[ডা. জহিরুল ইসলাম কচি। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ শাখার প্রাক্তন ছাত্র ফ্রন্ট নেতা এবং এশীয় শিল্প ও সংস্কৃতি কেন্দ্রের সভাপতি। বাসদ (মার্কসবাদী)’র প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক, এদেশের অনন্যসাধারণ কমিউনিস্ট বিপ্লবী কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী গত ৬ জুলাই ২০২১ তারিখে প্রয়াণের পর ২৪ জুলাই ২০২১ চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র-এর উদ্যোগে অনলাইনে আয়োজিত ‘সংশপ্তক বহমান’ শীর্ষক স্মরণসভায় ডা. জহিরুল ইসলাম কচি বক্তব্য রাখেন। তাঁর বক্তব্যটি পরবর্তীতে সম্পাদিতরূপে ‘কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী স্মারকগ্রন্থ’-এ সংকলিত হয়। কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরীর ১ম মৃত্যুবার্ষিকীতে বক্তব্যটি এখানে তুলে ধরা হলো]
ধন্যবাদ, আজকের অনুষ্ঠানের সভাপতি এবং উপস্থিত গুণীজন। আমি সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাথে যুক্ত ছিলাম। ফলে মুবিনুল হায়দার চৌধুরী আমার নেতা ছিলেন এবং শিক্ষক ছিলেন। উঁনি শুধু শিক্ষা দেননি, শিক্ষক তো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে শিক্ষা দেন, উঁনি আমাদের দীক্ষা দিয়েছিলেন। সেই অর্থে আমাদের একটা Vision বা জগৎ-জীবন সম্পর্কে একটা দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন। এবং তারপরেও আমি বলব যে, হায়দার ভাই সম্পর্কে কিছু বলার ব্যাপারে আমি কিছুটা দ্বিধায় ছিলাম। কী বলব, কতটুকু বলব। কারণ, দীর্ঘদিন হায়দার ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ ছিল না। হায়দার ভাই তো ওরাল ট্র্যাডিশনের লোক ছিলেন। হায়দার ভাই লিখে যাননি খুব বেশি কিছু। হ্যাঁ, পার্টির যে সাহিত্য বা লিটারেচার–এগুলোর পেছনে হায়দার ভাইয়ের অনেক অবদান ছিল। তাঁর নামে প্রকাশিত হয়নি। হায়দার ভাই-এর শুধু একটি বক্তৃতা আমি ইউটিউবে পেয়েছি। ফলে হায়দার ভাইয়ের সাথে যেটুকু কথা হয়েছে, অনেকটা উঁনি সক্রেটিসের মতো মুখে বলতেন। বা আমাদের এখানে প্রফেসর রাজ্জাক যেরকম, বুর্জোয়া শ্রেণির … ইন্টেলেকচুয়াল যারা ছিলেন, তাদের সাথে আলাপ করতেন। হায়দার ভাইও ওরাল ট্র্যাডিশনের লোক ছিলেন এবং তাঁর সাথে বসে মুখোমুখি কথা বলে আমরা অনেক কিছু শিখেছি, জেনেছি, বুঝেছি বা বুঝবার চেষ্টা করেছি। ফলে হায়দার ভাইয়ের কাছ থেকে যেটুকু শুনে শিখেছি বা হায়দার ভাইয়ের সাথে যারা ছিলেন, তাদের মাধ্যমে হায়দার ভাই সম্পর্কে কিছুটা জানার চেষ্টা করেছি।
হায়দার ভাই তাঁর ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে খুব বেশি বলতে চাইতেন না। তবে শুরুতেই একটা কথা বলব যে, সাতাশি বছরের যে জীবন সে জীবনটা উঁনি এমনভাবে যাপন করেছেন, ফলে তাঁর মৃত্যুকে আমরা সেলিব্রেট করতে পারি। আমরা শোকার্ত, কিন্তু এরকম একটা জীবন কতজন মানুষের হয়! ফলে এরকম জীবন যেমন ঈর্ষণীয়, এরকম মৃত্যুও কিন্তু ঈর্ষণীয়। আমৃত্যু একটা আদর্শের পক্ষে থেকে, সে আদর্শের জন্য লড়াই করা বা লড়াই করার যে শক্তি, সেটা সবার থাকে না। সেই অর্থে আজকের যে আলোচনার বিষয় ‘সংশপ্তক বহমান‘, প্রকৃত অর্থে হায়দার ভাই সংশপ্তক শব্দের একেবারেই আমি বলব embodiment (প্রতিমূর্তি)। এবং বাংলা ভাষায় আরেকটি শব্দ আছে ‘কায়মনোবাক্যে‘ অর্থাৎ কায়া, মন এবং বাক্যকে একটা এক্সিসে অর্থাৎ অক্ষে যদি আমরা নিয়ে আসতে পারি, তাহলে হায়দার ভাই যে বিপ্লবের স্বপ্ন দেখেছিলেন, তাঁর শরীর, মন এবং বাক্য সেই বিপ্লবের জন্য, সেই প্রগতির জন্য উৎসর্গ করে গেছেন। ফলে ৬ তারিখে হয়তো হায়দার ভাইয়ের দেহ বিয়োগ ঘটেছে। কিন্তু আজকে যারা আছেন অথবা তাঁর কথা যারা শুনছেন–তাদের মধ্যে উঁনি আছেন, ওঁনার স্পিরিট আছে। এবং বলা হয়ে থাকে একজন মানুষের মৃত্যু ততদিন পর্যন্ত হয় না, যতদিন তাঁকে স্মরণ করার মতো শেষ মানুষটিও বেঁচে থাকে। সেই অর্থে হায়দার ভাই আমাদের মধ্যে আছেন এবং আরও দীর্ঘদিন থাকবেন।
অষ্টাশি সালে আমি ছাত্র রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়েছি এবং তারপর থেকে পার্টি অফিসে যতবার গিয়েছি, তখন অফিস একটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতোই ছিল। আমাদের মধ্যে একধরনের ক্রিটিক্যাল কনশাসনেস গড়ে তোলার জন্য তাদের মতো করে এই চার নেতা চেষ্টা করেছেন এবং হায়দার ভাইকে বিশেষ করে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিতে সবচেয়ে অগ্রসর মনে হয়েছে। এবং সেটি শুধু তাঁর আলোচনা নয়, ইভেন জীবনযাপনের প্রত্যেকটা জায়গাতেই মনে হয়েছে। খুব ‘সিম্পল লিভিং এবং হাই থিংকিং‘ যেটা বলে অনেক সময়, আমরা যেটা বলি রেনেসাঁস ম্যান বা একসময়ের প্লেটো যেরকম ফিলোসোফার কিং-এর কথা বলতেন, হায়দার ভাইয়ের চেষ্টাটা ছিল অনেকটা ওরকম আর কি! অর্থাৎ তাঁর রাজনীতির ভিত। কিন্তু তাঁর অন্য সকল বিষয়ে সাধারণ কৌতূহল, আগ্রহ এবং অনেক ক্ষেত্রে একটা পারদর্শিতা আছে।
অনেকে যে সংগীতে পারঙ্গমতার কথা বলছেন, তাঁর খুব ভালো মিউজিক অ্যাপ্রিসিয়েশান ছিল। কি ইস্টার্ন-কি ওয়েস্টার্ন, ইভেন আমরা যেটাকে ফোক সং বলি বা গণসংগীত বা যেটাই বলি না কেন, তার প্রতি তিনি ভীষণ নিষ্ঠাবান ছিলেন এবং আগ্রহী ছিলেন। বলা হয়ে থাকে সংগীতে নাকি চার ধরনের শ্রোতা আছে। একধরনের শ্রোতা–যারা সংগীত বন্ধ হয়ে গেলে টের পায় যে কিছু একটা চলছিল। ফলে অসাংগীতিক ধ্বনি তাদের কাছে, প্রথমত তারা আইডেন্টিফাই করতে পারেন। আরেক ধরনের শ্রোতা আছে সংগীত শোনার সময় দেখা যায় যে–কিছু শুনছে আবার আরেক কাজে ব্যস্ত। আবার, একটু ভালো লাগছে, শুনছে–এরকম দ্বিতীয় ধরনের শ্রোতার কথা বলা হয়। তৃতীয় ধরনের শ্রোতা আছে সংগীত শোনার সময়ে তারা চিত্রকল্প দেখেন। তারা বৃষ্টির শব্দ, তারা জলস্রোতের শব্দ অথবা অশ্বখুরের ধ্বনি, নানারকম ইমেজ তারা দেখেন বা রিলেট করতে পারেন। আরেক ধরনের শ্রোতা আছে যারা মিউজিক্যাল নোট বা সংগীতের ভাষায় সংগীতকে বুঝতে পারেন। এটা কোন্ ধরনের ঠাঁট, কোন ধরনের রাগ, আবার কোনটা বাদীস্বর-কোনটা বিবাদীস্বর অথবা কোন স্বরটা ঠিকমতো লাগল কি লাগল না ইত্যাদি। আমার মনে হয় হায়দার ভাই এই চতুর্থ স্তরের শ্রোতা ছিলেন। উঁনি নিজেকে সেই উচ্চতায় নিয়ে যেতে পেরেছেন। এবং সব শিল্পী সাধারণত বলা হয় যে সংগীতের কাছে পৌঁছতে চায়। সেই অর্থে আমি বলব যে, ক্লাসিক্যাল মিউজিকের মধ্যে যে abstraction আছে, এক ধরনের কংক্রিট চেহারা আছে, সেও কিন্তু মিউজিকের এই abstraction-কে টাচ করতে চায়। অন্যান্য শিল্প-সাহিত্যের ও অন্যান্য শাখায়ও কিন্তু তাঁর ব্যাপক আগ্রহ ছিল।
আমি যদি আজকে আমার কিছু খণ্ড খণ্ড ক্ষুদ্র স্মৃতিকে জড়ো করি, আমি বলব, যে সত্যের সন্ধান আমরা করি সেই সত্য চার টুকরায় নিজেকে নাকি প্রকাশ করে। এটা একজন দার্শনিক অস্পষ্ট শব্দে বলেছেন। তার একটা হচ্ছে পলিটিক্স। উনি বলেছেন যে, emancipatory politics, যেটা মানুষের মুক্তির প্রেরণাদায়ী পলিটিক্স। উনি ক্রিয়েটিভ আর্ট-এর কথা বলেছেন। উনি elevated love-এর কথা বলেছেন, friendship—এর কথা বলেছেন এবং উনি conceptual science-এর কথা বলেছেন। তাই বাসদ-এর অফিসে আসলে আমার কাছে মনে হতো যে, এই চারটা জিনিসকে একসাথে পাওয়ার পরিবেশ তৈরির চেষ্টা অন্ততপক্ষে নেতারা করছেন। তারা মুক্তিদায়ী রাজনীতির কথা বলছেন। এবং ওখানেই আমরা যখন দেখি যে, conceptual science evaluation নিয়ে, ডারউইনের বিবর্তন নিয়ে, এমনকি Richard Dawkins-এর selfish gene থেকে শুরু করে, হকিংস-এর এ ব্রিফ হিস্ট্রি অফ টাইম থেকে শুরু করে অজস্র বই নেতারা constantly ওগুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা করছেন। আমরা সারাদিন ক্লান্ত হয়ে অফিসে যখন যাচ্ছি আবার সেই আলোচনাগুলোর মধ্যে ঢুকছি, তখন আমাদের পরিশ্রমটা তো voluntary পরিশ্রম ছিল, এটা ছিল labour of love, ভালোবাসার কাজ। ফলে ক্লান্ত বোধ করতাম না। তদুপরি এই আলোচনায় যাওয়ার পরে আমরা আরও বেশি অনুপ্রেরণা পেতাম, শক্তি পেতাম। সেই জায়গায় আমি বলব যে, হায়দার ভাই অগ্রগণ্য ছিলেন।
হায়দার ভাই কোনায় বারান্দায় একটা কাঠের চেয়ারে বসতেন। সেখানে বসে কর্মীদের সাথে আলাপ-আলোচনা করতেন। উঁনি যেমন ভ্যান গগের কথা বলেছেন। আপনারা জানেন যে, ভ্যান গগ নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে আমরা so called যেটা বলি ভ্যান গগ post impressionist painter ছিলেন এবং তার রেখার বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল তুলির মোটাদাগের টান যেগুলো ছিল … ইত্যাদি। তো হায়দার ভাই বলতেন যে, খনি শ্রমিকদের জীবন দেখে তাদের পেশীর যে পরিবর্তন এবং পেশীর যে বঙ্কিমতা সেগুলোকে তার তুলির আঁচড়ে তুলে আনার চেষ্টা করেছেন। তাদের যে ছেঁড়া জুতো সেগুলো নিয়ে কিন্তু ভ্যান গগের একটা ছবি আছে, জুতোর ছবি। এই যে শ্রমজীবী মানুষের প্রতি ভালোবাসা, সেই জায়গাগুলোকে উঁনি সব সময় সবার আগে স্থান দিতেন।
একবার রিকশা করে যাচ্ছিলাম। তো আমি দেখছিলাম যে, রিকশা আর্ট কত সুন্দর। উঁনি মেনে নিয়েই বললেন যে, কিন্তু দেখ শ্রমিকের যে পেশি, সে যে রিকশা চালাচ্ছে এবং তার যে পেশি move করছে … অর্থাৎ তাঁর সমস্ত কিছুর কেন্দ্রে ছিল বঞ্চিত মানুষ, পরিশ্রমী মানুষ। শ্রম এবং শ্রমিকতাকে হাইলাইট করা। অফিসে রোঁদ্যাকে নিয়ে আলোচনা হতো, ওখানে আমরা মাইকেল এঞ্জেলোর কথা বলতাম। মিউজিকের ক্ষেত্রে হায়দার ভাই ক্লাসিক্যাল মিউজিক, বিশেষ করে বেগম আকতারের ঠুমরীগুলো খুব শুনতেন। আমার মনে আছে। এবং ওখানে চাইকোভস্কির কথা তো বলেছেন already আমাদের আমিরুল হক ভাই বা Mozart, Beethoven–এগুলো চলত এবং অভিনয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। উঁনি হ্যামলেট নিয়ে আমাকে বলতেন যে, লরেন্স অরিউডের হ্যামলেট দেখবে। চোখ দিয়ে যে কত রকম অভিনয় করা যায়, কেমন করে অভিনয় করা যায়।
এবং বিদ্যাসাগরের ওই চটি জুতো ছুঁড়ে মারার গল্প। বলেছিলেন যে, sympathy কীভাবে তৈরি করে মানুষকে, কীভাবে connect করে, relate করে। আমাকে তপন সিনহার একটা সিনেমা দেখার জন্য বলেছিলেন, কারণ মানুষের যে dedication, সততা, সে রাজনীতি না করলেও বিজ্ঞানের জন্য হোক, সেই জায়গাটা তাকে টানত এবং তপন সিনহার ‘এক ডাক্তার কি মউত‘ ছবিটার কথা বলেছিলেন। যে একজন চিকিৎসক, সেই নিজস্বভাবেই চিকিৎসা করতে গিয়ে পরে মারা যান। সেই ছবি আমি পরে দেখেছিলাম চলচ্চিত্র উৎসবে। সাহিত্য নিয়েও তাঁর সাথে কথা হতো শরৎচন্দ্র নজরুলের বাইরেও। আপনারা জানেন যে, তসলিমা নাসরিনকে নিয়ে বাসদ লিখেছে। আখতারুজ্জামান ইলিয়াসকে নিয়ে আলোচনা হতো। হায়দার ভাই সবসময় বলতেন যে, আমি ন্যাশনালিজমে বিশ্বাস করি না। এমিল জোলা থেকে শুরু করে বিশ্বসাহিত্যের অনেক উদাহরণ দিয়েই বলতেন, মানুষ তার প্রবৃত্তিকে জয় করবে এবং জয় করার মধ্য দিয়েই …। যেগুলো primodial instinct জাগিয়ে তোলে যেটা, sexual content-কে explicitly exhibit করে, সেগুলোর উঁনি পক্ষের লোক ছিলেন না। তাকে নিয়ন্ত্রণ করে, regulate করে সেই ধরনের সাহিত্যের কথা বলতেন, সংগীতের ক্ষেত্রেও তাই।
ক্লাসিক্যাল মিউজিকের ক্ষেত্রে অনেকে বলে যে, এটি তো Elite ঘরানার জিনিস, উঁনি কেন এগুলোতে? হায়দার ভাই বাউল সংগীত বলেন বা গণসংগীত, এগুলোরও ভক্ত ছিলেন। চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রকে উঁনি সেভাবে করে গাইড করতেন। তবে ক্লাসিক্যাল মিউজিকের ক্ষেত্রে উঁনি বলতেন যে, এই ক্লাসিক্যাল মিউজিকের যে শৃঙ্খলা আছে, ছন্দ আছে, সেটা মানুষের ইন্দ্রিয়গুলোকে ডিসিপ্লিন্ড করে এবং সেগুলো মানুষের রুচি-সংস্কৃতির মধ্যে একটা শৃঙ্খলা নিয়ে আসে।
তো এরকম অজস্র বিষয় নিয়ে হায়দার ভাইয়ের সাথে কথা হয়েছে এবং আমি বলব যে, আমাদের সবারই গড়ে ওঠার পেছনে হায়দার ভাই আছেন। হায়দার ভাইয়ের মধ্যেও আমরা আছি। কারণ নেতা তো কর্মীসহই নেতা হয়ে ওঠেন। আমরাও যতদিন আছি, হায়দার ভাই আমাদের মধ্যে আছেন, হায়দার ভাই থাকবেন। কারণ, যে লড়াই উঁনি শুরু করেছিলেন, সেই লড়াই অব্যাহত থাকবে। সে লড়াই শুধু বাসদ (মার্কসবাদী) দল করবে না, সারা দুনিয়ার মানুষ সেই লড়াইয়ে আসবে। ফলে যতদিন সমাজতন্ত্রের লড়াই, মানুষের মুক্তির লড়াই থাকবে, সেই লড়াইয়ে এই উপমহাদেশে হায়দার ভাইয়ের নাম বিশেষভাবে মানুষ স্মরণ করবে। হায়দার ভাই শরৎচন্দ্রের একটা গল্প বলতেন যে, দিলীপ রায়ের গান শুনলে সবাই প্রশংসা করতেন–দিলীপ রায় তো খুব ভালো গান গায়। তখন শরৎচন্দ্র নাকি বলেছিলেন, ‘গায় তো ভালো, কিন্তু থামতে জানে তো!’ আমার মনে হয়, আমার থামার সময় এসেছে। তো এইটুকু বলে আমি শেষ করি। ধন্যবাদ।