মহান নভেম্বর বিপ্লবের শিক্ষায় পুঁজিবাদ-সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রাম জোরদার করুন — কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী
মহান রুশ বিপ্লবের ৯৮তম বার্ষিকী ও পার্টির ৩৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বাসদ (মার্কসবাদী) রংপুর জেলা শাখার উদ্যোগে ৯ নভেম্বর ২০১৫ বিকাল ৪ টায় স্থানীয় পায়রা চত্বরে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। দলের রংপুর জেলা সমন্বয়ক কমরেড আনোয়ার হোসেন বাবলু’র সভাপতিত্বে জনসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী।
জনসভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কমরেড মঞ্জুর আলম মিঠু, বাসদ (মার্কসবাদী) রংপুর জেলা কমিটির সদস্যা কমরেড পলাশ কান্তি নাগ।
জনসভায় প্রধান বক্তা কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী বলেন, শোষণমূলক পুঁজিবাদী ব্যবস্থা বিশ্বের সর্বত্র ‘১% সুবিধাভোগী ও ৯৯% বঞ্চিত’ মানুষের মধ্যে পাহাড়প্রমাণ বৈষম্যের জন্ম দিয়ে চলেছে। তথাকথিত উন্নত দেশগুলোতেও রাষ্ট্রীয় ব্যয় সংকোচনের নামে জনগণের সামাজিক কল্যাণমূলক সুবিধা কেড়ে নেয়া হচ্ছে। আমাদের দেশের চিত্রও আলাদা নয়। জনপ্রতিনিধিত্বহীন মহাজোট সরকার বলছে গণতন্ত্র বড় কথা নয়, তারা এত উন্নয়ন করছেন যে বাংলাদেশ ‘মধ্য আয়ের দেশ’-এ পরিণত হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির নামে রেন্টাল-কুইক রেন্টাল প্ল্যান্ট করে বিদ্যুৎ ব্যবসায়ীদের পকেট ভরা হচ্ছে। উন্নয়নের নামে সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্র ভারতের স্বার্থে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে সুন্দরবন ধ্বংসের ঝুঁকি তৈরি করছে। কৃষকরা ফসলের দাম না পেয়ে রাস্তায় ধান-আলু ফেলে প্রতিবাদ করছে। গার্মেন্টস শিল্পের আয় বাড়ছে, কিন্তু শ্রমিকরা মানুষের মতো বাঁচার উপযোগী মজুরি পাচ্ছে না। অন্যদিকে মুক্তচিন্তাবিরোধী উগ্র প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠি একের পর এক হত্যাকান্ড ঘটাচ্ছে কিন্তু সরকার নির্বিকার। ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন, বিচরহীনতার সংস্কৃতি বহাল রেখে জনগণের নিরাপত্তা বিধান করা সম্ভব নয়। অতীতের বিএনপি-জামাত জোট সরকারের মত এই সরকারের কাছেও যে দেশ, জনগণ ও জাতীয় সম্পদ নিরাপদ নয় তা অত্যন্ত পরিস্কার। ফলে, পুঁজিবাদ-সাম্রাজ্যবাদ যে অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংকটের মধ্যে মানবজাতিকে নিক্ষিপ্ত করেছে, তার বিরুদ্ধে লড়াই করা ছাড়া মনুষ্যত্ব নিয়ে বাঁচা যাবে না। সমাজতন্ত্রই মানুষের মুক্তির একমাত্র পথ – নভেম্বর বিপ্লব ও তার পরবর্তী অভিজ্ঞতা তাই প্রমাণ করে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বামপন্থীদের নেতৃত্বে জনজীবনের সংকট নিয়ে গণআন্দোলনের পথেই জনগণের পক্ষের রাজনৈতিক শক্তিকে বিকশিত করতে হবে।
এর আগে ব্যানার, ফেস্টুন ও লাল পতাকা সম্বলিত একটি বর্নাঢ্য ও সুসজ্জিত র্যালি নগরীর প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।