Monday, December 23, 2024
Homeসাম্যবাদসাম্যবাদ - মে-জুন ২০১৫সাম্যবাদ মে-জুন ২০১৫ ।। আন্দোলন ও সংগঠন সংবাদ

সাম্যবাদ মে-জুন ২০১৫ ।। আন্দোলন ও সংগঠন সংবাদ

সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে বাম মোর্চা

সরকার নির্বাচন নামক প্রহসন মঞ্চস্থ করেছে

11165293_807350469372008_2657605145171224106_n১১ মে ১২টায় তোপখানা রোডস্থ কমরেড নির্মল সেন মিলনায়তনে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার উদ্যোগে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মোর্চার সমন্বয়ক মোশরেফা মিশু। উপস্থিত ছিলেন মোর্চার নেতৃবৃন্দ শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী, সাইফুল হক, এড. আবদুস সালাম, মোশাররফ হোসেন নান্নু, সিদ্দিকুর রহমান, হামিদুল হক, মহিনউদ্দিন লিটন প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, “আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন ও সন্ত্রাসী দলীয় ক্যাডারদের সহায়তায় সরকার আবারো নির্বাচন নামক এক প্রহসনের নাটক মঞ্চস্থ করেছে। সরকার, প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রত্যক্ষ মদদে সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা ভোট শুরুর পূর্বেই অনেক কেন্দ্রে ব্যালট বাক্স ভরে রাখা, সরকার সমর্থিত প্রার্থী ব্যাতিত অন্য প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দেওয়া, প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার এবং সরকার দলীয় ক্যাডার কর্তৃক ইচ্ছামত সীল মেরে ব্যালট পেপার বক্সে ভরানো, সকাল ১০টা পর্যন্ত ভোট কেন্দ্রের চারশত গজের মধ্যে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে না দেওয়াসহ ভোট জালিয়াতির সকল পন্থাই অবলম্বন করা হয়। প্রার্থীরা ভোট চলাকালীন সময়ে ভোট ডাকাতি ও প্রহসনের নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। অথচ সরকার এবং নির্বাচন কমিশন নির্লজ্জভাবে দাবী করছেন সিটি নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে।

সিটি নির্বাচন ঘোষণার পর গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিল — বর্তমান সহিংস রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বিদ্যমান নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনী কাঠামোর অধীনে দেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ন্যূনতম গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই। অগণতান্ত্রিক শাসনকে গ্রহণযোগ্যতা দেওয়ার লক্ষ্যে এবং বিরোধীদের কোনঠাসা করে রেখে নিজেদের প্রার্থীদের জিতিয়ে আনার উদ্দেশ্যে মহাজোট সরকার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে তড়িঘড়ি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন ঘোষণা দেয়। আমরা বলেছিলাম সরকারের আজ্ঞাবহ বর্তমান নির্বাচন কমিশন এবং বিদ্যমান নির্বাচনী ব্যবস্থায় জাতীয় নির্বাচন দূরে থাক, স্থানীয় সরকার নির্বাচনও আপাত নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। কার্যত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ঘটেছেও তাই।”

বাম মোর্চা তিনটি সিটি করর্পোরেশনে ভোট ডাকাতি ও প্রহসনের নির্বাচন বাতিল এবং জনপ্রতিনিধিত্বহীন বর্তমান সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী পরিবেশ ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছে।

জাতীয় কমিটির সমাবেশ

সুন্দরবন ধ্বংসকারী বিদ্যুৎপ্রকল্প বাতিলের দাবি

NationalCommittee_Rally_210515তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সমাবেশে নেতৃবৃন্দ ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী’র বাংলাদেশ সফরের সময় সুন্দরবনধ্বংসী বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল ও সুন্দরবন রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের ঘোষণা দেওয়ার জন্য ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

২১ মে বিকাল সাড়ে ৪টায় জাতীয় প্রেসকাবের সামনে সুন্দরবনধ্বংসী রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ সকল অপতৎপরতা বন্ধ, জ্বালানী সম্পদের শতভাগ দেশের কাজে নিয়োগ, বাপেক্স-পেট্রোবাংলাকে পঙ্গু করে বিদেশিদের হাতে তেল-গ্যাস সম্পদ তুলে দেওয়ার চক্রান্ত বন্ধ এবং খনিজ সম্পদ রফতানি নিষিদ্ধ করা সহ জাতীয় কমিটির ৭ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জাতীয়ৃ কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ। বক্তব্য রাখেন সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মাদ, বিশিষ্ট লেখক সৈয়দ আবুল মাকসুদ, প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক, প্রকৌশলী কল্লোল মোস্তফা, রুহিন হোসেন প্রিন্স ও সাইফুল হক। শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, মোশারফ হোসেন নান্নু, বজলুর রশীদ ফিরোজ, জোনায়েদ সাকী, সিদ্দিকুর রহমান, মোশরেফা মিশু, সাজ্জাদ জহির চন্দন, রাজেকুজ্জামান রতন, আজিজুর রহমান, বহ্নি শিখা জামালী, মহিনউদ্দিন চৌধুরী লিটন, মীর মোফাজ্জেল মোস্তাক, সামছুল আলম, সুবল সরকার প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, জনগণের সম্পদ রক্ষায় জনগণকেই জেগে উঠতে হবে। তিনি সুন্দরবন ধ্বংসের সরকারি অপতৎপরতার নিন্দা জানিয়ে বলেন, দেশের জনগণই সুন্দরবন ও জাতীয় সম্পদ রক্ষা করবে। এজন্য আমরা অতীতের মতো আগামী দিনেও জনগণকে সাথে নিয়ে বৃহৎ আন্দোলন গড়ে তুলব। সমাবেশে সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে অর্জিত সংবিধানে দেশের সব সম্পদের মালিকানা জনগণকে দেওয়া হয়েছে। অথচ সরকার এবং পার্লামেন্টের এমপিরা সংবিধানের এই নির্দেশ রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাদের হাত দিয়েই সুন্দরবন ধ্বংস, গ্যাস লুটপাট ও জ্বালানি নিরাপত্তা বিঘিœত হচ্ছে। তিনি বলেন, এই জন্য বর্তমান ও অতীতের সরকারগুলোকে জনগণের সামনে জবাবদিহী করতে হবে।

অধ্যাপক আনু মুহাম্মাদ বলেন, দেশের সর্বস্তরের মানুষের মতামতকে উপেক্ষা করে সরকার সুন্দরবন ধ্বংসের বিদ্যুৎ প্রকল্প এগিয়ে নিচ্ছে। এছাড়াও সুন্দরবন ধ্বংসে আরও বিদ্যুৎ প্রকল্প, শীপইয়ার্ড, সাইলো, সিমেন্ট কারখানা নির্মাণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ভারতীয় আইনেও সুন্দরবনের এত কাছে কোনো বিদ্যুৎ প্রকল্পের অনুমতি পাওয়া অসম্ভব ছিল। তিনি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন বাংলাদেশ সফরের সময় সুন্দরবন ধ্বংসী বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলের ঘোষণা দেওয়ার জন্য দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান। সম্প্রতি স্থলভাগের গ্যাস ব্লক বিদেশি কোম্পানিকে ইজারা দেওয়ার বিরোধীতা করে তিনি বলেন, দেশীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্স-পেট্রোবাংলাকে পঙ্গু করে দেশের সম্পদ বিদেশিদের দেওয়ার যেকোনো চক্রান্ত দেশবাসী রুখে দাঁড়াবে।

সমাবেশের বক্তারা দেশি-বিদেশি লুটেরা গোষ্ঠী কর্তৃক আমাদের জাতীয় সম্পদ লুটপাটের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, ঘরে ডাকাত পড়লে তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ না করলে সর্বস্বান্ত হওয়া ছাড়া অন্য কোনো পথ থাকবে না। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল তোপখানা রোড ঘুরে পুরানা পল্টন মোড়ে এসে শেষ হয়।

মানব পাচারকারী রাজনৈতিক-ব্যবসায়ী চক্রের বিচার ও শাস্তির দাবিতে বাসদ (মার্কসবাদী)-র বিক্ষোভ

???????????????????????????????৮ মে ’১৫ বিকেল ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিদেশে পাঠানোর নামে মানব পাচারকারী রাজনৈতিক-ব্যাবসায়ী-সন্ত্রাসী চক্রের অবিলম্বে গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে বাংলাদেশের সমাজতন্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কার্যপরিচালনা কমিটির উদ্যোগে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কমরেড আলমগীর হোসেন দুলাল, মানস নন্দী, উজ্জ্বল রায় ও ফখ্রুদ্দিন কবির আতিক।

নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রশাসনের নাকের ডগায় দীর্ঘদীন ধরে অসহায় কর্মহীন মানুষকে প্রলুব্ধ করে পাচারের মাধ্যমে একদিকে দাসব্যবসা, অন্যদিকে মুক্তিপণ আদায় ও হত্যা চললেও সরকার কোন ব্যবস্থা নেয়নি। অসাধু ব্যবসায়ী চক্রের বিরুদ্ধে এখনো পর্যন্ত কোনো প্রকার ব্যবস্থা না নেয়াও বাস্তবে এসব নিষ্ঠুরতম অন্যায়কারীদের মদদ দেয়ার সামিল। সম্পূর্ণভাবে সরকারকেই এর দায়-দয়িত্ব নিতে হবে। যেসকল পরিবার স্বজনদের হারিয়েছে তাদের খুঁজে বের করে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান এবং দেশের সচেতন মানুষদের মানব পাচারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, এ ঘটনা প্রচলিত পুঁজিবাদী ব্যবস্থার চূড়ান্ত মুনাফালোভী চরিত্রকে আরো একবার উন্মোচন করলো। সমাজ পরিবর্তনের সংগ্রাম জোরদার করার মাধ্যমে একে মোকাবেলা করতে হবে। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও ক্ষতিগ্রস্ত চাষী-জেলেদের ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিক্ষোভ

Nilfamari_Tista copyভারতের কাছ থেকে তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ এবং তিস্তা সেচ প্রকল্পের আওতাধীন ক্ষতিগ্রস্ত চাষী ও মৎস্যজীবীদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবিতে বাসদ (মার্কসবাদী)-র উদ্যোগে ২০ এপ্রিল বিকাল ৫টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ও পরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ধারাবাহিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে একইদিনে উত্তরবঙ্গের প্রত্যেক জেলায় বিক্ষোভ সমাবেশ, অবরোধ, মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড কমরেড মানস নন্দী, কমরেড ওবায়দুল্লাহ মুসা, কমরেড উজ্জ্বল রায়, কমরেড ফখরুদ্দিন কবির আতিক। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল পল্টন-গুলিস্তান-বায়তুল মোকাররম এলাকা প্রদক্ষিণ করে।

Teesta copyসমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, তিস্তা নদীতে পানি নেই, ধু-ধু বালুচর। পানিহীন শুকনো সেচখাল। তিস্তায় পানি না থাকায় হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল শুকিয়ে যাচ্ছে, মাটির নিচে পানির স্তর আরো নিচে নেমে গেছে। বর্ষাকালে নদীভাঙন ও বন্যার কবলে পড়ে হাজার হাজার হেক্টর জমি নদীগর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে। তিস্তায় পানি-শূন্যতা ও নদীভাঙনসহ নানা কারণে নদী তীরবর্তী চাষী-মৎস্যজীবীরা এক হিসাবে কমপক্ষে ১২শ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছে।

সমাবেশ থেকে নেতৃবৃন্দ গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও গণতান্ত্রিক নির্বাচন এবং নদীর পানির হিস্যা ও ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের ক্ষতিপূরণ, দ্রব্যমূল্য, নারী নির্যাতন, সন্ত্রাস প্রভৃতি জনজীবনের সমস্যা নিয়ে বাম-গণতান্ত্রিক শক্তির নেতৃত্বে গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

‘চা শ্রমিক দিবস’ উদযাপন

২০ মে ‘চা শ্রমিক দিবস’-এর ৯৪তম বার্ষিকী। বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন সিলেট জেলার উদ্যোগে দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়। অনুষ্ঠান সূচির মধ্যে সকাল ৮টায় বাগানে বাগানে অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শহীদ স্মরণে কালো ব্যাজ ধারণ করা হয়। সিলেট অঞ্চলের মালনীছড়া, লাক্কাতুরা, হিলুয়াছড়া,দলদলি, তারাপুরসহ বিভিন্ন চা বাগানে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। এদিকে বিকাল ৪টায় মালনীছড়া চা বাগানে অনুষ্ঠিত হয় র‌্যালি, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ফেডারেশনের সিলেট জেলার আহবায়ক বীরেন সিং-এর সভপতিত্বে এবং অজিত দাশের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন এড. হুমায়ুন রশীদ সোয়েব, শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন জেলা সভাপতি সুশান্ত সিনহা, চা শ্রমিক ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক হৃদেশ মুদি, মিতা সিং, মালনীছড়া বাগানের সভাপতি সন্তোষ নায়েক, লাক্কাতুরা শাখার সাধারণ সম্পাদক লাংকাট লোহার, চা বাগান শিক্ষা অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদের অধীর বাউরী, আমেনা বেগম, আসা সবর প্রমুখ। সবশেষে ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়।
একই দিনে হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন বাগানে অস্থায়ী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, জাতীয় পতাকা ও কালো পতাকা উত্তোলন এবং কালো ব্যাজ ধারণ করা হয়। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে চা শ্রমিক ফেডারেশন নেতা ময়না রবি দাসের সভাপতিত্বে এবং শ্রমিক নেতা শিবলাল এর পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সুধরাম সাওতাল, গণেশ দাস, বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা এনামুল হক প্রমুখ।

মহান মে দিবস উদযাপন

কাজ, ন্যায্য মজুরি ও ট্রেড ইউনিয়নের গণতান্ত্রিক অধিকারের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হোন

শ্রমশোষণের নিগড় থেকে শ্রমিকশ্রেণীর মুক্তির সংগ্রাম গড়ে তোলার প্রত্যয় নিয়ে মহান মে দিবস পালন করল বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন। ১ মে সকাল ১০টায় প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন ও লাল পতাকা নিয়ে একটি সুসজ্জিত মিছিল প্রেসক্লাব, হাইকোর্ট মোড়. পল্টন, মুক্তাঙ্গন, জিরো পয়েন্ট, বায়তুল মোকাররম ঘুরে তোপখানা রোডের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। এখানে বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি জহিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশ বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড মানস নন্দী ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা ডা. মুজিবুল হক আরজু। সমাবেশ পরিচালনা করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা ফখ্রুদ্দিন কবির আতিক।

সমাবেশে নেতৃবৃন্দ মে দিবসের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, মে দিবসের সংগ্রামী চেতনাকে মালিকশ্রেণী উৎসবের ডামাডোলের নিচে চাপা দিতে চাইছে। আজ শ্রমিকদের এমন মজুরি দেয়া হয় যা দিয়ে জীবনধারণ করা যায় না। ফলে বাধ্য হয়ে শ্রমিকরা নিজেরাই ওভারটাইম দাবি করে। নিরাপদে কাজ করার পরিবেশ নেই। রানা প্লাজা, তাজরিন প্রভৃতি শ্রমিক গণহত্যার বিচার আজও হয়নি। নেতৃবৃন্দ বলেন, মে দিবসের ইতিহাসের সাথে দুটি বিষয় গভীরভাবে সম্পৃক্ত। একটি হল, শ্রমিক আন্দোলনের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির গুরুত্ব — রাজনৈতিক ট্রেড ইউনিয়নের গুরুত্ব। অপরটি হল, শ্রমিক আন্দোলনের চূড়ান্ত লক্ষ্য একটি শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা। মে দিবসের ইতিহাস তুলে ধরে শ্রমিকশ্রেণীর সামনে এ লক্ষ্য বার বার তুলে ধরতে হবে।

1 may bahadur 2মহান মে দিবসে বিকালে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ্ পার্কে বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন সূত্রাপুর থানা শাখার উদ্যোগে শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সংগঠক রাজীব চত্রবর্তীর সভাপতিত্বে ছাত্রনেতা কৃষ্ণ বর্মনের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড ফখরুদ্দিন কবির আতিক, বাসদ (মার্কসবাদী)-র কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড সাইফুজ্জামান সাকন, ছাত্রনেতা মাসুদ রানা, বাঁধাই শ্রমিক মানিক হোসেন, জামিল হোসেন। সমাবেশ শেষে মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

চট্টগ্রাম, সিলেট, বগুড়া, গাইবান্ধাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মে দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

রানাপ্লাজা শ্রমিক গণহত্যা দিবস স্মরণ

রানা প্লাজা শ্রমিক গণহত্যা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) এবং বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের উদ্যোগে ২৪ এপ্রিল সকাল ৯টায় সাভারস্থ রানা প্লাজা ধ্বংসস্তূপের সামনে অস্থায়ী শহীদ বেদিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাসদ (মার্কসবাদী)-র কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড মানস নন্দী, ফখ্রুদ্দিন কবির আতিক, শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি কমরেড জহিরুল ইসলাম, প্রকৌশলী হারুন আল রশীদ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক স্নেহাদ্রি চক্রবর্তী রিন্টু প্রমুখ। এছাড়া, রানা প্লাজা ও তাজরিন ফ্যাশন্সে শ্রমিক হত্যার জন্য দায়ীদের দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, ক্ষতিগ্রস্তদের আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ এবং অবাধ ট্রেডইউনিয়ন অধিকার, নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত কর্মপরিবেশের দাবিতে সংগঠনের উদ্যোগে এদিন সকাল ১০টায় গাজীপুর চৌরাস্তায় এবং বিকাল ৫টায় মীরপুর ১১নং পূরবী সিনেমা হলের সামনে শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

মিরপুর-পল্লবী : বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন মিরপুর-পল্লবী আঞ্চলিক শাখা ২৪ এপ্রিল বিকালে রানাপ্লাজা শ্রমিক গণহত্যা দিবস স্মরণে বিক্ষোভ সমাবেশ এবং মিছিলের আয়োজন করে। বিকাল ৪টায় পল্লবীস্থ সংগঠনের কার্যালয়ে কালো ব্যাজ ধারণ এবং নিরবতা পালনের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। এখানে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সংগঠক ফখ্রুদ্দিন কবির আতিক এবং মিরপুর পল্লবী আঞ্চলিক শাখার সংগঠক ডা. মুজিবুল হক আরজু। আলোচনা শেষে একটি মিছিল পূরবী হলের সামনে যায় এবং সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ডা. আরজুর সভাপতিত্বে এবং সাইফুল হাসান মুনাকাতের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন ফখ্রুদ্দিন কবির আতিক, মাহবুব হাসান এবং তাজুল ইসলাম। সমাবেশ শেষে মিছিল মিরপুর ১২ নাম্বারের চৌরঙ্গী মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।

গাজীপুর : বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন গাজীপুর জেলা শাখার উদ্যোগে সকাল ১০টায় গাজীপুর চান্দনা চৌরাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিল শেষে সমাবেশ চলাকালে পুলিশ বাধা দেয়। নারীনেত্রী এড. ফরিদা ইয়াছমিন ও গার্মেন্টস শ্রমিক নেত্রী জনতা রানীর বক্তব্য শেষ করার পর পুলিশ বাধা প্রদান করে অনুমতির অজুহাতে। এ সময় শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ শ্লোগান দিলে পুলিশ ব্যানার ছিনিয়ে নেয় এবং মাইক ছিনিয়ে নেয়ার জন্য টানাটানি করে। পরে সাম্যবাদ কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা করেন বাসদ (মার্কসবাদী) গাজীপুর জেলা সমন্বয়ক তরুণ কান্তি বর্মন ও ফেডারেশনের গাজীপুর জেলা শাখার সভাপতি মশিউর রহমান খোকন।

তেজগাঁও : বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র ও শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতি পাঠাগারের পক্ষ থেকে রানাপ্লাজা শ্রমিক গণহত্যার বিচার, আহত-নিহত শ্রমিকদের পরিবারকে আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ এবং পহেলা বৈশাখে বিভিন্ন স্থানে নারী লাঞ্ছনার বিচারের দাবিতে ২৪ এপ্রিল বিকাল ৫টায় নাবিস্কো মোড়ে মানববন্ধন ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন নারীমুক্তি কেন্দ্রের মাহফুজা খানম রিতা।

বাঁধাই শ্রমিকদের সমাবেশ

বাঁধাই শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ১২ হাজার টাকা, নিয়োগপত্র, সবেতনে সাপ্তাহিক ও অন্যান্য ছুটি, ওভার টাইম, গ্রাচ্যুইটি-প্রভিডেন্ট ফান্ড, সুস্থ কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবিতে বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন-এর উদ্যোগে ১০ এপ্রিল বিকাল ৪.৩০টায় প্রেসক্লাব চত্বরে মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সংগঠক রাজীব চক্রবর্তীর পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন ঢাকা নগর নেতা কল্যাণ দত্ত, ছাত্র ফ্রন্ট নেতা মাসুদ রানা, বাঁধাই শ্রমিক খোকন মিয়া, মানিক মিয়া, আলতাব হোসেন প্রমুখ।

সমাবেশে বাধাঁই শ্রমিকরা বলেন, আমরা পুরান ঢাকার বিভিন্ন বিল্ডিং-এর নিচতলায় আলো-বাতাসহীন ঘুপচি ঘরগুলোতে সকাল ৮টা থেকে রাত ১১টা পযন্ত কাজ করি। বই ছাপার মৌসুমে রাত ২টা-৩টা এমনকি ৪টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। কিন্তু এরপরও বাঁচার মতো মজুরি পাই না। একটা বাথরুম, একটা রান্নাঘর তৈরি করে ২০/২৫ জন শ্রমিক নিয়ে কারখানায় কাজ চলে। গায়ে চুলকানি, খুসখুসে কাশি আমাদের নৈমিত্তিক সঙ্গী।

সমাবেশে শ্রমিক নেতারা আরো বলেন, ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে শত বছর থেকে আন্দোলন চললেও, আজও বাঁধাই শ্রমিকরা ১৫ ঘণ্টা কাজ করতে বাধ্য। আবার আগামী জুলাই মাস থেকে কার্যকর হতে যাচ্ছে সরকারি পে-কমিশন। তার সাথে সাথে দ্রব্যমূল্য বাড়বে, বাড়বে গাড়ি ভাড়া-বাড়ি ভাড়া। বছরের শুরুতে গ্যাস বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির জন্য একবার সব কিছুর দাম বাড়ে, আবার পে-কমিশনের পর আবার বাড়বে। এমতাবস্থায়, কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার মধ্যে দিয়ে শ্রমজীবি মানুষের দাবি আদায় করতে হবে।

অভিজিৎ রায় ও অনন্ত বিজয় দাশ-এর খুনীদের গ্রেপ্তার দাবি

বাংলাদেশের সমাজতন্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)-র কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী ১২ মে এক বিবৃতিতে সিলেটে ‘যুক্তি’ পত্রিকার সম্পাদক, বিজ্ঞান লেখক ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশের হত্যাকান্ডের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানান এবং অবিলম্বে ঘাতকচক্রের গ্রেফতার এবং বিচার দাবি করেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘মুক্তচিন্তাবিরোধী উগ্র প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি টার্গেট করে বারবার এ ধরনের নৃশংস হত্যাকা- সংঘটিত করলেও এখনো পর্যন্ত তাদের গ্রেফতারে প্রশাসনের ব্যর্থতা জনগণের নিরাপত্তা দেয়ার ক্ষেত্রে চরম দায়িত্বহীনতার সামিল। ফ্যাসিবাদী অগণতান্ত্রিক শাসন বহাল রেখে, বিচারহীনতার সংস্কৃতি বহাল রেখে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত হতে পারে না — এ ঘটনা আরেকবার সেটাই প্রমাণ করল। বিবৃতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্র নিজেই যখন ক্রমাগত সমস্ত ধরনের গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি এমনকি ন্যূনতম আইনের শাসনকে লঙ্ঘন করতে থাকে, বিচারহীনতার সংস্কৃতি চর্চা করতে থাকে, তখন সমস্ত ধরনের অপশক্তি পৃষ্ঠপোষকতা পায় এবং গোটা সমাজ নিরাপত্তাহীনতায় আক্রান্ত হয়।’ তিনি বাম গণতান্ত্রিক শক্তির নেতৃত্বে জানমালের নিরাপত্তাসহ গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান।
Sylhet_170515সিলেট : অনন্ত বিজয় দাস হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের উদ্যোগে তাৎক্ষণিকভাবে ১২ মে দুপুর ১টায় শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলা শাখার পক্ষ থেকে ১৭ মে বিকেলে শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা: ‘যুক্তি’ পত্রিকার সম্পাদক, বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী কাউন্সিলের প্রতিষ্ঠাতা ও বিজ্ঞান লেখক অনন্ত বিজয় দাশের বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এবং অভিজিৎ রায়ের হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বিজ্ঞানচর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে ১৩ মে বিকেল সাড়ে ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। নারীমুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্তের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক শরীফুল চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি রাশেদ শাহরিয়ার, বিজ্ঞানচর্চা কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সংগঠক আবু নাঈম।

বক্তারা বলেন, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি শত শত মানুষের উপস্থিতিতে পুলিশের নাকের ডগায় বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এদের হোতাদের আজও বিচারের আওতায় আনতে পারেনি সরকার। বিচারহীনতার এই পরিস্থিতি চলতে চলতেই খুন হলেন বিজ্ঞান লেখক অনন্ত বিজয় দাশ। যে কোনো মুক্তচিন্তার মানুষের জন্য এই অবস্থা শ্বাসরুদ্ধকর। বক্তারা আরও বলেন, এই পরিস্থিতি দেশের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক। দেশে আজ আইনের শাসনের ন্যূনতম চর্চা নেই। বিচারহীনতার সংস্কৃতি দৃঢ় হয়েছে। গোটা সমাজে সৃষ্টি হয়েছে ভয়ের পরিবেশ। এমন দমবন্ধ অবস্থায় সকল প্রগতিশীল-গণতান্ত্রিকমনা মানুষদের ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার।

এছাড়া বিজ্ঞান চর্চা কেন্দ্র চট্টগ্রাম জেলা শাখা ১৪ মে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে এবং বিজ্ঞান চর্চা কেন্দ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগে ২২ মে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বিজ্ঞান চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে ২২ মে বিকালে ঢাকায় জাতীয় জাদুঘরের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নবীনবরণ

ইডেন কলেজ
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ইডেন কলেজ শাখার উদ্যোগে ২৬ এপ্রিল সকালে কলেজ অডিটোরিয়ামে ২০১৪-’১৫ বর্ষের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক তৌফিকা দেওয়ান লিজা, আলোচনা করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক স্নেহাদ্রি চক্রবর্তী রিন্টু, ঢাকা নগর শাখার সভাপতি নাঈমা খালেদ মনিকা। এছাড়া বিভিন্ন বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীরা শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। আলোচনা সভার শেষে নবীনদের অংশগ্রহণে গান, কবিতা আবৃত্তি, নাচ, গীতিআলোখ্য ও নাটক পরিবেশিত হয়। নবীনবরণ অনুষ্ঠান থেকে জাতীয় বাজেটের ২৫% শিক্ষাখাতে বরাদ্দ, ২১০ দিন ক্লাস চালু রাখা, পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ এবং ইডেনকে সায়ত্ত্বশাসিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করার এবং বীরকন্যা প্রীতিলতার নামে নামকরণ করার দাবি জানানো হয়।
আনন্দ মোহন কলেজ
২০ মে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের উদ্যোগে আনন্দমোহন কলেজে নবীন বরণ অনুষ্ঠিত হয়। প্রবর্তিত সৃজনশীল পদ্ধতির পরিপূরক প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজনসহ ৯ দফা দাবিতে নবীনদের অংশগ্রহণে সকাল ৯টায় অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রথমে আবৃত্তি ও উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতা। পরে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) ময়মনসিংহ জেলা সমন্বয়ক শেখর রায়, ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক সেঁজুতি চৌধুরী, সংগঠনের ময়মনসিংহ জেলার সাধারণ সম্পাদক অজিত দাস, বাকৃবি সহ-সভাপতি রাফিকুজ্জামান ফরিদ, আনন্দমহন সংগঠক সাজিদ, নবীন ছাত্র জুয়েল। আনন্দমোহন শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর ভুঁইয়ার পরিচালনায় সভাপতিত্ব করেন আহবায়ক মিশুক দত্ত। এরপর নবীনদের অংশগ্রহণে স্কাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নাটক গর্ত পরিবেশিত হয়।

স্বতন্ত্র পরীক্ষাহল নির্মাণ করার দাবিতে ছাত্র ফ্রন্টের অবস্থান কর্মসূচি

২১ মে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখার উদ্যোগে জাতীয় বাজেটের ২৫% শিক্ষাখাতে বরাদ্দ, পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ, পর্যাপ্ত ক্লাসরুম ও স্বতন্ত্র পরীক্ষাহল নির্মাণ করে সারা বছর ক্লাস চালু রাখার দাবিতে পৌর শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি পরমানন্দ দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন জেলা সভাপতি নিলুফার ইয়াসমিন শিল্পী, সাধারণ সম্পাদক বজলুর রহমান, শামীম আর মিনা, জাহেদা বেগম রাহেলা সিদ্দিকা, মাহবুব আলম মিলন। সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক হেদায়েতুল ইসলাম বাবু। বক্তাগণ বলেন পরীক্ষার কারণে কলেজগুলো বছরের অধিকাংশ সময ক্লাস বন্ধ থাকে। ফলে স্বতন্ত্র পরীক্ষাহল নির্মাণ ছাত্রসমাজের প্রাণের দাবি।

খাগড়াছড়িতে বাংলা নববর্ষ ও বৈসাবি উৎসব পালন

বাংলা নববর্ষ ও বৈসাবি উপলক্ষে খাগড়াছড়িতে শিশু কিশোর মেলা এর উদ্যোগে বর্ণাঢ্য র‌্যালী ও চিত্রাংকনের প্রতিযোগীতার আয়োজন করা হয়। নতুন বৎসরকে স্বাগত জানাতে ১২ এপ্রিল সকাল ১০টায় রং বেরং এর ফেস্টুন নিয়ে বর্ণ্যাঢ্য র‌্যালী বের করা হয়। র‌্যালীটি শিশু কিশোর মেলার কার্যালয় থেকে শাপলা চত্বর, শান্তি নগর মোড় ঘুরে এসে আবার শিশু কিশোর মেলার কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। এরপর চিত্রাংকন প্রতিযোগীতা শুরু হয় শরৎ স্মৃতি পাঠাগারে। পরে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শুরু হয়।

আইনস্টাইন স্মরণে আলোচনা সভা

বিজ্ঞানচর্চা কেন্দ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগে বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টস-এর ৬০ মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণে ১৫ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোকাররম ভবনে অনুষ্ঠিত হয়। এতে আলোচনা করেন বিজ্ঞানচর্চা কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সংগঠক আবু নাঈম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সংগঠক ইভা মজুমদার ও নূরে আলম সিদ্দিকী।

সাম্যবাদ মে-জুন ২০১৫

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments