সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নাঈমা খালেদ মনিকা ও সাধারণ সম্পাদক স্নেহার্দ্রী চক্রবর্তী রিন্টু আজ এক যৌথ বিবৃতিতে তনু ধর্ষণ-হত্যাসহ সারাদেশে অব্যাহত নারী লাঞ্ছনার প্রতিবাদে আহুত হরতাল কর্মসূচি থেকে জয়পুরহাট জেলা শাখার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তাজিউল ইসলামকে পুলিশি হেফাজতে চোখ বেঁেধ নির্যাতন ও রংপুরে ছাত্রলীগ কর্তৃক ছাত্র ফ্রন্টের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান রোকনসহ নেতা-কর্মীদের উপর হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, “সারাদেশে অব্যাহতভাবে নারী ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটছে। এইসব ঘটনায় সরকারের দায়িত্ব দোষীদের খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনা। কিন্তু সরকার তা না করে তদন্তের নামে কালক্ষেপণ করে বরাবরই দোষীদের আড়াল করার চেষ্টা করে। সম্প্রতি কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে তনু ধর্ষণের ক্ষেত্রেও তাই ঘটছে। দোষীদের গ্রেফতার বিচার না করা ও বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি দেশে গড়ে ওঠেছে এর প্রতিবাদে সারাদেশের জনগণ সোচ্চার হয়েছে। ছাত্র সমাজের অগ্রণী সংগঠন হিসেবে প্রগতিশীল ছাত্র জোট ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্যও একই দাবিতে ধারাবাহিক আন্দোলন করছে। এই আন্দোলনের অংশ হিসেবেই হরতাল আহ্বান করা হয়েছিল। সারাদেশে জনগণের ব্যাপক সমর্থনের মধ্য দিয়ে হরতালে সংহতি জানিয়েছেন। আর এই গণতান্ত্রিক আন্দোলনেই পুলিশ ও সরকারি দলের ছাত্র সংগঠন জয়পুরহাট, রংপুর, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের বিভিন্নস্থানে ন্যাক্কারজনকভাবে নির্যাতন ও হামলা চালিয়েছে। গণতন্ত্রের ধ্বজাধারী সরকার এভাবেই তার ফ্যাসিবাদী মুখোশ উন্মোচন করেছে।”
তারা আরও বলেন, ‘নারীর নিরাপত্তা ও মর্যাদা তো এ দেশে নেই-ই। নারী নিরাপত্তাহরণ কারীদের গ্রেফতার করতে পারে না। যারা নারী ধর্ষণ-হত্যার বিচার চায়, নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করতে চায় উল্টো তাদের গ্রেফতার করে, নির্যাতন করে। একটি দেশ গণতান্ত্রিক হলে কখনোই এটা হতে পারে না। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে যে কারও মত প্রকাশের অধিকার থাকে, প্রতিবাদ সংগঠিত করার অধিকার থাকে। বাস্তবে অগণতান্ত্রিকভাবে বর্তমান সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হয়ে একের পর এক জনগণের সমস্ত গণতান্ত্রিক অধিকার সংকোচন করছে। তাই সরকার এতটুকু প্রতিবাদও গায়ের জোরে দমন করতে চায়। হরতালে সারাদেশে বিভিন্নস্থানে আক্রমণের মধ্য দিয়ে তাই প্রমাণিত হল। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সরকারের এই দমন নীতি পরিহার করে ছাত্রসমাজ ও জনগণের দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানান। তনুহত্যায় জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত শাস্তি আওতায় আনার দাবি জানান। এবং একই সাথে হরতাল পালনকারীদের উপর পুলিশের নির্যাতন ও ছাত্রলীগের হামলার বিচার দাবি করেন।’