বাল্য বিবাহ রোধের নামে বিবাহের বয়স কমানোর চেষ্টা শাসক শ্রেণীর প্রতিক্রিয়াশীল মানসিকতার প্রকাশ
নারী- শিশুর ওপর সকল ধরণের নির্যাতন এবং বাল্য বিবাহ রোধের নামে বিয়ের বয়স কমানোর প্রতিবাদে ১৭অক্টোবর ২০১৪ বিকাল ৪ টায় সিলেট সিটি পয়েন্টে নারী মুক্তি কেন্দ্রের উদ্যোগে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশের পূর্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিন করে কোর্ট পয়েন্টে সমাবেশে মিলিত হয়।
নারী মুক্তি কেন্দ্র সিলেট জেলার সংগঠক তামান্না আহমেদের সভাপতিত্বে এবং ইশরাত রাহী রিসতার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটি সিলেট জেলার সদস্য এডভোকেট হুমায়ুন রশীদ সোয়েব, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সিলেট নগর শাখার সাধারন সম্পাদক রুবাইয়াৎ আহমেদ, নারী মুক্তি কেন্দ্র সিলেট জেলার সদস্য লক্ষী পাল প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, নারীরা আজ কোথাও নিরাপদ নয়, কর্মস্থলে, বাসে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমনকি নিজ পরিবারেও নারী নির্যাতিত। হত্যা, ধর্ষণ, খুন, নির্যাতন এগুলো পত্র-পত্রিকার নিত্য- নৈমত্তিক খবর। অথচ সরকার এ ব্যাপারে নির্বাক। সম্প্রতি সিলেটের ছালিয়ায় ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রীর উপর নির্মম নির্যাতন, পাত্র সম্প্রদায়ের নারীকে সেনা সদস্য ও শাহজালালের মাজারে আশ্রিত নারীকে পুলিশ সদস্য কর্তৃক ধর্ষণ কিংবা হাতিম আলী স্কুলের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রীকে শ্রেণী কক্ষে নির্যাতনের ঘটনা সমূহ পরিস্থিতি যে কত ভয়াবহ তা প্রমান করে। একের পর এক এই ধরণের ঘটনা সংগঠিত হলেও কোন ঘটনারই যথাযথ বিচার হয় নি, আবার জনতার চাপে পরে যাদেরও বা বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে তারা আইনের নানা সীমাবদ্ধতায় ধরা ছোঁয়ার বাহিরে থেকে যাচ্ছে। আর পত্র-পত্রিকা, বিজ্ঞাপন, নাটক-সিনেমায় নারীদের উপস্থাপন করা হচ্ছে পন্য রূপে, ফলে সমাজ মননে গড়ে উঠছে বিকৃত মানসিকতা। এই পরিস্থিতিতে যেখানে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া দরকার ছিল, সেখানে সরকার পরিচয় দিচ্ছে পশ্চাৎপদ মানসিকতার। বাল্য বিবাহ রোধের নামে সরকার বিয়ের বয়স ছেলেদের ক্ষেত্রে ১৮ এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৬ করার চেষ্টা করছে, যা প্রতিক্রিয়াশীলতারই নামান্তর। বক্তারা নারী ও শিশুর উপর সকল ধরণের নির্যাতনের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানান।