Monday, December 30, 2024
Homeসংবাদ ও প্রেস বিজ্ঞপ্তিপার্টি ও সংগঠন সংবাদফ্যাসিবাদী শাসনকে দীর্ঘায়িত করতে ভারতের সাথে জাতীয় স্বার্থ বিরোধী চুক্তি করা হয়েছে

ফ্যাসিবাদী শাসনকে দীর্ঘায়িত করতে ভারতের সাথে জাতীয় স্বার্থ বিরোধী চুক্তি করা হয়েছে

DSC_0195

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে ১২ জুন ২০১৫ বিকাল ৪ টায় সিলেট সিটি কর্পোরেশন সম্মেলন কক্ষে কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়। বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলা শাখার আহ্বায়ক কমরেড উজ্জ্বল রায়ের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কর্মীসভায় প্রধান আলোচক হিসাবে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সংগ্রামী সাধারণ সম্পাদক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী।

কর্মীসভায় কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী বলেন, গত ৫ জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে মহজোট সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে। গণতান্ত্রিক সমস্ত দাবিকে উপেক্ষা করে গায়ের জোরে দেশি-বিদেশী লুটেরা গোষ্ঠির স্বার্থে ক্ষমতায় টিকে আছে। ‘কম গণতন্ত্র আর বেশি উন্নয়নের বুলি’ আউরে মহাজোট সরকার জন জীবনের নাভিশ্বাস তুলেছে। আইন শৃংঙ্খলা পরিস্থিতির চরম আবনতি, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের উর্ধ্ব গতি, খুন-গুম, নারী নির্যাতন, কাজ দেয়ার নামে শ্রমিকদের নিয়ে প্রায় দাস ব্যাবসা এবং সম্প্রতি গণবিরোধী বাজেটের মাধ্যমে সরকার জন জীবনের সংকটের মাত্রাকে বাড়িয়ে তুলেছে। আর এই অনিশ্চিত অবস্থায় সরকার সকল ধরনের শক্তিকে কেন্দ্রীভূত করে দেশে চূড়ান্ত ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত করেছে। যে কারণে রাজনৈতি সভা-সমাবেশসহ মত প্রকাশের সকল গণতান্ত্রিক রীতিনীতির উপর পুলিশী দমন-পীড়ন প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। আর সরকারের এই ফ্যাসিবাদী তৎপরতাকে ভারত সরকার নির্লজ্জ সমর্থন দিয়ে গোটা বিশ্বের গণতান্ত্রিক মানুষকে হতবাক করেছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দু’দেশের সুসর্ম্পকের কথা বলে এদেশে আসলেও বাস্তবে তা বাংলাদেশের স্বার্থকে বিপন্ন করেছে। দীর্ঘ দিন থেকে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর উজানে ভারতের টিপাই মুখ নামক স্থানে বাধঁ নির্মানের আয়োজন করে সিলেট অঞ্চলের প্রাণ ও প্রকৃতিকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে ভারতীয় শাসক গোষ্ঠি। আন্তর্জাতিক সকল নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে ভারত সরকার একতরফা ভাবে টিপাই বাঁধ নির্মাণের সকল আয়োজন নিশ্চিত করতে চাইছে। অথচ দু’দেশের জনগণ এবং গণতান্ত্রিক শক্তির আন্দোলনের মুখে এখন পর্যন্ত টিপাই বাঁধের সম্পূর্ণ আয়োজন নিশ্চিত করতে পারে নি। শুধু কি টিপাই বাধঁ, ইতিমধ্যে ভারত থেকে আসা ৫৪টি নদীর মধ্যে ৫১টি নদীর উজানে বাধঁ নির্মাণ করেছে ভারত সরকার। আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পের নামে ব্রক্ষ্মপুত্র নদীর পানি প্রত্যাহার,এমনকি বাংলাদেশের মানুষের জীবন মরণের সমস্যা তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যাও বাংলাদেশ পাচ্ছে না।ভারতের শাসক শ্রেণীর নতজানু হয়ে বর্তমান মহাজোট সরকার দেশে একটি চরম ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করেছে। যার ফলে ভারতের সাথে লুটেরা পুজিঁপতি শ্রেণীর স্বার্থে আমাদের জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলী দিয়ে আনেকগুলি চুক্তি করেছে।

অপর দিকে, স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর সীমান্ত ও ছিট মহল সম্যস্যা সমাধাণ করে আজ বাহবা নিচ্ছে মহাজোট সরকার,কিন্তু বি.এস.এফ কর্তৃক সীমান্তে নির্বিচারে বাংলাদেশের মানুষ হত্যা তো নিত্য দিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে। আর এর বিনিময়ে এখন ভারত বাংলাদেশের উপর দিয়ে পন্য এবং সৈন্য যাতায়াতের জন্যে করিডোর চুক্তি করেছে, যা আমাদের দেশের সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলবে। আবার আমাদের দেশের শাসক গোষ্ঠি রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে পরিকল্পীতভাবে ধ্বংস করে দিয়ে বিদ্যুতের জন্যে ভারতের কাছে মুখাপেক্ষী হয়েছে,ইতিমধ্যে ভারতের স্বার্থে সুন্দরবন ধ্বংস করে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের অপতৎপরতায় তারা লিপ্ত। বিদ্যুৎখাতে ভারতের কাছে এই আত্মসমর্পণ বাংলাদেশের সামগ্রীক উন্নয়নের জন্যে মারাত্বক হুমকি হয়ে দাড়াঁবে। আর বৈষম্যমূলক বানিজ্যীক নীতি বহাল রেখে দু’টি দেশের মধ্যে বন্ধুত্বমূলক সম্পর্ক কখনই তৈরি হবে না।

কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী জনগণের ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলনের মাধ্যমে বংলাদেশের শাসক গোষ্ঠির নতজানু পররাষ্ট্র নীতি এবং ভারতসহ সকল সাম্রাজ্যবাদী শক্তির অপতৎপরতা প্রতিহত করার আহবান জানান।

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments