Monday, April 29, 2024
Homeসংবাদ ও প্রেস বিজ্ঞপ্তিপার্টি সংবাদনারীমুক্তি কেন্দ্রের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

নারীমুক্তি কেন্দ্রের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

SAM_5462

বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে ১৩ মে বিকাল ৪ টায় প্রেসক্লাবের সামনে নড়াইলে গৃহবধু নির্যাতককারী আজিজুরসহ সকল আসামীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, নববর্ষে নারী লাঞ্ছনার প্রতিবাদে ডিমএমপি কার্যালয় ঘেরাও কর্মসুচিতে ছাত্রী লাঞ্ছনা ও হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি ও নারী-শিশুসহ সকল নাগরিকের জীবনের নিরাপত্তার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সীমা দত্ত । বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মর্জিনা খাতুন, ঢাকা নগর শাখার সভাপতি এডভোকেট সুলতানা আক্তার রুবি ও সাধারণ সম্পাদক তাছলিমা নাজনিন সুরভী, সদস্য নাঈমা খালেদ মনিকা, ইভা মজুমদার প্রমূখ।

বক্তারা বলেন, গত ৩০ এপ্রিল নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের শালবরাত গ্রামের গৃহবধু ববিতা খানমকে লম্পট স্বামী শফিকুল ইসলাম গাছের সাথে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করেছে। ববিতা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আর এই নির্যাতনে নেতৃত্ব দিয়েছে কাশিপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম আহবায়ক ও স্থানীয় মাতব্বর আজিজুর রহমান। ৫ মে ববিতার মা শফিকুল ইসলামকে প্রধান আসামী করে ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মূল আসামী শফিকুল গ্রেফতার হলেও ঐ নির্যাতনে নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক আজিজুর রহমানকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি।

নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রায় সকল নারী নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা শাসক শ্রেণীর মদদপুষ্ট হয়ে তাদের ছত্রছায়ায় নিরাপদে ঘুরে বেড়াচ্ছে। দিনে দুপুরে জন সমক্ষে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের খুঁজে পায়না অথবা পুলিশ তাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যস্ত থাকে। অন্যদিকে যারা অপরাধের বিচার চেয়ে ছাত্র- ছাত্রীসহ সাধারণ মানুষকে নিয়ে প্রতিবাদ করছে তাদের উপর বর্বর হামলা চালাচ্ছে পুলিশ। বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে নারী লাঞ্ছনাকারীদের এখনও পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। অথচ যারা অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন করছে তাদেরকে বেধড়ক লাঠিচার্জ করে, গরম পানি ছিটিয়েই পুলিশ ক্ষ্যান্ত হয়নি বরং প্রথম আলো পত্রিকার ছবিই প্রমাণ করে পুলিশ ন্যাক্কারজনকভাবে আন্দোলনকারী নারীদের পিটিয়েছে। ছাত্রী ইসমত জাহানকে পুলিশ চুলের মুটি ধরে যেভাবে ধাক্কা দিয়েছিল সেই ধাক্কায় হয়তো ইসমতের বড় ক্ষতি হতো। শুধু ইসমতকে নয় আন্দোলনকারীদের পুলিশ যেভাবে পিটিয়েছে তা এই ফ্যাসিস্ট সরকারের চেহারাকে জনস¤ু§খে ফুটিয়ে তুলেছে। যে পুলিশ নাগরিকের নিরাপত্তা দেয়ার জন্য নাগরিকের টেক্সের টাকায় পরিচালিত হচ্ছে সে পুলিশ আজ সরকারের দাস। আমরা পুলিশের এই বর্বর ভূমিকার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাই। একই সাথে হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

ঘরে-বাইরে-কর্মক্ষেত্রে কোথাও নারী নিরাপদ নয়। আপনারা সকলেই জানেন, এ্যাপেক্স ফুটওয়ার কোম্পানীতে এক অন্ত:সত্বা নারী শ্রমিককে কর্তৃপক্ষ ছুটি না দেওয়ার ফলে কারখানার টয়লেটে নারী শ্রমিক বাচ্চা প্রসব করেছে। সেখানে বাচ্চা মারা গেছে। অথচ ২০১১ সালে সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাস করা হয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানে এই ঘোষণা কার্যকর থাকলেও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে তা কার্যকর নয়। এই দায় সরকারের। অবিলম্বে এপেক্স কোম্পানীর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের গ্রেফতার করে শাস্তি প্রদান করতে হবে এবং সকল কর্মক্ষেত্রে মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাস কার্যকর করতে হবে।

জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, এই সরকার মালিকগোষ্ঠী ও মাস্তানদের সরকার। তারা মাস্তানদের লালন পালন করছে মালিকগোষ্ঠীকে পাহারা দেওয়ার জন্য। ফলে দেশের সাধারণ জনগণ যত অসুবিধার মধ্যেই থাকুক না কেন, তা নিয়ে তাদের কোনো মাথা ব্যাথা নেই। তাই আজ নারীরা ঘরে থাকুক আর বাইরেই থাকুক তাদের উপর যে সহিংস নির্যাতন ঘটছে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। ঘরে বসে আহাজারি না করে আসুন বাবা- মা- ভাই- বোন সবাইকে নিয়ে লড়াই করি প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলি।

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments