বাক-ব্যক্তিস্বাধীনতা ও জনজীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত কর
গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা কেন্দ্রীয় পরিচালনা পর্ষদের উদ্যোগে ১ মার্চ ২০১৫, রবিবার, বিকাল ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবিলম্বে ‘অভিজিৎ রায়ের ঘাতকদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে’ একটি সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক এবং গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশারেফা মিশু, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)-র কেন্দ্রীয় নেতা মানস নন্দী এবং বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহবায়ক হামিদুল হক।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ আজ নাগরিকদের জন্য কতটা অনিরাপদ হয়ে পড়েছে, তার সর্বশেষ দৃষ্টান্ত বইমেলার অজস্র মানুষের মাঝে বহু পুলিশের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মত স্থানে অভিজিৎ রায়ের হত্যাকান্ড। স্বাধীন মত প্রকাশের দায়ে এই দেশে হুমায়ুন আজাদের মতই প্রায় একই স্থানে প্রাণ দিলেন অভিজিৎ রায়। নেতৃবৃন্দ অভিজিৎ রায়ের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করে অবিলম্বে খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
বক্তারা প্রশ্ন উত্থাপন করে বলেন, অভিজিৎ রায়কে মৌলবাদী শক্তিগুলো যে হত্যার তালিকায় রেখেছে, তা বহুবার প্রচারিত হয়েছে। অথচ তাকে নিরাপত্তা দেয়ার কোন উদ্যোগ নেয় নি। অন্যদিকে তার হত্যার সময়েও তারা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। ঘাতকদের তারা পালিয়ে যেতে দিয়েছে। বক্তারা জানতে চান, পুলিশ কি ধরে নিয়েছিল যে, সরকারী ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ কোন শত্রুকে শায়েস্তা করছে, অথবা তাদের দুই পক্ষের মাঝে সংঘর্ষ বেধেছে? পুলিশের এই ভূমিকা অপরাধ সংঘটিত হতে দেয়ার গুরুতর অবহেলা থেকে বোঝা যায় বাংলাদেশের নাগরিকেরা কোন পরিস্থিতিতে বসবাস করছেন।
বক্তারা আরও বলেন, সরকার একদিকে হেফাজতের মত শক্তিকে নানানভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে, তেমনি এখন পর্যন্ত এ দেশে কোন সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার হয়নি, বিচার হয় নি এই ধরনের কোন হত্যাকান্ডের ঘটনায়। এর মধ্য দিয়ে মৌলবাদী চক্রকে পেলেপুষে সরকারগুলো প্রমাণ করেছে যে, তারাও এদের সহযোগী শক্তি।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, একদিকে বর্তমান অনির্বাচিত সরকার ক্রসফায়ার আর নিপীড়নের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক সঙ্কটকে জোর করে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে, অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াতের অবরোধের নামে পেট্রোল বোমার আগুনে ঝলসে যাচ্ছে মানুষ। এরই মাঝে দুইপক্ষই তাদের বাহুবল শক্তিশালী করার নামে মৌলবাদীদের তোয়াজ করে চলছে, আর এই সুযোগেই এই শক্তিগুলোও নিজেদের উদ্দেশ্য হাসিল করে নিচ্ছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, জনগণের সংগঠিত আন্দোলনই কেবল পারে মৌলবাদী শক্তিগুলোকে দমন করে মুক্তচিন্তা, মুক্ত সংস্কৃতি ও প্রগতিশীল চেতনার বিকাশের উপযোগী সমাজ গড়ে তুলতে।