গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দমন-নির্যাতনের স্বৈরতান্ত্রিক পথে এবং গোটা নির্বাচনী ব্যবস্থাকে তছনছ করে দিয়ে আওয়ামী মহাজোট সরকার গণতান্ত্রিক ধারায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে নিয়মতান্ত্রিক পথে প্রতিনিধি নির্বাচন ও সরকার পরিবর্তনের পথকে অসম্ভব করে তুলেছে। আর বিগত বছরগুলোর অভিজ্ঞতা প্রমাণ করেছে যে বর্তমান সরকার তথা কোন দলীয় সরকারের অধীনে কোন নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই গণতান্ত্রিক পরিবেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী ব্যবস্থা ছাড়া জনগণের ভোটাধিকার যেমন নিশ্চিত হবে না, তেমনি অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোন অবকাশ নেই।
১৫ জুলাই ২০১৭ ঢাকার তোপখানা রোডে কমরেড নির্মল সেন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সমম্মেলনে আরো বলা হয়, বিএনপির জামাতিকরণের সাথে পাল্লা দিয়ে সরকারি দলেরও এক ধরনের মৌলবাদীকরণ চলছে। কথিত ভোটকেন্দ্রীক সমীকরণ থেকে সরকার সাম্প্রদায়িকতাকে মদদ দিয়ে চলেছে, ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতিকে তাদের এক গুরুত্বপূর্ণ অবলম্বনে পরিণত করেছে। ধর্মান্ধ জঙ্গীবাদি অপতৎপরতার মুলোৎপাটনের চেয়ে তাকে রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির কাজে লাগাতেই তারা ব্যতিব্যস্ত।
দেশে আইনের শাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সরকার যা খুশী তাই করে চলেছে। রাষ্ট্র ও সংবিধানের চরম অগণতান্ত্রিক ক্ষমতাকাঠামো সরকারকে স্বৈরতন্ত্রী করে তুলেছে। সরকারের ফ্যাসিবাদী তৎপরতা নতুন বৈশিষ্ট্য নিয়ে হাজির হয়েছে। রাষ্ট্রীয় ফ্যাসিবাদকে ক্রমান্বয়ে আরো সংহত ও জোরদার করে প্রাতিষ্ঠানিক চরিত্র প্রদান করা হচ্ছে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সরকারের ইচ্ছা পূরণের বাহনে পরিণত করা হচ্ছে। উন্নয়নের কথা বলে গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক অধিকার, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও সুশাসনকে বিদায় করে দেয়া হয়েছে।
এইসব সংকটের উৎস শোষণ, বৈষম্য ও নিপীড়নমূলক বিদ্যমান চরম অগণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, সংবিধান এবং লুটেরা-দুর্বৃত্ত শাসকশ্রেণী ও তাদের সরকারসমূহের দমনমূলক একনায়কত্ব। এই অবস্থায় সবচেয়ে বেশী বিপদে দেশ, জনগণ ও জনগণের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যত। বিদ্যমান চরম অগণতান্ত্রিক শাসন, ফ্যাসিবাদ মোকাবেলা এবং গণআন্দোলন-গণসংগ্রামের পথে রাজনৈতিকভাবে এই দুঃশাসনকে পরাজিত করতে না পারলে দেশ ও জনগণ কেবল আরো সর্বনাশের দিকে এগিয়ে যাবে; বাংলাদেশ পুরোপুরি একটি চরম অগণতান্ত্রিক, দমনমূলক, সাম্প্রদায়িক প্রতিক্রিয়াশীল রাষ্ট্রে পরিণত হবে; দেশ ও জনগণের অপার সম্ভাবনা ধ্বংস করে পরিবার, গোষ্ঠি, দল ও শোষক-লুটেরা ধনীকশ্রেণীর ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থাই কেবল দীর্ঘস্থায়ী হবে। বিএনপি জোট এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যর্থ; তাদের রাজনীতিও এর বাইরে কিছু নয়। এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে ভোটাধিকার, গণতান্ত্রিক নির্বাচনী ব্যবস্থাসহ জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করতে এবং বিদ্যমান ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান ঘটাতে মহাজোট- জোটের অপরাজনীতি প্রত্যাখান করে জনগণের নিজস্ব শক্তি সমাবেশ জোরদার করতে হবে। বাম-প্রগতিশীল-গণতান্ত্রিক দেশপ্রেমিক শক্তিকেই জনগণের ভরসার স্থল হয়ে উঠতে হবে।
এই পরিস্থিতে মোর্চার সমন্বয়ক মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যে জনগণের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, সরকার ও সংবিধান প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন জোরদার করতে বাম-প্রগতিশীল-গণতান্ত্রিক-অসাম্প্রদায়িক শক্তি ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক দল ও জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানানো হয় এবং গণআন্দোলন-গণসংগ্রাম বিকশিত করতে নিম্নোক্ত আশু দাবিসমূহ পেশ করা হয় –
১) সভা, সমাবেশ, মিছিল, বিক্ষোভ, ধর্মঘট ও স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের অধিকারসহ জনগণের জীবন-জীবিকার গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করুন। গণমাধ্যম ও বিচার বিভাগসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে
২) সংবিধানের ৭০ এ ধারা বাতিলসহ প্রধানমন্ত্রীর এককেন্দ্রীক নির্বাহী ক্ষমতাসহ সংবিধানের স্বৈরতান্ত্রিক, সাম্প্রদায়িক, জাতিস্বত্ত্বাবিরোধী সকল বিধান বাতিল ও সংবিধানের গণতন্ত্রায়ন করতে হবে। সাংবিধানিক কমিশনের মাধ্যমেই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহের নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। ৫৪ ধারা, ৫৭ ধারা, তথ্য প্রযুক্তি আইন, জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা, নিবর্তনমূলক ও অগণতান্ত্রিক সকল আইন, কালাকানুন ও ধারা বাতিল করতে হবে
৩) জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। নির্বাচনে সন্ত্রাস, পেশীশক্তি, টাকার খেলা, সাম্প্রদায়িকতা, দলীয়করণ ও প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। সংসদ নির্বাচনে ভোটের আনুপাতিক হারে প্রতিনিধি নির্বাচনের বিধান চালু করতে হবে
৪) দমন-পীড়ন, অপহরণ, গুম-খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড সহ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। স্বাধীন কমিশন গঠনের মাধ্যমে প্রতিটি বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের গ্রহণযোগ্য তদন্ত, অপরাধীদের চিহ্নিত ও তাদের আইনানুগ বিচার নিশ্চিত করতে হবে। পুলিশী ক্ষমতার অপপ্রয়োগ, গণগ্রেফতার, পুলিশের গ্রেফতার বাণিজ্য ও রিমান্ডের নামে মানসিক-শারীরিক নির্যাতন অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দায়ের করার সকল হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে
৫) ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুসহ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এপর্যন্ত সংঘটিত সাম্প্রদায়িক হামলা-আক্রমণের ঘটনাসমূহের নিরপেক্ষ তদন্ত করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ধর্মীয় ও জাতিগত ভিন্নতার কারণে নাগরিকদের মধ্যে বৈষম্য পুরোপুরি পরিহার করতে হবে। ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ভূমি, ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষা করতে হবে
৬) ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পারিবারিকীকরণ, অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি ও লুটপাট কঠোরভাবে বন্ধ করতে হবে। ব্যাংক, শেয়ার মার্কেটসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চুরি, দুর্নীতি ও লুটপাটের হোতাদের চিহ্নিত করে তাদের গ্রেফতার, লুটপাট ও পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারে জরুরী ভিত্তিতে কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান পরিচালনা পদ্ধতির পরিবর্তে জবাবদিহিমূলক পরিচালনা পদ্ধতি চালু করতে হবে। খেলাপী ঋণ উদ্ধারে প্রয়োজনে তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তসহ কার্যকরি পদক্ষেপ নিতে হবে। দুর্নীতি দমন কমিশনকে আমূল সংস্কার করে কার্যকরি প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে হবে
৭) বেতন কমিশনের সাথে সংগতি রেখে অবিলম্বে মজুরী কমিশন গঠন কর এবং শ্রমিকদের ন্যূনতম জাতীয় মজুরী ১৬ হাজার টাকা নির্ধারণ করতে হবে। শ্রমিক-কর্মচারীদের অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত ও গণতান্ত্রিক শ্রম আইন প্রণয়ন করতে হবে। গ্রাম-শহরে শ্রমজীবী মেহনতিদের জন্য রেশনিং এর ব্যবস্থা চালু করতে হবে
৮) চালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি রোধ করতে হবে। কালো বাজারী, অসৎ সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির মূল্যবৃদ্ধির অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে। বাসা ভাড়া-পরিবহন ভাড়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে
৯) ধানসহ কৃষিপণ্যের লাভজনক মূল্য নিশ্চিত করতে হবে। নগরায়ন ও উন্নয়নের আবাদি কৃষি জমির ধ্বংস বন্ধ কর। ভূমিগ্রাসী দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। বানভাসী হাওরের কৃষকদের উপযুক্ত পুনর্বাসন করতে হবে। জলমহাল ও হাওরকে মুক্ত ঘোষণা করে মৎস্যজীবী, ভূমিহীন ও গরীবদের মাছ ধরার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। বন্যা কবলিত অঞ্চলসমূহে অবিলম্বে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছানো এবং প্রয়োজনীয় পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে। খেতমজুরদের সারা বছর কাজ নিশ্চিত করতে হবে
১০) বেকারদের উপযুক্ত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। মানব পাচারের সাথে যুক্ত সি-িকেট হোতাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবেকরতে হবে। অভিবাসী শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরী, নিরাপত্তাসহ তাদের গণতান্ত্রিক ও মানবিক অধিকার রক্ষায় উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে
১১) যৌন নিপীড়ন ও নারীর লাঞ্চনা-অপমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যৌন নিপীড়ন বিরোধী আইন যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। নারীর উপর শ্রেণী ও পুরুষতান্ত্রিক শোষণ-নিপীড়ন অবসানে নারীর গণতান্ত্রিক অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে
১২) বৈষম্যমূলক বর্তমান শিক্ষানীতি বাতিল করে একই ধারার সার্বজনীন, বিজ্ঞানভিত্তিক, গণতান্ত্রিক, সেক্যুলার শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে হবে। শিক্ষার বাণিজ্যিকরণ বন্ধ করতে হবে। শিক্ষা মান উন্নয়নে কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে
১৩) বিরাজমান মুনাফাকেন্দ্রীক গণবিরোধী চিকিৎসা ব্যবস্থার অবসান, চিকিৎসা ব্যবস্থার সম্প্রসারণ করে সকল নাগরিকের উপযুক্ত চিকিৎসা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে
১৪) সুন্দরবন ধ্বংসকারী রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎপ্রকল্প অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ স্থগিত করতে হবে করতে হবে। তেল, গ্যাস, কয়লাসহ প্রাকৃতিক ও জাতীয় সম্পদের উপর জনগণের শতভাগ মালিকানা নিশ্চিত করতে হবে। জাতীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্স- পেট্রোবাংলার ক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে হবে
১৫) দেশের রাজনীতি-অর্থনীতিতে ভারত-মার্কিনসহ সা¤্রাজ্যবাদী-আধিপত্যবাদী শক্তির হস্তক্ষেপ প্রতিরোধ করতে হবে। সমতা, ন্যায্যতা ও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী তিস্তার পানিসহ ভারতের সাথে অমীমাংসিত সমস্যাসমূহের সমাধান করতে হবে। মাদক পাচার, সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশীদের হত্যাকা- বন্ধ করতে হবে। ভারত-মার্কিনসহ বিদেশীদের সাথে স্বাক্ষরিত জাতীয় স্বার্থ পরিপন্থী সকল অসম চুক্তি বাতিল করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে উপরোক্ত রাজনৈতিক অবস্থান, আহ্বান ও সুনির্দিষ্ট আশু দাবিনামার ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা আন্দোলন বিকশিত ও জোরদার করার উদ্যোগ গ্রহণ করবে এবং পাশাপাশি সিপিবি-বাসদসহ বাম প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক শক্তিসমূহের সাথেও ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার প্রচেষ্টা নেবে বলে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন মোর্চার কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। উপস্থিত ছিলেন বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নেতা শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক, মোর্চার কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, বহ্নিশিখা জামালী, মানস নন্দী, শহীদুল ইসলাম সবুজ, আকবর খান প্রমুখ।