Sunday, November 24, 2024
Homeসংবাদ ও প্রেস বিজ্ঞপ্তিপার্টি ও সংগঠন সংবাদ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রংপুর-তিস্তা ব্যারেজ অভিমূখে রোডমার্চ

১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রংপুর-তিস্তা ব্যারেজ অভিমূখে রোডমার্চ

Basod (Marxist) Pic

তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের দাবিতে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি রংপুর থেকে তিস্তা ব্যারেজ অভিমুখে ঘোষিত রোডমার্চ সফল করার লক্ষ্যে মঙ্গলবার ২রা ফেব্রুয়ারি ২০১৬ বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের উদ্যোগে নগরীর জি.এল.রায় রোডস্থ সাম্যবাদ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় বর্ধিত ফোরামের সদস্য ও রংপুর বিভাগীয় সংগঠক কমরেড মঞ্জুর আলম মিঠু। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী, কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য ও রাজশাহী বিভাগীয় সংগঠক কমরেড ওবায়েদুল্লাহ মুসা, কেন্দ্রীয় বর্ধিত ফোরামের সদস্য ও গাইবান্ধা জেলা আহবায়ক কমরেড আহসানুল হাবিব সাঈদ, রংপুর জেলা সমন্বয়ক কমরেড আনোয়ার হোসেন বাবলু, পঞ্চগড় জেলা সমন্বয়ক অধ্যাপক তরিকুল আলম, বগুড়া জেলা সমন্বয়ক সামছুল আলম দুলু, দিনাজপুর জেলা সমন্বয়ক রেজাউল ইসলাম সবুজ, ঠাকুরগাঁও জেলা সমন্বয়ক মাহবুব আলম রুবেল, রংপুর জেলা কমিটির সদস্য পলাশ কান্তি নাগ প্রমূখ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দেশে এখন বোরো মওসুম শুরু হয়েছে। রংপুর-দিনাজপু-নীলফামারী জেলার ১ লক্ষ ১১ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষের জন্য যতটুকু পানি প্রয়োজন, তার পুরোটাই নির্ভরশীল ছিল তিস্তা সেচ প্রকল্পের উপর। অথচ বর্তমানে সেই সেচ প্রকল্প প্রায় অচল। পানি না থাকায় এ বছর মাত্র ১০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সেচ প্রকল্প থেকে জমিতে সেচ দিতে বিঘা প্রতি খরচ হয় ১৫০-২০০ টাকা, তার বাইরে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করে সেচ দিতে বিঘা প্রতি খরচ হয় ২৫০০-২৭০০ টাকা। ফলে পানি না পাওয়ায় গত বছর চাষিদের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। এ বছরও ভয়াবহ সংকটে পড়বে চাষিরা। কারণ এখনই বাংলাদেশ এলাকায় তিস্তার পানির পরিমাণ ১ হাজার কিউসেক এর নিচে নেমে এসেছে। আগামী দিনগুলোতে সেটা আরও কমে যাবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসেব মতে এক সময় শুষ্ক মওসুমে বাংলাদেশ অঞ্চলে তিস্তা নদীতে ১৪ হাজার কিউসেক পানি প্রবাহিত হতো। ভারত তিস্তার উজানে গজল ডোবায় বাঁধ দিয়ে এবং তারও উজানে বেশ কিছু জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ও ক্যানেল করে একতরফা পানি প্রত্যাহার করায় তা কমতে কমতে আজ শুস্ক মওসুমে ৩০০/৪০০ কিউসেকে দাঁড়িয়েছে। ভারত কর্তৃক বে-আইনিভাবে পানি প্রত্যাহার করায় একদিকে যেমন সেচ প্রকল্প অচল হয়ে কৃষি বিপর্যস্ত হচ্ছে অন্যদিকে নদী শুকিয়ে যাওয়ায় মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণি বিলুপ্ত হচ্ছে। হাজার হাজার জেলে পরিবার বেকার হয়ে পেশা পরিবর্তনে বাধ্য হচ্ছে। শুস্ক মৌসুমে ভারত সেচের সময় পানি দিচ্ছে না আবার বর্ষা মওসুমে ব্যাপক পানি ছাড়ার ফলে নদী ভাঙ্গন ও বন্যা সমস্যায় সর্বস্ব হারাচ্ছে তিস্তা অঞ্চলের মানুষ।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, দেশের শাসকগোষ্ঠী প্রতিবছর ভারতের পানি প্রত্যাহারের পর যতটুকু পানি পাওয়া যায় তার নিরিখে সেচের জমির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলেও পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে তারা কোন কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না। এভাবে প্রতি বছর পানিও কমছে, সেচের জমিও কমছে। সরকারের নতজানু পররাষ্ট্র নীতির কারণে ধীরে ধীরে দেশের উত্তরাঞ্চলের শষ্য ভান্ডার বিরাণ ভূমিতে পরিণত হচ্ছে। যে সময়ে আপনাদের সামনে আমাদের বক্তব্য তুলে ধরছি, সেই মুহুর্তে আমাদের পররাষ্ট্র সচিব ভারত সফরে আছেন। দুই দেশের সচিব পর্যায়ের বৈঠক হচ্ছে। আমরা আপনাদের মাধ্যমে সরকারকে আহবান জানাচ্ছি, বৈঠকে তিস্তাসহ সকল অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা প্রসঙ্গে কার্যকর আলোচনা উত্থাপন করা হোক। ভারত সরকার এক্ষেত্রে সাড়া না দিলে আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোতে ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার দাবিও আমরা জানাচ্ছি। পাশাপাশি উত্তরাঞ্চলসহ সারাদেশের মানুষের প্রতি তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়, তিস্তা সেচ প্রকল্পের আওতাধীন চাষি-ক্ষেতমজুরদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণসহ সেচ প্রকল্প সচল করার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, বাসদ (মার্কসবাদী) এবং সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট গত ৩ বছর ধরে ধারাবাহিক আন্দোলন করে আসছে। সেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আগামী ১৫ ফ্রেব্রুয়ারি’১৬ সোমবার রংপুর থেকে তিস্তা ব্যারেজ অভিমুখে রোডমার্চের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

নেতৃবৃন্দ সংবাদ সম্মেলন থেকে রোডমার্চ সফল করার জন্য সর্বস্তরের মানুষের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments