Sunday, November 24, 2024
Homeসাম্যবাদসাম্যবাদ - আগষ্ট ২০১৬আন্দোলন ও সংগঠন সংবাদ — সাম্যবাদ আগষ্ট ২০১৬

আন্দোলন ও সংগঠন সংবাদ — সাম্যবাদ আগষ্ট ২০১৬

গুলশান-শোলাকিয়ায় জঙ্গী হামলার প্রতিবাদে বাম মোর্চার বিক্ষোভ

bam morcha copy

গুলশানে রেস্টুরেন্টে ও শোলাকিয়ায় বর্বরোচিত জঙ্গী হামলা, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণসহ সারাদেশে ধারাবাহিক উগ্রবাদী গুপ্তহত্যার প্রতিবাদে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার ডাকে সারাদেশে ‘বিক্ষোভ দিবস’ পালনের অংশ হিসেবে গত ১৩ জুলাই বুধবার বিকাল ৫টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ও পরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও বাসদ (মার্কসবাদী)-র কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক, বাসদ (মাহবুব)-র কেন্দ্রীয় নেতা ইয়াসিন মিঞা ও মহিনউদ্দিন লিটন প্রমুখ।

সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, “রেস্টুরেন্টে খেতে যাওয়া নিরপরাধ মানুষকে যারা জবাই করতে পারে, যারা ঈদের জামাতে সাধারণ মানুষের ওপর হামলা চালানোর চেষ্টা করে, ভিনড়বধর্মাবলম্বী হওয়ার কারণে নিরীহ পুরোহিত-ভিক্ষু-পাদ্রীকে কুপিয়ে খুন করে— তারা মানবতা ও সভ্যতার শত্রু। ধর্মের নামে মানুষ হত্যাকারী এই বর্বর শক্তির বিরুদ্ধে সকলকে আজ সোচ্চার হতে হবে।” তাঁরা বলেন, “সুরক্ষিত কূটনৈতিক এলাকায় বিপুল অস্ত্র-বোমাসহ সন্ত্রাসীদের অনুপ্রবেশ প্রমাণ করে দেশে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ও জনগণের নিরাপত্তাহীনতা প্রকট রূপ ধারণ করেছে। সরকার পুলিশকে দলীয়করণ করে বিরোধী দমনে ব্যস্ত। ধর্মের নামে গুপ্তহত্যাকে তারা সবসময় ‘বিচ্ছিনড়ব ঘটনা’ বলে দেখাতে চেয়েছে এবং রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের কাজে লাগাতে চেয়েছে। এই সুযোগে ধর্মীয় জঙ্গীবাদী শক্তি আজ মহীরুহ হয়ে দেখা দিয়েছে। এখনো সরকার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষিদের চিহ্নিত না করে বিরোধীদের কাঁধে দায় চাপানোর চেষ্টা করছে। জঙ্গী সন্দেহভাজনদের বন্দুকযুদ্ধের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যার মাধ্যমে পুলিশি রাজত্ব কায়েম করছে।”

নেতৃবৃন্দ বলেন, “এদেশের শাসকগোষ্ঠী সবসময় নিজেদের গণবিরোধী শাসন আড়াল করতে এবং ভোটের রাজনীতির স্বার্থে ধর্মকে রাজনীতিতে ব্যবহার করেছে, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাকে মদত দিয়েছে, ধর্মীয় কূপমণ্ডুক শিক্ষার বিস্তার ঘটিয়েছে। এর ফলে সমাজের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি-পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। মহাজোট সরকার ফ্যাসিবাদী শাসন পাকাপোক্ত করতে পরিকল্পিতভাবে দেশের সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করছে। অধিকারহীন দমনমূলক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি সৃষ্টির মাধ্যমে একদিকে মানুষের কণ্ঠকে স্তব্ধ করা হচ্ছে, অপরদিকে অন্ধকারের শক্তি মৌলবাদ-জঙ্গীবাদের ক্ষেত্র বিস্তৃত হচ্ছে।” নেতৃবৃন্দ মৌলবাদ-জঙ্গীবাদ ও রাষ্ট্রীয় ফ্যাসিবাদ উভয়ের বিরুদ্ধে শাসকগোষ্ঠী ও কায়েমী স্বার্থের প্রভাবমুক্ত সকল বাম-গণতান্ত্রিক-ধর্মনিরপেক্ষ-অসাম্প্রদায়িক শক্তি ও জনগণের প্রতি ঐক্যবদ্ধ গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

ধর্মের নামে মানুষ হত্যার বিরুদ্ধে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের প্রতিবাদ মিছিল

13731708_640947962735791_4343429013188104334_n copy

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে গত ১৮ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় সভাপতি নাঈমা খালেদ মনিকার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক স্নেহাদ্রি চক্রবর্ত্তী রিন্টুর পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সত্যজিৎ বিশ্বাস।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, এদেশের শাসকগোষ্ঠী সবসময় নিজেদের গণবিরোধী শাসন আড়াল করতে ধর্মকে রাজনীতিতে ব্যবহার করেছে, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাকে মদত দিয়েছে, কূপমন্ডুক মাদ্রাসা শিক্ষার বিস্তার ঘটিয়েছে। শিক্ষার বাণিজ্যিকীরণের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাজারি বিষয়গুলোই পড়ানো হচ্ছে, সামাজিক বিজ্ঞান, সাহিত্য-দর্শনের বিষয়গুলোকে অবহেলা করা হয়েছে, কোনো ধরণের গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করা হয়নি। অথচ, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার ছিল ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও গণতান্ত্রিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার। জঙ্গীবাদের সমস্যা কার্যকরভাবে মোকাবেলা করতে আজ তাই প্রয়োজন মৌলবাদ-সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আদর্শগত ও সাংস্কৃতিক সংগ্রাম, সর্বোপরি গণতান্ত্রিক সমাজ-সংস্কৃতি এবং বিজ্ঞানভিত্তিক যুক্তিবাদী শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম বেগবান করা।

সাম্যবাদ আগষ্ট ২০১৬

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments