ভারতবর্ষ এবং বাংলাদেশ অবিভক্ত ভারতের একই স্বাধীনতা আন্দোলনের অংশীদার। আমাদের দেশে যখন স্বাধীনতার কথা ঊঠেছিলো তার প্রধান কারণ ছিলো সাধারণ মানুষের দুরবস্থা থেকে উত্তরণ, বিদেশি শাসন-শোষণ থেকে উদ্ধারের আন্দোলন। দাবি ছিলো শিক্ষার অধিকারের। সর্বজনীন গণতান্ত্রিক শিক্ষার দাবি উঠেছিলো। বিদ্যাসাগর বলেছিলেন, পুরাতন মানুষের নয়, নতুন মানুষের চাষ করতে হবে। নতুন যুগের উপযোগী মানুষ তৈরি করতে হবে। বিদ্যাসাগরের সাথে ইংরেজদের তর্ক হয়েছিলো। ইংরেজরা টোলে-মাদ্রাসায় তাদের প্রয়োজনীয় শিক্ষা দিতে চেয়েছিলো। কিন্তু নবজাগরণের মহান মনীষীরা তা মেনে নেননি। লড়াই করেছেন।
আজও ভারতবর্ষের সাধারণ মানুষের অনেক অধিকার আদায় হয়নি। শিক্ষার অধিকারও আদায় হয়নি। সরকার তাদের দায়িত্ব পালন করেনি, বৈজ্ঞানিক শিক্ষার পরিবর্তে কারিগরি শিক্ষার প্রসার করছে, সত্যিকারের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করছে। সাম্প্রদায়িক শক্তি প্রবলভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। আমাদের দেশে মুক্ত স্বাধীনচিন্তার মানুষ যারা তাদের নির্মমভাবে হত্যা করা হচ্ছে।
ভারতবর্ষেও যথেষ্ট সংখ্যক স্কুল-কলেজ নেই। প্রাথমিক শিক্ষার অবস্থা খুব খারাপ। ছাত্রদের ন্যূনতম শিক্ষার আয়োজন নেই। পূর্ণ শিক্ষক নিয়োগ করা হচ্ছে না। ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত পাশ-ফেল পদ্ধতি তুলে দিয়েছে। আমরা এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি। পিপিপি’র বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি। বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ‘ড্রপ আউট’ হচ্ছে। এই অবস্থা চলছে। এই প্রতিকূল পরিস্থিতির বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে হলে প্রয়োজন সঠিক রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি। মার্কসবাদ-লেনিনবাদ-কমরেড শিবদাস ঘোষের চিন্তাধারা হলো সেই দৃষ্টিভঙ্গি।