তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও উত্তরাঞ্চলের প্রাণ-প্রকৃতি-মানুষ রক্ষার দাবিতে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের উদ্যোগে ২৪ মার্চ বেলা ১২টায় রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ প্রদান করা হয়। বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান চলাকালে সমাবেশে বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড ওবায়দুল্যা মুসার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড শুভাংশু চক্রবর্ত্তী, বর্ধিত ফোরামের সদস্য কমরেড আহসানুল হাবীব সাঈদ, কমরেড মনজুর আলম মিঠু, বাসদ (মার্কসবাদী) রংপুর জেলার সমন্বয়ক আনোয়ার হোসেন বাবলু, বগুড়া জেলা সমন্বয়ক সামছুল আলম দুলু, পঞ্চগড় জেলা সমন্বয়ক তরিকুল আলম, দিনাজপুর জেলা সমন্বয়ক রেজাউল ইসলাম সবুজ, কুড়িগ্রাম জেলা সমন্বয়ক মহির উদ্দিন, ঠাকুরগাও জেলা সমন্বয়ক মাহবুব আলম রুবেল, রংপুর জেলা কমিটির সদস্য পলাশ কান্তি নাগ, আহসানুল আরেফিন তিতু প্রমূখ।
বক্তারা বলেন, তিস্তা নদী তীরবর্তী মানুষের জীবন ও জীবিকার সংকট এখন আরো বেড়েছে। নদীতে পানি নেই। ধু-ধু বালুচর । পানিহীন শুকনো সেচখাল। হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল শুকিয়ে যাচ্ছে তিস্তায় পানি না থাকার কারনে। তিস্তায় পানি না থাকায় মাটির নিচে পানির স্তর আরো নিচে নেমে গেছে। ফলে শুরু হয়েছে মরুকরণ। তিস্তা পাড়ের জীবন প্রকৃতি ধ্বংসের মুখে। কৃষি প্রধান রংপুর বিভাগের নীলফামারী, দিনাজপুর, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলায় কৃষি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। ফলে বর্ষাকালে নদীভাঙ্গন ও বন্যার কবলে পড়ে হাজার হাজার হেক্টর জমি নদী গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে।
ভারত সরকার একতরফাভাবে তিস্তার পানি প্রত্যাহার করে আন্তর্জাতিক আইন লংঘন করেছে। ১৯৭১ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ‘‘জলপ্রবাহ কনভেনশন’’ এ পানি প্রবাহের ক্ষেত্রে চুক্তি ও ন্যায়পরায়নতা নীতিমালা গ্রহন করে। এর মূলকথা হলো উজানের কোনো দেশে ভাটির কোনো দেশের স্বার্থক্ষুন্ন করে-একক সিদ্ধান্তে পানি আটকাতে পারে না। অথচ ভারত এই কাজটিই করছে।
বক্তারা আরো বলেন, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থার মধ্যে দুই প্রধান ধনীক শ্রেণীর স্বার্থরক্ষাকারী জোট ক্ষমাতায় টিকে থাকা কিংবা ক্ষমতা দখল করার জন্য যে ভয়াবহ সংঘাত সহিংসতা ও ষড়যন্ত্রেও আশ্রয় নিয়ে ব্যস্ত-জনগণের স্বার্থ নিয়ে তার ছিটে ফোটা উদ্বেগ উৎকন্ঠা নেই। জনগণের জন্য এর চাইতে দুঃখ আর কিছু নেই।
সমাবেশ থেকে শাসক দলগুলো দিকে তাকিয়ে না থেকে জনগনকে জোটবদ্ধ হবার এবং নদীর পানির হিস্যা আদায় করতে, ফসল রক্ষা ও উৎপাদনের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে, জীবন-জীবিকা প্রকৃতি ও হাজার হাজার প্রাণ রক্ষার দাবিতে গণআন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়।