দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও বিচারের দাবি
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুজ্জামান সাকন এবং সাধারণ সম্পাদক স্নেহাদ্রি চক্রবর্ত্তী রিন্টু এক যুক্ত বিবৃতিতে ২৬ ফেব্রুয়ারি আনুমানিক রাত ৯টায় মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা, বিশিষ্ট বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায়কে হত্যার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। একইসাথে তাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি’র মতো এলাকায় পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনী, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার উপস্থিতিতেই এ ধরণের হত্যাকান্ড ঘটিয়ে ঘাতকদের নির্বিঘ্নে পালিয়ে যাবার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ জানান এবং অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন। এই ঘটনায় অভিজিৎ রায়ের স্ত্রী এবং বিজ্ঞান লেখক রাফিদা আহমেদ বন্যাও গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন।
তাঁরা বলেন, ‘অভিজিৎ রায় ও রাফিদা আহমেদ বন্যা মুক্তমনা ব্লগ এবং নিজেদের প্রকাশিত বইয়ের মাধ্যমে বিজ্ঞানমনষ্কতা, যুক্তিবাদিতার প্রচার ও প্রসার ঘটিয়েছেন। অভিজিৎ রায়ের নৃশংস হত্যাকান্ড প্রগতিশীল ও মুক্তিবুদ্ধির চর্চার ক্ষেত্রেই একটি বড় আঘাত। এর আগেও ২০০৪ সালে প্রথাবিরোধী লেখক, গবেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. হুমায়ূন আজাদের উপর বর্বর আক্রমণ হয়েছে। বারবার মুক্তবুদ্ধি ও প্রগতিশীল ব্যক্তিবর্গই এই আক্রমণের শিকার হয়েছেন।। হুমায়ূন আজাদের হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হয়নি। ফলে এ ধরনের হত্যাযজ্ঞ বারে বারেই সংগঠিত হয়েছে। অভিজিৎ রায়কে অনেক আগে থেকেই উগ্রবাদী-জঙ্গি গোষ্ঠীদের তরফ থেকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছিল, যা বিভিন্ন সময়ে প্রচার মাধ্যমে এসেছিল। কিন্তু কখনোই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এরই ফলাফলে এ ধরনের একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটলো।’
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ‘গত ৪৪ বছরে যারা এই দেশ পরিচালনা করেছে তাদের ক্ষমতায় যাবার প্রয়োজনে মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক শক্তি আর্থিক, রাজনৈতিক, সামাজিকভাবে শক্তিশালী হয়েছে। ফলে অভিজিৎ রায়ের মতো মুক্তিবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষেরা বার বার আক্রমণের শিকার হয়েছেন। এমন পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে দেশের সকল শুভবুদ্ধিসম্পন্ন, প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক ব্যক্তিবর্গের সম্মিলিত প্রচেষ্টা জরুরি। একটি অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক-বিজ্ঞান মনষ্ক সমাজ নির্মাণের আন্দোলনই কেবল এই দুঃসময় থেকে আমাদের রক্ষা করতে পারে।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে অভিজিৎ রায়ের হত্যাকারীদের শাস্তির দাবি করেন।