ছাত্র বেতন এবং আবাসিক হলের সিট ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব ছাত্র সমাজ মানবে না
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুজ্জামান সাকন ও সাধারণ সম্পাদক স্নেহাদ্রি চক্রবর্ত্তী রিন্টু শুক্রবার ৯ জানুয়ারি ২০১৫ সংবাদপত্রে দেয়া এক যৌথ বিবৃতিতে ইউনিভার্সিটি গ্র্যান্টস কমিশনের (ইউজিসি) এ বছরের সর্বশেষ (৪০তম) বার্ষিক প্রতিবেদনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থী বেতন এবং আবাসিক হলের সিট ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাবের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বেতন-ফি খুবই কম, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিজস্ব আয় বাড়ানোর সম্ভাব্য উপায় হিসেবে শিক্ষার্থী বেতন ও আবাসিক হলের সিট ভাড়া বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে হবে এবং এটা খুবই যৌক্তিক প্রস্তাব’ – ইউজিসি‘র প্রতিবেদনের এমন বক্তব্য সর্বৈব মিথ্যাচার। যে ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দেখভাল করার কথা, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সমস্যা-সংকটের চাহিদার নিরিখে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দের জন্য সরকারের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করবার কথা, সেই ইউজিসি এই প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে শাসকশ্রেণীর শিক্ষা বাণিজ্যের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভূমিকা পালন করেছে। এর মাধ্যমে এটাই প্রমাণিত হলো, ইউজিসি কোনোভাবেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবকদের স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করেনা। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভগ্নদশা দূর করতে যেখানে আরও সরকারি বরাদ্দ বৃদ্ধির সুপারিশ করা উচিত ছিল সেখানে সরকারের আজ্ঞাবাহী প্রতিষ্ঠান হিসেবে শিক্ষার্থীদের উপরই আর্থিক বোঝা চাপানোর পাঁয়তারা করা হচ্ছে। জনগনের দেয়া ট্যাক্সের হাজার হাজার কোটি টাকা চুরি, দুর্নীতি হলেও শিক্ষা দেবার বেলায় এদের হাজারটা বিবেচনা! এভাবে শিক্ষার অধিকার হরণ করার কোনো এখতিয়ার ইউজিসি’র নেই।’ নেতৃবৃন্দ শিক্ষার উপর এই ভয়ংকর বাণিজ্যিক প্রস্তাবের প্রতিটি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে ছাত্রসমাজসহ শিক্ষক-শিক্ষাবিদ-অভিভাবক সবাইকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।
নেতৃবৃন্দ একই সাথে, প্রতিবেদনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ¯স্নাতকদের মান নিয়ে যে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, সেজন্য ইউজিসিসহ সরকারকেই দায়ী করেন। তাঁরা বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে সরকারের দীর্ঘদিনের অবহেলার কারণেই এই ফলাফল। বছরের পর বছর ধরে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি-আন্দোলনের পরও সরকার কোনো ভূমিকা পালন করেনি। অথচ আজ এই প্রতিষ্ঠানকে অকার্যকর বলে ঘোষণা করছে। সমাধান হিসেবে স্নাতক-স্নাতকোত্তর কলেজগুলোকে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালনার যে সুপারিশ সর্বশেষ ইউজিসি‘র প্রতিবেদনেও উল্লেখ করা হয়েছে তাতেও বাস্তবিক কোনো সমাধান আনবে না। এ জন্য নেতৃবৃন্দ ঐতিহ্যবাহী কলেজগুলোসহ জেলায় জেলায় পুর্ণাঙ্গ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করে কলেজগুলোকে পরিচালনার দাবি জানান।