সম্পাদকীয়
অনেক উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা আর আশঙ্কা নিয়ে ১ এপ্রিল শুরু হলো এইচএসসি পরীক্ষা। কবে শেষ হবে তা কেউ জানে না। দু’মাস আগে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হলেও আজও শেষ হয়নি। গত কয়েকমাসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা হয়নি। শিক্ষামন্ত্রীসহ সরকারের কর্তাব্যক্তিরা আশ্বস্ত করলেও দেশের সাধারণ মানুষ, অভিভাবক-শিক্ষার্থী কেউই স্বস্তিতে নেই। সরকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক দাবি করলেও গুম-খুন-ক্রসফায়ার বেড়েই চলেছে। জানুয়ারি থেকে মার্চ — গত ৩ মাসেই পুলিশি হেফাজত ও ক্রসফায়ারে ৬৪ জন প্রাণ হারিয়েছে।
অগণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতায় এসে বর্তমান সরকার একদিকে ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করেছে, অন্যদিকে বিএনপি পেট্রোল বোমা-সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে। আওয়ামী লীগ-বিএনপি’র এই ক্ষমতাকেন্দ্রিক হানাহানি ও অপরাজনীতির কারণে এখন পর্যন্ত অগ্নিদগ্ধ হয়ে ১২২ জন নিরীহ সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এদের বেশিরভাগই খেটে খাওয়া নিরন্ন মানুষ। নিতান্ত জীবিকার তাগিদে এরা রাস্তায় নেমেছিল। নিহতদের স্বজনদের আহাজারি দেশের বিবেকবান মানুষদের নাড়া দিয়েছে। কিন্তু এদেশের বধির শাসকদের কর্ণকুহরে তা পৌঁছাবে কি?
এই প্রেক্ষাপটে গত ২৬ মার্চ পালিত হলো ৪৩ তম স্বাধীনতা দিবস। ৪৩ বছরেও দেশের বেশিরভাগ মানুষের শিক্ষার অধিকার, কাজের অধিকার, মতপ্রকাশের অধিকার তথা জীবনের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। সবকিছুর দাম বেড়েছে। চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, শিক্ষা-চিকিৎসা সবই দূর্মল্য হয়েছে, বাড়েনি কেবল মানুষের জীবনের দাম।
অগণতান্ত্রিক শাসনের সুযোগ নিয়ে দেশে উগ্র মৌলবাদী শক্তির তৎপরতা বেড়েছে। ফেব্রুয়ারিতে বই মেলায় খুন হয়েছেন মুক্তমনা বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায়, এর এক মাস পেরুতে না পেরুতেই তেজগাঁওয়ে খুন হলেন আরেকজন ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবু। এ অবস্থায় দেশের সাধারণ মানুষ চরম নিরাপত্তাহীনতায় বাস করছে। এক ধরনের ভয় সারাক্ষণ তাড়া করছে। সরকার জনগণের জন্য ন্যূনতম নিরাপদ ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারেনি।
এ অবস্থার কি পরিবর্তন নেই? চতুর্দিকে অন্ধকার আর হতাশার সুর। কিন্তু হতাশায় আচ্ছন্ন হয়ে, দুর্দিনের ভারে ন্যূব্জ হয়ে পরিস্থিতির সমাধান সম্ভব নয়। অতীতে এদেশের ছাত্রসমাজ জাতির ঘোরতর দুর্দিনে সমস্ত বিপদ, ঝুঁকি নিজেদের কাঁধে নিয়েছে, তথাকথিত ক্যারিয়ারের হাতছানি পিছনে সরিয়ে অগণতান্ত্রিক, স্বৈরাচারী শক্তিকে প্রতিহত করতে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে। আন্দোলনের মাধ্যমেই দাবি আদায় করেছে। এটাই ইতিহাসের শিক্ষা। এজন্য সংগঠিত হওয়া প্রয়োজন; ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। রাজনীতিবিমুখতা নয়, সঠিক রাজনৈতিক চেতনা, সঠিক আদর্শই পারে এ ঐক্যবদ্ধ শক্তির জন্ম দিতে। তাহলেই অর্জিত হবে আমাদের কাক্সিক্ষত লক্ষ্য; কবি সুকান্তের ভাষায় “…রক্তে আনো লাল/ রাত্রির গভীর বৃন্ত থেকে ছিঁড়ে আনো ফুটন্ত সকাল”।
সাইফুজ্জামান সাকন, সভাপতি
স্নেহাদ্রি চক্রবর্ত্তী রিন্টু, সাধারণ সম্পাদক
সূচীপত্র:
ফ্যাসিবাদ সম্পর্কিত কয়েকটি বৈশিষ্ট্য প্রসঙ্গে
মুক্তচিন্তা ও চিন্তার স্বাধীনতা
প্রশ্নপত্র ফাঁস
পি.ই.সি. ও জে.এস.সি. পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা কতটুকু?
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়
বিশ্ববিদ্যালয়ে রাগিং ও সাংস্কৃতিক অবক্ষয়
স্মরণ : ভগৎ সিং
গল্প : স্বাধীনতা
কবিতা : স্নেহগ্রাস
দেশে দেশে ছাত্র আন্দোলন
সংগঠন সংবাদ