সদ্যঘোষিত জাতীয় বাজেট প্রত্যাখ্যান করে এবং রমজান মাসকে অজুহাত করে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধ করার দাবিতে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার উদ্যোগে ৫ জুন রবিবার বিকাল ৫টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়ক ও বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা মানস নন্দীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মোর্চার কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা শহিদুল ইসলাম সবুজ, বাসদ(মাহবুব) এর ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ইয়াসিন মিয়া, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক প্রমুখ। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল পল্টন এলাকা প্রদক্ষিণ করে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, অতীতের ধারাবাহিকতায় এ বাজেটেও সাধারণ জনগণের স্বার্থ রক্ষা হবে না। এবারের বাজেটেও জনপ্রশাসন ও প্রতিরক্ষা খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ ধরনের অনুৎপাদনশীল প্রশাসনিক ব্যয়ের বিপুল বৃদ্ধি শ্বেতহস্তী পোষার শামিল। এবারেও উপেক্ষিত হয়েছে জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট খাত। যে কৃষক বাজেটের রাজস্ব আয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে সে কৃষকের ফসলের ন্যায্য মূল্য পাওয়া,কৃষি উপকরণের মূল্যবৃদ্ধি রোধের ব্যবস্থা করাসহ খোদ কৃষকের কাছে বরাদ্দ পৌছে দেওয়ার জন্য কৃষি বাজেটে পর্যাপ্ত বরাদ্দ নেই।
তারা আরো বলেন, অনির্বাচিত এ সরকারের জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা না থাকায় জনজীবনের জলন্ত সমস্যা সমাধানের কোনো পদক্ষেপ এ বাজেটে নেই। বরং ভ্যাটের আওতা ও হার বৃদ্ধি, মালিকদের পণ্যের দাম নির্ধারণের অবাধ সুযোগ সৃষ্টির ফলে মূল্যবৃদ্ধি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়বে। অন্যদিকে গার্মেন্টস মালিকদের জন্য কর্পোরেট কর কমানো হয়েছে। কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়েছে। বিদেশে অর্থ পাচার বন্ধের ব্যবস্থা নেই, ব্যাংক-শেয়ারবাজার লুটের বিচার ও খেলাপী ঋণ উদ্ধারের উদ্যোগ নেই। অথচ অভ্যন্তরীণ ঋণের মাধ্যমে বাজেটের ঘাটতি পূরণ জনগণের উপর নতুন বোঝা চাপানো ও লুটপাটকারীদের ছাড় দেয়ার সামিল।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার সেতু-ফ্লাইওভার নির্মাণসহ মেগা প্রকল্পের নামে যে বিপুল বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছে তাতে একদিকে মেগা দুর্নীতি যুক্ত। অন্যদিকে তথাকথিত উন্নয়নের নামে কয়লাভিত্তিক, পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ পরিবেশ ও জীবন-জীবিকা ধ্বংস ধ্বংসকারী গণবিরোধী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য স্থায়ী শিল্পের ভিত্তি গড়ে না তুলে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নামে দেশী-বিদেশী লুটপাটের আয়োজন করা হচ্ছে।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ রোজার মাসকে সামনে রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম অযৌক্তিকভাবে বৃদ্ধির বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, এজন্য মুনাফালোভী কালোবাজারি ব্যবসায়ী সি-িকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান টিসিবি-র মাধ্যমে ন্যায্য দামে ব্যাপক পরিমাণে পণ্য সরবরাহ এবং দীর্ঘমেয়াদে রেশন ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানান।