এসব কিছুকে কেন্দ্র করেই মার্কিন-রুশ দ্বন্দ্ব আজ দুই সাম্রাজ্যবাদী শক্তির দ্বন্দ্বের রূপে দেখা দিয়ে যুদ্ধের জন্ম দিল।

সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত রাশিয়া সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধচক্রান্তের বিরুদ্ধে শান্তির রক্ষক হিসাবে আক্রান্ত দুর্বল দেশগুলির পাশে দাঁড়িয়েছে, তাদের শক্তি যুগিয়েছে। মহান নেতা স্ট্যালিন কখনওই আগ্রাসনের যুদ্ধ করেননি। তিনি সাম্রাজ্যবাদী ফ্যাসিবাদী আগ্রাসনের হাত থেকে বিশ্বকে রক্ষা করার জন্য জনযুদ্ধ পরিচালনা করে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে ঐতিহাসিক জয় পেয়েছেন। সে সময়ের সমস্ত গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষই মহান স্ট্যালিনকে মানবতার রক্ষাকর্তা হিসাবে অভিহিত করেছিলেন। কিন্তু স্ট্যালিন পরবর্তী সংশোধনবাদী সোভিয়েত নেতৃত্ব ক্রমশ আমেরিকার পরমাণু যুদ্ধের হুমকির কাছে নতিস্বীকার করেছে। ফলে তাদের শান্তিরক্ষকের ভূমিকা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছে, তারা আমেরিকার মতোই ষড়যন্ত্রমূলক পদ্ধতিতে বা গায়ের জোরে প্রভাবাধীন অঞ্চল সৃষ্টির দিকে এগিয়েছে। কিন্তু ১৯৯১ সালে সমাজতান্ত্রিক শিবির অবলুপ্ত হওয়ার পর থেকে যুদ্ধের বিপদ বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সাম্রাজ্যবাদের শিরোমণি আমেরিকা তথাকথিত একমেরু বিশ্বের সুযোগ নিয়ে একের পর এক আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, সুদান প্রভৃতি দেশে নানা অজুহাতে সাম্রাজ্যবাদী দখলদারি, লুণ্ঠন, হত্যা এবং অবাধ ধ্বংসলীলা চালিয়েছে। পূর্বতন সমাজতান্ত্রিক দেশগুলি পুঁজিবাদ পুনঃপ্রবর্তনের পর তাদের উন্নত অর্থনৈতিক কাঠামো এবং সামরিক শক্তিকে ব্যবহার করে বিশ্ববাজারে আমেরিকা এবং অন্যান্য সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলির প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে আবির্ভুত হয়েছে। আজ রাশিয়ার নেতা ভ্লাদিমির পুতিন সম্পূর্ণরূপে একটি সাম্রাজ্যবাদী শক্তির নায়ক। তিনি রাশিয়ার অভ্যন্তরে তীব্র অর্থনৈতিক সংকট থেকে দৃষ্টি ঘোরাতে এবং সিআইএস রাষ্ট্রগুলির মধ্যে রাশিয়ান আধিপত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দেশের অভ্যন্তরে যুদ্ধোন্মাদনা এবং ‘মহান রুশ আত্মগরিমা’সৃষ্টির পথে হাঁটছেন। সেজন্য কৌশলে স্ট্যালিনের দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে বিজয়ের গৌরবকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন।

যুদ্ধই পুঁজিবাদের একমাত্র বাঁচার পথ

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের ফলে বড় প্রতিবেশীর পাশে থাকা ছোট দেশগুলো এখন আরও সতর্ক হবে, অস্ত্র কেনায় মন দেবে। ইউক্রেনে যুদ্ধ দীর্ঘদিন চলুক বা দ্রুত শেষ হোক, রাশিয়ার ঘটানো এ ‘সর্বনাশ’ সামনে নিশ্চিতভাবেই অস্ত্র ব্যবসার বাজার রমরমা হবে।

আজ বিশ্বপুঁজিবাদ ক্ষয়িষ্ণু অবস্থায়। বড় বড় কোম্পানিগুলো মুখ থুবড়ে পড়ছে। সর্বোচ্চ মুনাফার পুঁজিবাদী অর্থনীতির কারণে অনেক দেশ দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে। বড় বড় সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোতে আজ গৃহহীন, কর্মহীন লোকের ভীড় বাড়ছে। কোন অবস্থায়ই এই সংকট তারা কাটিয়ে উঠতে পারছে না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পুঁজিবাদের যে বৈশিষ্ট্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, সেটা হচ্ছে সংকটের মধ্যেও পুঁজিবাদের যে আপেক্ষিক স্থায়িত্ব সেটা আজ আর নেই। আজ সে এবেলা—ওবেলায় সংকটে পড়ছে। ফলে সংকট কাটিয়ে উঠার জন্য সে অর্থনীতির সামরিকীকরণের পথে যাচ্ছে। রাষ্ট্র অস্ত্র কোম্পানিগুলো থেকে অস্ত্র কিনছে, সামরিক ব্যয় বাড়াচ্ছে। ফলে দেশের অর্থনীতিতে একটা কৃত্রিম তেজীভাব আসছে। আবার রাষ্ট্র অস্ত্র কিনে জমা করে রাখতে পারে না। তার অস্ত্র খালাস করা দরকার। সেজন্য সে আংশিক ও আঞ্চলিক যুদ্ধ বাঁধাচ্ছে। এতে কোটি কোটি সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠছে ঠিক, কিন্তু এর উপর নির্ভর করেই পুঁজিবাদী—সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর অর্থনীতি টিকে আছে।  ফলে ‘অনন্ত যুদ্ধে’ জড়িয়ে থাকা যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার অর্থনীতির স্বার্থেই জরুরি।

সমাজতন্ত্রই বিশ্বশান্তির একমাত্র গ্যারান্টি

আজ যেভাবে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলির বাজার দখলের লড়াই প্রতিদিন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে এই অবস্থায় আর একটি বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনা একটা বাস্তব সম্ভাবনা হিসাবেই দেখা দিয়েছে। তবে এর বিরুদ্ধে কাজ করছে বিশ্বজুড়ে এবং আমেরিকার মতো পুঁজিবাদী—সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলির অভ্যন্তরেও যুদ্ধবিরোধী জনমতের শক্তি।

ইউক্রেনের জনগণকে আজ বুঝতে হবে যে, রাশিয়ার সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্য তাদের শত্রু, রুশভাষী ইউক্রেনিয় শ্রমজীবী জনগণ নয়। দুপক্ষেরই আসল শত্রু পুঁজিবাদ—সাম্রাজ্যবাদ। রাশিয়ার আধিপত্যের পাল্টা হিসাবে আমেরিকার আধিপত্য কখনই কাম্য হতে পারে না। যে আমেরিকা আফগানিস্তান ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়াকে ধ্বংস করেছে, সেই আমেরিকার আধিপত্য অর্থাৎ ন্যাটো বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন, নব্য নাৎসিবাদী ভাবাদর্শ ইউক্রেনিয়দের সমস্যার সমাধান করতে পারবে না বরং সর্বাত্মক ধ্বংসের পথে ঠেলে দেবে। যারা একসময় এক দেশ হিসেবে লড়াই করে ফ্যাসিবাদকে ঠেকিয়ে দিয়েছিলো, তারাই আজ দ্বিধাবিভক্ত হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্তে, ফ্যাসিবাদী আদর্শকে সামনে আনছে–এটা হতে পারে না। ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে আমেরিকান ও রাশিয়ান সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্তের বলি রাশিয়া ও ইউক্রেনের সাধারণ জনগণ হতে পারে না। আমাদের বুঝতে হবে এইভাবে উগ্র জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে বিভক্তি কোন সমাধান নয়, সমাধান বিভিন্ন দেশের শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে ঐক্যবদ্ধতা। সমাজতান্ত্রিক শিবির থাকাকালে এইভাবে একদেশ আর এক দেশের উপর চাইলেই ঝাঁপিয়ে পড়তে পারতো না। সমাজতান্ত্রিক শিবির তার শক্তি নিয়ে এর বিরুদ্ধে দাঁড়াতো। এই উদাহরণ কম নেই। সমাজতন্ত্রই একমাত্র ব্যবস্থা যা এই তীব্র প্রতিযোগিতামূলক পুঁজিবাদী অর্থনীতি ও এর ফলাফলে বাজার দখলের সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ থেকে মুক্তি দিতে পারে। প্রতিযোগিতা নয়, সহযোগিতাই সমাজতন্ত্রের ভিত্তি–ঘর থেকে শুরু বিশ্বব্যাপী। তাই সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই—ই এই মানবিক বিপর্যয় ও প্রাণহানি থেকে বিশ্বকে রক্ষা করতে  পারে।

সাম্যবাদ এপ্রিল ২০২২

ShareTweetShare
Previous Post

অসহনীয় মূল্যবৃদ্ধি, বিপর্যস্ত জনজীবন

Next Post

`শোষণমুক্তির লড়াইয়ে সামিল হওয়ার আহ্বান'

Next Post
`শোষণমুক্তির লড়াইয়ে সামিল হওয়ার আহ্বান’

`শোষণমুক্তির লড়াইয়ে সামিল হওয়ার আহ্বান'

সাম্যবাদ পিডিএফ ভার্সন

  • সাম্যবাদ বুলেটিন জানুয়ারী ২০২৩
  • সাম্যবাদ নভেম্বর ২০২২
  • সাম্যবাদ আগস্ট ২০২২
  • সাম্যবাদ জুন ২০২২
  • সাম্যবাদ এপ্রিল ২০২২
  • সাম্যবাদ (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি ২০২২)
  • সাম্যবাদ নভেম্বর ২০২১
  • সাম্যবাদ – আগষ্ট ২০২১
  • সাম্যবাদ জুন ২০২১
  • সাম্যবাদ এপ্রিল-মে ২০২১
  • সাম্যবাদ অক্টোবর ২০২০
  • সাম্যবাদ এপ্রিল ২০২০
  • সাম্যবাদ সেপ্টেম্বর ২০১৯
  • সাম্যবাদ আগষ্ট ২০১৯
  • সাম্যবাদ জুলাই ২০১৯
  • সাম্যবাদ এপ্রিল ২০১৯
  • সাম্যবাদ জানুয়ারি ২০১৯

  

সাম্যবাদ আর্কাইভ

সাম্যবাদ পুরোনো সংখ্যা

সম্প্রতি প্রকাশিত

  • মানবিক ফুটবল বনাম পুঁজির দাপট
  • গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের আত্মপ্রকাশ, ছাত্র ফ্রন্ট সভাপতি সালমান সিদ্দিকী সমন্বয়ক
  • ভোটডাকাত সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়
  • ‘কসমেটিক উন্নয়ন’ চাই না!
  • ইরানে বাধ্যতামূলক হিজাব পরার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ: রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট

ফেসবুকে বাসদ (মার্কসবাদী)

আর্কাইভ

যোগাযোগ  : 

২২/১ তোপখানা রোড (৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা – ১০০০ ।
ফোন :  ৯৫৭৬৩৭৩
ই-মেইল :
https://spbm.org/

© 2019 Devloped by Sourav Bhuiyan. E-mail : [email protected], Mobile : +8801670702270

No Result
View All Result
  • প্রচ্ছদ
  • প্রেস রিলিজ
  • সাম্যবাদ
  • পুস্তিকা
    • পার্টির পুস্তিকা
    • অন্যান্য পুস্তিকা
    • স্মারকগ্রন্থ
  • শ্রমিক বার্তা
  • যোগাযোগ

© 2019 Devloped by Sourav Bhuiyan. E-mail : [email protected], Mobile : +8801670702270

Login to your account below

Forgotten Password?

Fill the forms bellow to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In