Friday, May 3, 2024
Homeসংবাদ ও প্রেস বিজ্ঞপ্তিপার্টি সংবাদপ্রতি বাগানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণসহ শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে

প্রতি বাগানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণসহ শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে

 

for press 2 copy

প্রতি বাগানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ, শিক্ষাবৃত্তি ও‘বিশেষ কোটা’ পদ্ধতি চালুসহ ৫ দফা দাবিতে ২ সেপ্টেম্বর’১৬ শুক্রবার বিকাল ৩টায় সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় কনভেনশন। চা বাগান শিক্ষা অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদের সংগঠক সঞ্জয় কান্ত দাসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কনভেনশনে বক্তব্য রাখেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড.রাশেদ তালুকদার, বংলা বিভাগের সহকারি অধ্যাপক সরকার সোহেল রানা, রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী অনিমেষ বিজয় চেীধুরী, এডভোকেট হুমাযুন রশীদ সোয়েব, এডভোকেট তাপস বন্ধু পাল, ডা.নমিতা দাশ সানী, সাংবাদিক সজল ছত্রী। এছাড়াও কনভেনশনে উপস্থিত ছিলেন বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলা শাখার আহ্বায়ক কমরেড উজ্জ্বল রায়, বিএমএ এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মযনূল ইসলাম, প্রকৌশলী আইয়ুব আলী, মুক্তিযোদ্ধা সুবল পাল, প্রকৌশলী সোহাগ পারভেজ, চা শ্রমিক ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক চা শ্রমিক নেতা হৃদেশ মুদি প্রমুখ। কনভেনশনে ‘কী নোট পেপার’ পাঠ করেন শান্ত বাউরী।

কনভেনশনের শুরু পূর্বে সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজারের বিভিন্ন বাগানের ছাত্র প্রতিনিধিরা মিছিল সহকারে কনভেশন স্থলে এসে উপস্থিত হন। চা বাগানের কনভেনশন সফল করতে গত ১মাস ধরে গোটা চা অঞ্চলে প্রচার প্রচারলণা করেন সংগঠনের সদস্যরা। কনভেনশনে মোট ৩৫টি বাগানের কয়েক শতাধিক ছাত্র প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। কনভেশনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরে একটি পুস্তিকাও প্রকাশ করা হয়।

কনভেনশন বক্তরা বলেন, এদেশে বহু আত্মত্যাগ আর লড়াইয়ের বিনিময়ে স্বীকৃতি পেয়েছে সর্বজনীন শিক্ষার ধারণা। সাধারণভাবে সর্বজনীন শিক্ষার কথা প্রতিষ্ঠিত হলেও গোটা চা অঞ্চলে আজ পর্যন্ত তা কার্যকর হয় নি। শিক্ষার অভাবে চা শ্রমিকরা নিজেদের ভাল,মন্দ, উচিৎ ,অনুচিৎ যেমন বুঝতে পারেন না, তেমননি এই দুর্বলতার সুযোগে তাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে সমস্ত মৌল-মানবিক অধিকার থেকে। ১৫ লক্ষাধিক চা জনগোষ্ঠিকে শিক্ষার ন্যূনতম অধিকার থেকে বঞ্চিত করে ঠেলে দেয়া হয়েছে মানবেতর জীবনে। যতটুকু জানা যায় সারা দেশের ১৬৬টি বাগানের মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে মাত্র ৬টিতে (মতান্তরে১০/১২টি), আর মাধ্যমিক স্কুল আছে ৩টিতে। চা বাগানের একজন ছাত্র যদি কোনক্রমে প্রাথমিক পর্যায় শেষ করতেও বা পারে কিন্তু মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষা গ্রহণ তার কাছে পাহাড় কাটার মত ব্যাপার। একে তো বাগানে মাধ্যমিক স্কুলই নেই, তার উপর আবার বাগানের ৫/১০ কি.মি. মধ্যে যে স্কুলগুলো আছে তার প্রায় সবগুলোই বেসরকারি। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর ভর্তি ফি, মাসিক বেতন, পরীক্ষা ফি, তো আছেই, এর সাথে বই, খাতা, কলম, স্কুল ইউনিফর্ম, বাধ্যতামূলক কোচিং ফি দিয়ে শিক্ষা জীবন চালিয়ে যাওযা শুধু কঠিন নয়, প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এরই মধ্যেই অদম্য ইচ্ছা শক্তির উপর ভর করে কিছু ছাত্র পড়াশোনা করে। এদের প্রায় সবাই ছুটির দিনে বা কখনও কখনও স্কুল বাদ দিয়ে সাধ্য অনুযায়ী বাগান বা আশপাশের এলাকায় কাজ করে। আর এই উপার্জনের পয়সা দিযে চলে শিক্ষা অর্জন। ফলে মাধ্যমিকের কোটা শেষ হবার আগেই শেষ হয়ে যায় তাদের শিক্ষা জীবন। এই অবস্থায় চা বাগানের শিক্ষার সমস্যা শুধুমাত্র কিছু আবেদন নিবেদন কিংবা কিছু ব্যাক্তির ব্যাক্তিগত সহযোগিতার দ্বারা সমাধান সম্ভব নয়। এই সমস্যার মূলে রয়েছে আমাদের সামাজিক ব্যবস্থা, সমাজ পরিচালনার দৃষ্ঠিভঙ্গি। তাই রাষ্ট্রীয় আয়োজন ব্যতিরেকে চা বাগানের শিক্ষার সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়,কিন্তু আশু সমাধান হিসেবে শিক্ষাবৃত্তি ও শিক্ষা উপকরণ বিনামূল্যে চালু এবং বিশেষ কোটা পদ্ধতি চালু করা খুবই যৌক্তিক।

বক্তারা প্রতি চা বাগানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণসহ ৫দফা দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে সকলকে আহবান জানান।

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments