গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব বাতিলের দাবিতে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার উদ্যোগে ২২ আগস্ট সোমবার বিকাল ৫টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কার্যপরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মোর্চার কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হেসেন নান্নু, অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক, বাসদ-এর কেন্দ্রীয় নেতা শওকত হোসেন আহমেদ, প্রমুখ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, “গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির সাথে সাথে গাড়ী ভাড়া, বাড়ী ভাড়া এবং চাল-ডাল-নূন তেলসহ অন্যান্য পণ্যের দাম নতুন করে বৃদ্ধি পাবে। এতে নিম্নবিত্ত মধ্যবিত্ত মানুষের জীবনে চরম দুর্যোগ নেমে আসবে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণে এমনিতেই মানুষের দিশেহারা অবস্থা, তার ওপর আবারো গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির ফলে সংকটের তীব্রতা আরো বৃদ্ধি পাবে। গ্যাস খাত একটি লাভজনক সেক্টর, গত অর্থবছরে এ খাত থেকে কর-ভ্যাট ও লভ্যাংশ বাবদ প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে। সাধারণ মানুষ, এমনকি ব্যবসায়ী সম্প্রদায়েরও প্রতিবাদকে তোয়াক্কা না করে মহাজোট সরকার স্বেচ্ছাচারী কায়দায় অযৌক্তিক ও গণবিরোধী এ প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন করলে তাকে তীব্র গণবিক্ষোভের সম্মুখীন হতে হবে। উন্নয়নের নামে সরকারের লুটপাট-দুর্নীতির খরচ যোগাতে গ্যাসের দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট কাটার এ নীতি মানুষ মেনে নেবে না।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, “গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে গ্যাসের দাম প্রায় ২৭% বাড়ানোর পর বছর না যেতেই আবারো দ্বিগুণ মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব আনা হয়েছে। বিইআরসি-তে এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে গ্যাস কোম্পানির প্রতিনিধি ছাড়া প্রায় সব বক্তা ও বিশেষজ্ঞরা তথ্য-যুক্তি দিয়ে মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন। এরপরও দাম বাড়ানো হলে আরেকবার প্রমাণিত হবে এ গণশুনানি প্রহসন ছাড়া কিছু নয়। ভবিষ্যতে গ্যাসখাতের উন্নয়নের জন্য তহবিল প্রয়োজন Ñ এ অজুহাতে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হচ্ছে, অথচ গ্যাস উন্নয়ন খাতে কয়েকহাজার কোটি টাকা অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। জনগণের করের অর্থে প্রণীত রাষ্ট্রীয় বাজেট ও ঊন্নয়ন বরাদ্দ থেকেই এ ব্যয় নির্বাহ করা উচিত। মহাজোট সরকার জরুরি ভিত্তিতে দেশের স্থলভাগ ও সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধান-উত্তোলন ত্বরান্বিত না করে ব্যয়বহুল আমদানির পথ ধরেছে। অন্যদিকে, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে কাজে না লাগিয়ে দেশের গ্যাস বিদেশি কোম্পানির কাছ থেকে বহুগুণ বেশি দামে কিনছে। লুটপাটের উদ্দেশ্যে সরকারের এসব কর্মকান্ডের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।”
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবনা বাতিলের জোর দাবি জনান। জনমত উপেক্ষা করে মাহাজোট সরকার যদি গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করে তাহলে ঘেরাও-অবস্থান-অবোরধ ও হরতালের মত কঠোর কর্মসূূচি ঘোষণা করা হবে এবং সর্বস্তরের মানুষদের সাথে নিয়ে তা পালন করা হবে।