Sunday, April 28, 2024
Homeসংবাদ ও প্রেস বিজ্ঞপ্তিপার্টি সংবাদমৌলবাদ-জঙ্গিবাদ ও রাষ্ট্রীয় ফ্যাসিবাদ রুখে দাঁড়ানোর দাবিতে পদযাত্রা ও মিছিল

মৌলবাদ-জঙ্গিবাদ ও রাষ্ট্রীয় ফ্যাসিবাদ রুখে দাঁড়ানোর দাবিতে পদযাত্রা ও মিছিল

CTG_140816

মৌলবাদ, জঙ্গীবাদ ও রাষ্ট্রীয় ফ্যাসিবাদ রুখে দাঁড়ানোর দাবিতে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) চট্টগ্রাম জেলা শাখা ১৪ আগষ্ট ২০১৬ নগরীতে পদযাত্রা ও সমাবেশ করেছে। বিকেল ৫ টায় নগরীর নিউমার্কেট চত্বর থেকে শুরু হয়ে পদযাত্রা জুবিলী রোড দিয়ে চেরাগী পাহাড় হয়ে আন্দরকিল্লা মোড়ে শেষ হয়। পদযাত্রার মাঝে নিউমার্কেট মোড়, চেরাগী পাহাড় মোড় এবং আন্দরকিল্লা মোড়ে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) চট্টগ্রাম জেলার সদস্য সচিব অপু দাশগুপ্ত, সদস্য শফিউদ্দিন কবির আবিদ, ইন্দ্রানী ভট্টাচার্য সোমা, রফিকুল হাসান, সত্যজিৎ বিশ্বাস প্রমুখ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, “গত কয়েক মাসে একের পর এক হত্যা, খুনসহ সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গিবাদী হামলার দায় সরকার কোন ভাবেই এড়িয়ে যেতে পারে না। শাসকগোষ্ঠী সবসময় জঙ্গীবাদের সমস্যা নিজেদের রাজনৈতিক হীন স্বার্থে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছে এবং সঠিক সময়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের পরিবর্তে একে প্রশ্রয় দিয়েছে। সর্বোপরি, এদেশের শাসকগোষ্ঠী সবসময় নিজেদের গণবিরোধী শাসন আড়াল করতে ধর্মকে রাজনীতিতে ব্যবহার করেছে, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাকে মদত দিয়েছে, কূপমন্ডুক মাদ্রাসা শিক্ষার বিস্তার ঘটিয়েছে। এখনো সরকার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত না করে দলীয় স্বার্থে ব্লেইম গেইম ও রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের খেলা খেলছে। বাংলাদেশের বর্তমান জঙ্গী উত্থান বিশ্ব পরিস্থিতি থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। সাম্রাজ্যবাদীরাই বিভিন্ন সময় মৌলবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সৃষ্টি করেছে, মদত দিয়েছে, অস্ত্র- প্রশিক্ষণ- অর্থ দিয়েছে। সাম্রাজ্যবাদবিরোধী লড়াই মনে করে এসব সন্ত্রাসী গ্রুপ বাস্তবে জ্ঞাতে-অজ্ঞাতে সাম্রাজ্যবাদীদের পরিকল্পনাই বাস্তবায়ন করছে।”

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, “একদিকে যেমন চরম নিরাপত্তাহীনতা ও জঙ্গিবাদের ভয়াবহ আতঙ্কে মানুষের উদ্বেগ ও অসহায়ত্ব আমরা দেখেছি অন্যদিকে দেখছি লক্ষ লক্ষ বানভাসি মানুষের জীবনের আর্তনাদ। প্রায় ৪০ লক্ষাধিক মানুষ বন্যায় পানিবন্দী। সরকারি হিসেবে ১৬ জেলার ৫৯ উপজেলার প্রায় ১৫ লক্ষাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ। ২২ হাজার ঘরবাড়ি ভেসে গেছে, ইতোমধ্যে মারা গেছে প্রায় ৪০ জন। বসতবাড়ি ও সম্পদ হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নেয়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। হাজার হাজার হেক্টও ফসলি জমি, মাছের ঘের, পুকুর, বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। বিশুদ্ধ পানির সংকটে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। ভবিষ্যতের চরম অনিশ্চয়তায় যখন অন্ধকার দেখেছে মানুষ, সরকারের ভূমিকা নিতান্তই দায়সারা। সরকার বলছে, ত্রাণের অভাব নেই। অথচ সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে ত্রাণ নিয়ে তামাশা চলছে। এ পর্যন্ত সরকারি বরাদ্দ জনপ্রতি ২১ টাকা (কালের কণ্ঠ, ৩১ জুলাই)। মুখে জনদরদী বলে দাবি করলেও সরকার যে জনগণের দুর্দশার প্রতি চরম উদাসীন, এ পরিস্থিতিতে তা স্পষ্ট।”

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, “সরকার মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে সুন্দরবনে রামপালে পরিবেশ বিধ্বংসী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র করার চুক্তি বাস্তবায়ন করেছে। একই সাথে রূপপুরে পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করার চেষ্টাও তারা বাস্তবায়ন করছে। দেশের সাধারণ দেশপ্রেমিক মানুষের মতামতের বিরুদ্ধে গিয়ে সরকারের এই সিদ্ধান্ত ফ্যাসিবাদী চেহারাকেই উন্মোচিত করে। সরকার আবারো গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে, যা আগামী মাস থেকেই কার্যকর করা হবে। এভাবে একর পর এক গণবিরোধী কর্মকান্ড জনজীবনকে দূর্বিষহ করে তুলেছে। নির্বাচনবিহীন এক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকার অগণতান্ত্রিক শাসনকে পাকাপপাক্ত করার লক্ষ্যে গণতান্ত্রিক নীতি-মূল্যবোধ-সংস্কৃতি বিবর্জিত দমনমূলক যে শাসনব্যবস্থা জারি রেখেছে, তাতে চক্রান্ত-ষড়যন্ত্রের শক্তি যেমন লাভবান হচ্ছে, তেমনি মৌলবাদী শক্তির তৎপরতার জমিন প্রশস্ত হচ্ছে। আমরা সমস্ত লড়াকু, গণতান্ত্রিক ও বামপন্থী শক্তিকে আহ্বান জানাই- আসুন সম্মিলিত শক্তিতে মেীলবাদ-জঙ্গীবাদ ও রাষ্ট্রীয় ফ্যাসিবাদকে মোকাবেলা করি।”

উল্লেখ্য, ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পের প্রতিবাদে আগামী ১৭ আগষ্ট চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments