বর্বরোচিত শিশু হত্যা, নারীর প্রতি সহিংসতা রুখে দাঁড়ান – দুর্বৃত্তদের হাত থেকে কোমলমতি শিশুদের রক্ষায় এগিয়ে আসুন
২৪ আগস্ট নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয়ভাবে দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল, তথ্যমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশসহ সমাবেশ করেছে। তারই অংশ হিসাবে ঢাকায় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় । এই বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সভাপতি সীমা দত্ত । সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় বর্ধিত ফোরামের সদস্য আ.ক.ম জহিরুল ইসলাম, নারীমুক্তি কেন্দ্র কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও ইয়াসমিন হত্যার বিচারের দাবীতে গড়ে উঠা আন্দোলনের নেত্রী সুলতানা আক্তার রুবি, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক স্নেহাদ্রি রিন্টু, ঢাকা নগর শাখা ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল চৌধুরী । সভা পরিচালনা করেন নারীমুক্তি কেন্দ্র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মর্জিনা খাতুন।
বক্তারা বলেন, ১৯৯৫ সালের এদিনে পুলিশ কর্তৃক ১৪ বছর বয়সী কিশোরী ইয়াসমিন ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে দিনাজপুরের সাধারণ মানুষ বিচারের দাবিতে রাজপথে নেমে এসেছিল, প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। শাসকগোষ্ঠীর দমনের মুখে পুলিশের গুলিতে সাতজন শহীদ হয়েছিল। ইয়াসমিন হত্যার দাবীতে সেদিনের আন্দোলন দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু আজ শত শত নারী ধর্ষণ-গণধর্ষণ-হত্যা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। পুরো সমাজ দুবৃত্তদের হাতে জিম্মি। মাদারীপরে দু’জন স্কুল ছাত্রীর নৃশংস হত্যাকা-, শিশু রাজন-রাকিব-রবিউলের হত্যাকা-ের বিচার এখনও হয়নি। শাসকশ্রেণী ও পুলিশ প্রশাসনের আশয়-প্রশয়ে হত্যাকরীরা নিরাপদে ঘুরছে। আর সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতা দিন কাটাচ্ছে। শাসকশ্রেণীর এ নিরবতা ও দুর্বৃত্তদের দৌরাত্ব বন্ধে প্রতিটি বিবেকবান মানুষকে আজ রুখে দাঁড়াতে হবে। দিনাজপুরবাসী যেমন করে সেদিন পুলিশ প্রশাসন ও শাসকশ্রেণীর বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল, আজও নারীও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে সকল বিবেকবান মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।
তাই আসুন, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে আওয়াজ তুলি –
১. অবিলম্বে শিশু রাজন-রাকিব-রবিউল এবং বর্ষবরণে যৌন নিপীড়নসহ সারা দেশে নারী নির্যাতনকারীদের অবিলম্বে
গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
২. সর্বত্র নারী ও শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রসহ সকল ক্ষেত্রে যৌনহয়রানি বন্ধ
করতে হবে। হাইকোর্ট প্রণীত যৌন নিপীড়ন বিরোধী নীতিমালা কার্যকর করতে হবে।
৩. অপসংস্কৃতি-অশ্লীলতা বন্ধ করতে হবে। পর্নো পত্রিকা, ব্লু-ফিল্ম, পর্নো ওয়েবসাইট বন্ধ করতে হবে। নাটক-সিনেমা-বিজ্ঞাপনে নারী দেহের অশ্লীল উপস্থাপনা বন্ধ করতে হবে। মাদক ও জুয়া বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
৪. মৌলবাদ-সাম্প্রদায়িকতা, ফতোয়াবাজ এবং ধর্মীয় কূপমন্ডুকতা-কুসংস্কার বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে
৫. সমাজের সর্বক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ইউনিফরম সিভিল কোড চালু করতে হবে। সিডও সনদের পূর্ণ স্বীকৃতি ও বাস্তবায়ন করতে হবে।