ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন ও বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের সংগ্রামী স্মৃতি বিজড়িত পাহাড়তলী ইউরোপিয়ান ক্লাব রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রশাসনিক প্রয়োজনে সংস্কারের নামে ঐতিহ্য ধ্বংস করার যে পাঁয়তারা চলছে তা বন্ধের দাবিতে বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র, সামজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ও চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র চট্টগ্রাম জেলা শাখার আয়োজনে ৪ সেপ্টেম্বর সকাল ১১ টায় ভাস্কর্য প্রাঙ্গনে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি পপি চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন প্রগতিশীল চিকিৎসক ফোরামের আহবায়ক ডাঃ সুশান্ত বড়ুয়া, বাসদ(মার্কসবাদী) চট্টগ্রাম জেলার নেতা রফিকুল হাসান, বীরকন্যা প্রীতিলতার ৮০ তম আত্মহুতি দিবস উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব নারীমুক্তি কেন্দ্রের সহসভাপতি জান্নাতুল ফেরদাউস পপি, এডভোকেট বিশুময় দেব, শিক্ষক অধ্যক্ষ নাসিমা সিরাজী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নগর সভাপতি তাজনাহার রিপন, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সংগঠক মেজবাহ উদ্দিন এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ স¤পাদক আরিফ মঈনুদ্দীন।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন “১৯৩২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর মাস্টারদা সূর্যসেনের নির্দেশে বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের নেতৃত্বে বিপ্লবীরা পাহাড়তলীস্থ ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমন করেন এবং আক্রমণ শেষে প্রীতিলতা ক্লাবের সম্মুখে শহীদি আত্মোৎসর্গ করেন। প্রীতিলতা বিপ্লবী আন্দোলনের প্রথম নারী শহীদ। পাহাড়তলী ইউরোপিয়ান ক্লাব এই কারনে আমাদের সংগ্রামী ইতিহাসের অংশ। অথচ দুঃখজনক বিষয়, জাতির এই ঐহিত্য সংরক্ষণ না করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন এটি বিভাগীয় প্রকৌশলী কার্যালয় হিসাবে ব্যবহার করছে। বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র, সামজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ও চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সহ চট্টগ্রাম বাসির দীর্ঘদিনের দাবি পাহাড়তলী ইউরোপীয়ান ক্লাবকে স্মৃতি জাদুঘর হিসাবে সংরক্ষণ করা হউক। আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ২০১২ সালে তৎকালীন রেলওয়ের জি.এম. প্রতিশ্রুতি দেন ইউরোপীয়ান ক্লাবকে স্মৃতি জাদুঘরে রুপান্তর করার জন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নেবেন। অথচ এখন প্রশাসনিক প্রয়োজনে সংস্কারের নামে ইউরোপিয়ান ক্লাব ধ্বংস করার পাঁয়তারা চলছে। ইতিমধ্যে সংস্কার কাজের নামে পুরণো কাঠগুলো তুলে ফেলেছে। এই সংস্কার এই ভবনের ঐতিহ্যকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করবে।”
নেতৃবৃন্দ বলেন, “অবিলম্বে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এই অপতৎপরতা বন্ধ না করলে চট্টগ্রামবাসীকে সাথে নিয়ে কঠোর আন্দোলন করা হবে।” নেতৃবৃন্দ পাহাড়তলী ইউরোপিয়ান ক্লাবকে প্রীতিলতা স্মৃতি জাদুঘর হিসাবে সংরক্ষণ করার জোর দাবি জানান।
সমাবেশ শেষে একটি মিছিল ইউরোপিয়ান ক্লাব এলাকা প্রদক্ষিণ করে।