Saturday, November 23, 2024
Homeসংবাদ ও প্রেস বিজ্ঞপ্তিপার্টি ও সংগঠন সংবাদতিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও ক্ষতিগ্রস্ত চাষী-জেলেদের ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিক্ষোভ

তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও ক্ষতিগ্রস্ত চাষী-জেলেদের ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিক্ষোভ

SPBM_Tista_200415
ভারতের কাছ থেকে তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ এবং তিস্তা সেচ প্রকল্পের আওতাধীন ক্ষতিগ্রস্ত চাষী ও মৎস্যজীবীদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবিতে বাসদ (মার্কসবাদী)-র উদ্যোগে ২০ এপ্রিল বিকাল ৫টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ও পরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ধারাবাহিক আন্দোলনের অংশ একইদিনে উত্তরবঙ্গের প্রত্যেক জেলায় বিক্ষোভ সমাবেশ, অবরোধ, মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড কমরেড মানস নন্দী, কমরেড ওবায়দুল্লাহ মুসা, কমরেড উজ্জ্বল রায়, কমরেড ফখরুদ্দিন কবির আতিক। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল পল্টন-গুলিস্তান-বায়তুল মোকাররম এলাকা প্রদক্ষিণ করে।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, তিস্তা নদীতে পানি নেই, ধু-ধু বালুচর। পানিহীন শুকনো সেচখাল। তিস্তায় পানি না থাকায় হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল শুকিয়ে যাচ্ছে, মাটির নিচে পানির স্তর আরো নিচে নেমে গেছে। ফলে শুরু হয়েছে মরুকরণ। তিস্তা পাড়ের জীবন-প্রকৃতি ধ্বংসের মুখে। কৃষি প্রধান রংপুর বিভাগের নীলফামারী, দিনাজপুর, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলায় কৃষি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। ফলে বর্ষাকালে নদীভাঙন ও বন্যার কবলে পড়ে হাজার হাজার হেক্টর জমি নদীগর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে। তিস্তায় পানি-শূন্যতা ও নদীভাঙনসহ নানা কারণে নদী তীরবর্তী চাষী-মৎস্যজীবীরা এক হিসাবে কমপক্ষে ১২শ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছে। সমাবেশ থেকে অবিলম্বে বাজেটে থোক বরাদ্দের মধ্য দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত চাষী-মৎস্যজীবীসহ তিস্তাপাড়ের মানুষকে ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানানো হয়।
SPBM_200415সমাবেশ থেকে বলা হয়, ভারত সরকার একতরফাভাবে তিস্তার পানি প্রত্যাহার করে আন্তর্জাতিক আইন লংঘন করেছে। ১৯৯৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ‘জলপ্রবাহ কনভেনশন’-এ পানি প্রবাহের ক্ষেত্রে চুক্তি ও ন্যায়পরায়ণতা নীতিমালা গ্রহণ করে। এর মূল কথা হলো উজানের কোনো দেশে ভাটির কোনো দেশের স্বার্থ ক্ষুন্ন করে একক সিদ্ধান্তে পানি আটকাতে পারে না। অথচ ভারত এই কাজটিই করছে। আর এর ফলে আমাদের প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশ-প্রতিবেশ, প্রাকৃতিক ভারসাম্য ভয়ানকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দেশের ওপর এই যে বিপদ নেমে আসছে তা নিয়ে ক্ষমতাসীনদের কোনো মাথা ব্যথা নেই। বর্তমান আওয়ামী মহাজোট ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ভারতের সাম্রাজ্যবাদী শাসকগোষ্ঠীরা সাথে আপস-সমঝোতা করে চলছে। ভবিষ্যতে যারা ক্ষমতায় যেতে চায়, সেই বিএনপি-জামাতও ভারতের নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার কণ্ঠে কিছু বলছে না, বরং সাম্প্রদায়িক উসকানি দিয়ে নিজেদের ভোটের পাল্লা ভারি করার তাল করছে। এইভাবে ক্ষমতা দখলের যুদ্ধে জনগণ এবং দেশের স্বার্থ বলি দেয়া হচ্ছে। সমাবেশ থেকে আন্তর্জাতিক নীতিমালা অনুযায়ী ভারতের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের দাবি জানানো হয়।
বক্তারা আরো বলেন, ধনিক শ্রেণীর স্বার্থরক্ষাকারী দুই প্রধান জোট ক্ষমাতায় টিকে থাকা কিংবা ক্ষমতা দখল করার জন্য যে ভয়াবহ সংঘাত সহিংসতা ও ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নিয়েছে। জনগণের স্বার্থ নিয়ে তাদের ছিঁটেফোটা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নেই। সমাবেশ থেকে বলা হয়, অগণতান্ত্রিক পন্থায় গায়ের জোরে ক্ষমতায় বসে আওয়ামী মহাজোট ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সমস্ত ধরনের গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি, আইন-কানুনকে পদদলিত করে ফ্যাসিস্ট শাসন পরিচালনা করছে। সমাবেশ থেকে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও গণতান্ত্রিক নির্বাচন এবং নদীর পানির হিস্যা, দ্রব্যমূল্য, নারী নির্যাতন, সন্ত্রাস প্রভৃতি জনজীবনের সমস্যা নিয়ে বাম-গণতান্ত্রিক শক্তির নেতৃত্বে গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments