Saturday, November 23, 2024
Homeছাত্র ফ্রন্টছাত্ররাজনীতি বন্ধের চক্রান্ত্রের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও ছাত্রসমাবেশ

ছাত্ররাজনীতি বন্ধের চক্রান্ত্রের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও ছাত্রসমাবেশ

 SSF_21.04.14-1
ছাত্র রাজনীতি বন্ধের পরিকল্পনার প্রতিবাদে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে আজ ২১ এপ্রিল ‘১৪ দুপুর ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ছাত্রসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছাত্রনেতা সাইফুজ্জামান সাকনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক স্নেহাদ্রি চক্রবর্ত্তী রিন্টু, ঢাকা নগর শাখার সভাপতি নাঈমা খালেদ মনিকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি রাশেদ শাহরিয়ার, ঢাকা নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক শরীফুল চৌধুরী প্রমুখ।
সমাবেশে সাইফুজ্জামান সাকন বলেন, গত ৬ এপ্রিল ‘১৪ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ-এর বৈঠকে কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছাত্ররাজনীতি বন্ধের সুপারিশ করেছেন। সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের অন্তর্কলহের জের ধরে দুটি হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়। এর ভিত্তিতে উপাচার্য মহাদয়েরা এই প্রস্তাবনা দিয়েছেন। টেন্ডার ভাগাভাগি, চাঁদার ভাগবাটোয়ারা, হত্যা-খুন ইত্যাদি ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের নৈমিত্তিক কাজে পরিণত হয়েছে। তাদের রাজনীতি কতটা নৃশংস আর নির্মম হতে পারে তার প্রমাণ পাওয়া যায় নিজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় বন্ধুকে খুন! এই হত্যা-খুনকে কোনো শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ কি রাজনীতি বলবেন, নাকি সন্ত্রাস? এ দেশে সাধারণ আইন আছে, আইনের ধারাতেই অপরাধীদের বিচার হওয়া উচিত। সন্ত্রাসীদের বিচার না করে, নানাভাবে নানাসময় আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে, আবার তাদের অপকর্মের অজুহাত দেখিয়ে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের সুপারিশ কেন? পাকিস্তান আমলেও সরকারি ছাত্র সংগঠন এরকম হত্যা খুন দমন-পীড়নে নিয়োজিত ছিল। কিন্তু তা দেখিয়ে তো কেউ সে দিন স্বাধিকার আদায়ের সংগ্রামে নিয়োজিত ছাত্রদের রাজনীতি থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেয় নি।
স্নেহাদ্রি চক্রবর্ত্তী রিন্টু বলেন, উচ্চশিক্ষা তথা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সরকার ক্রমাগত বরাদ্ধ হ্রাস ও অভ্যন্তরীণ আয় বাড়ানোর নীতি গ্রহণ করেছে। প্রণয়ন করেছে উচ্চশিক্ষার ২০ বছর মেয়াদী কৌশলপত্র। কৌশলপত্র বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বৃদ্ধি করছে ছাত্র বেতন-ফি। আর এতে এদেশের খেটে খাওয়া মানুষের সন্তানরা শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করে, জনগণকে অজ্ঞতার অন্ধকারে রেখে চলবে সীমাহীন শোষণ। এই শোষণের স্বরূপ কিছুটা বুঝতে পারে ছাত্ররাই, শোষণের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানোর শক্তিও তারাই। পরাধীন দেশে ছাত্ররা শিক্ষার ব্যয় বৃদ্ধি তথা শাসকদের শিক্ষা সংকোচনের নীল নকশা বুকের রক্ত দিয়ে প্রতিহত করেছিল। জন্ম হয়েছিল ‘৬২-র শিক্ষা আন্দোলনের। স্বাধীন দেশেও শিক্ষার অধিকার রক্ষায় ‘৮৩ সালে ছাত্ররা প্রাণ দিয়েছে। তাই শাসক শ্রেণী শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ তথা শিক্ষাকে পুঁজিপতিদের মুনাফা লুণ্ঠনে মৃগয়াক্ষেত্রে পরিণত করার ক্ষেত্রে তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে প্রধান বাধা মনে করে ছাত্র সমাজকে। সেই বাধা অপসারণ করতে ছাত্রদের প্রতিবাদ করার, সংগঠিত হওয়ার অধিকার হরণ করার চক্রান্ত করছে। আদর্শহীন বুর্জোয়া ধারার রাজনীতি স্বভাবতই ব্যক্তিস্বার্থের পঙ্কে নিমজ্জিত। যা সমাজে মূল্যবোধের অবক্ষয় ত্বরান্বিত করছে। এই সংকট বুর্জোয়া রাজনীতির সংকট। বুর্জোয়া রাজনীতি আজ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে আর প্রতিফলিত করে না। তাই ৫২,৬২,৬৯,৭১,৯০-এর সংগ্রামের ধারাতে, শোষিত মানুষের পক্ষের যে রাজনীতি,অধিকার আদায়ের সংগ্রামের মধ্য দিয়েই আদর্শবাদী ও বিপ্লবী ধারার রাজনৈতিক শক্তির উত্থানের মধ্য দিয়েই এই সংকটের সমাধান সম্ভব।
RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments