ধর্মের নামে ধারাবাহিক গুপ্তহত্যা বন্ধ ও জনজীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার উদ্যোগে ১৬ জুন বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাম মোর্চার ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়ক মানস নন্দীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাইফুল হক, মোশাররফ হোসেন নান্নু, আব্দুস সাত্তার, মোশরেফা মিশু, ফিরোজ আহম্মেদ, ইয়াসিন মিয়া, হামিদুল হক ও মহিনউদ্দিন লিটন।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, সারাদেশে একের পর এক গুপ্তহত্যা চলছে, সরকার ঠেকাতে পারছে না। অথচ, মহাজোট সরকার দাবি করছে মানুষ শান্তিতে ঘুমাচ্ছে, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো। বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে জঙ্গী হামলার ঘটনাকে এতদিন লঘু করে দেখানো হয়েছে, সরকারের মনোযোগ নিবদ্ধ ছিল বিরোধী দমনে। উপরন্তু ব্লগারদের লেখালেখি সংযত করার কথা বলে ধর্মীয় উগ্রবাদী শক্তিকে প্রশ্রয় দেয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ঘাতকরা আজ শক্তিশালী ও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ফলে, এই পরিস্থিতি সৃষ্টির দায়-দায়িত্ব সরকার এড়াতে পারে না। এখনো সরকার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষিদের চিহ্নিত না করে দলীয় স্বার্থে ব্লেম গেইমের আশ্রয় নিচ্ছে।
নেতৃবৃন্দ গতকাল মাদারিপুরে কলেজ শিক্ষক রিপন চক্রবর্ত্তীকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, শুধুমাত্র ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যেভাবে আক্রমণ চালানো হচ্ছে তার বিরুদ্ধে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে রুখে দাঁড়াতে হবে। কারণ, এদেশ সকলের। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ‘এ ধরনের হত্যাকান্ডের ফলে জনগণের মধ্যে বিশেষত ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ লেখক-প্রকাশক-ব্লগার শিল্পী-মুক্তচিন্তার মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা ও চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। সরকার ফ্যাসিবাদী শাসন পাকাপোক্ত করার লক্ষ্যে গণতান্ত্রিক নীতি আদর্শ, মূল্যবোধ-সংস্কৃতিসহ নূ্যূনতম গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ধ্বংস করার চক্রান্তে লিপ্ত। আর এ ধরণের অগণতান্ত্রিক পরিবেশ কার্যতঃ গুম, খুন, গুপ্তহত্যার উর্বর জমিন তৈরী করে দিচ্ছে। একই রাজনৈতিক স্বার্থে জঙ্গীবাদী মৌলবাদী শক্তির বিরুদ্ধে বুলিসর্বস্ব বিরোধিতা আর ক্ষমতার স্বার্থে সাম্প্রদায়িকতার নির্লজ্জ প্রশ্রয়দান চলছে।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, সরকারের পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনী জঙ্গীদের ধরতে পারেনি, সাধারণ জনগণ হামলাকারীদের হাতেনাতে ধরে পুলিশে সোপার্দ করেছে। পুলিশ দিয়ে সাঁড়াশি অভিযানের মাধ্যমে এ পর্যন্ত প্রায় ১২ হাজার মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ অবস্থার সুযোগে সরকার বিরোধী মত দমন করতে কাজে লাগাচ্ছে, অন্যদিকে পুলিশ গ্রেফতার বাণিজ্যের মাধ্যমে জনমনে বাড়তি আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।