আসউইজ ক্যাম্প মুক্ত হওয়ার ৭০ বছর পূর্তিতে বললেন সেদিনের এক বন্দি
পোল্যান্ডের আসউইজ কনসেনট্রেশন ক্যাম্প। নাৎসী বাহিনীর ভয়াবহ নৃশংসতার সাক্ষী এই ক্যাম্পটি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলারের নাৎসী বাহিনী এই ক্যাম্পেই ১১ লক্ষ ইহুদীকে হত্যা করে। ১৯৪৫ সালের ২৭ জানুয়ারি এই ক্যাম্পে যখন লালফৌজের ৩২২তম রাইফেল ডিভিশন প্রবেশ করে, তখন শত শত মৃতদেহ পড়ে আছে মেঝেতে, সাড়ে সাত হাজার বন্দি মৃত্যুর প্রহর গুণছে। তারা জানত, তাদের বাঁচার আর কোনো পথ খোলা নেই। শুধু কখন মরবে, এর অপেক্ষামাত্র।
কিন্তু লালফৌজ তাদের জীবন দিল। আসউইজ ক্যাম্প যখন লালফৌজ মুক্ত করে তখন এর সাড়ে সাত হাজার বন্দি আবেগে আপ্লুত, আনন্দে বিহব্বল। এরা কারা এই মৃত্যুপুরীতে জীবনের বার্তা নিয়ে এলো? এ যেন রূপকথা!
আবেগে মথিত লালফৌজও। সেদিন পলা লেভোবিকসের বয়স ছিল ১১ বছর। এক কিশোরী বন্দি। সে জানত সে আর বড় হবে না। কৈশোরেই নিভে যাবে তার জীবনপ্রদীপ।
কিন্তু জীবন তার সেদিন শেষ হয়নি। আজ তার বয়স ৮১ বছর। থাকেন আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ায়। তিনি সেদিনের সেই স্মৃতি স্মরণ করে বলছেন, “লালফৌজ সেদিন আমাদের সবাইকে জীবন দিয়েছিল। সে এক অভূতপূর্ব দৃশ্য। ক্যাম্প মুক্ত করার পর আমাকে এক লালফৌজ সৈনিক কোলে তুলে নিল এবং জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো।”
পলা কথাটা যে প্রসঙ্গে বলেছিলেন তা হলো এ বছরের ২৭ জানুয়ারি আসউইজ ক্যাম্প মুক্তির ৭০ বছর উদযাপিত হয়েছে পোল্যান্ডে। কিন্তু সেখানে কোনো রাশিয়ানকে আমন্ত্র¿ণ করা হয়নি। অথচ এই ক্যাম্প মুক্ত করে হাজার হাজার মানুষকে নবজীবন দিয়েছিল তারাই। পলা সেই অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার সময় বললেন, “তাদের (রাশিয়ানদের) অবশ্যই থাকতে হবে। কারণ তারাই আমাদের মুক্তিদাতা।”