সরকারের লুটপাট-দুর্নীতির দায় জনগণের ঘাড়ে চাপানো চলবে না
“গ্যাস খাত একটি লাভজনক সেক্টর, গত অর্থবছরে এ খাত থেকে কর-ভ্যাট ও লভ্যাংশ বাবদ প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে। অথচ, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে গ্যাসের দাম প্রায় ২৭% বাড়ানোর পর বছর না যেতেই আবারো দ্বিগুণ মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব আনা হয়েছে। সাধারণ মানুষ, এমনকি ব্যবসায়ী সম্প্রদায়েরও প্রতিবাদকে তোয়াক্কা না করে মহাজোট সরকার স্বেচ্ছাচারী কায়দায় অযৌক্তিক ও গণবিরোধী এ প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন করলে তাকে তীব্র গণবিক্ষোভের সম্মুখীন হতে হবে। উন্নয়নের নামে সরকারের লুটপাট-দুর্নীতির খরচ যোগাতে গ্যাসের দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট কাটার এ নীতি মানুষ মেনে নেবে না।” গ্যাসের মূল্য দ্বিগুণ বৃদ্ধির প্রস্তাবের প্রতিবাদে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার বিক্ষোভ কর্মসূচিতে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। মোর্চার ডাকে ১০ আগস্ট সকাল ১১টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত কাওরানবাজারস্থ বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন কার্যালয়ের সামনে অবস্থান ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়েছে।
বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মোর্চার কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হেসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা ফিরোজ আহমেদ, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক, বাসদ-এর কেন্দ্রীয় নেতা মহিনউদ্দিন লিটন, অধ্যাপক আবদুস সাত্তার প্রমুখ।
অবস্থান কর্মসূচিতে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, “বিইআরসি-তে এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে গ্যাস কোম্পানির প্রতিনিধি ছাড়া প্রায় সব বক্তা ও বিশেষজ্ঞরা তথ্য-যুক্তি দিয়ে মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন। এরপরও দাম বাড়ানো হলে আরেকবার প্রমাণিত হবে এ গণশুনানি প্রহসন ছাড়া কিছু নয়।” তাঁরা বলেন, “ভবিষ্যতে গ্যাসখাতের উন্নয়নের জন্য তহবিল প্রয়োজন Ñ এ অজুহাতে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হচ্ছে, অথচ গ্যাস উন্নয়ন খাতে কয়েকহাজার কোটি টাকা অব্যবহৃত পড়ে আছে। জনগণের করের অর্থে প্রণীত রাষ্ট্রীয় বাজেট ও ঊন্নয়ন বরাদ্দ থেকেই এ ব্যয় নির্বাহ করা উচিত।” তাঁরা আরো বলেন, “মহাজোট সরকার জরুরি ভিত্তিতে দেশের স্থলভাগ ও সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধান-উত্তোলন ত্বরান্বিত না করে ব্যয়বহুল আমদানির পথ ধরেছে। অন্যদিকে, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে কাজে না লাগিয়ে দেশের গ্যাস বিদেশি কোম্পানির কাছ থেকে বহুগুণ বেশি দামে কিনছে। লুটপাটের উদ্দেশ্যে সরকারের এসব কর্মকা-ের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।”
সমাবেশ থেকে ঘোষণা করা হয়, জনমত উপেক্ষা করে সরকার গ্যাসের দাম বাড়ালে আগামীতে জনগণকে সাথে নিয়ে বৃহত্তর ও কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। গণসংযোগের লক্ষ্যে আগামী ২২ আগস্ট থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে জেলায় জেলায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে জনসভা-সমাবেশ-মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।