গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার উদ্যোগে ধান, গম ও ভূট্টার ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করার দাবিতে ও দেশে পর্যাপ্ত মজুত থাকার পরও ভারত থেকে শুল্কমুক্ত চাল আমদানির প্রতিবাদে এবং থাইল্যান্ড-মালয়েশিয়ায় মানব পাচার-হত্যাকান্ডের বিচারের দাবিতে ১৬ মে শনিবার ঢাকাসহ সারাদেশে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে বিকাল ৪.৩০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাম মোর্চার সমন্বয়ক গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশুর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী)-র কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের কেন্দধীয় সম্পাদকম-লীর সদস্য অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, গণসংহতি আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়কারী এড. আবদুস সালাম, বাসদ (মাহবুব) নেতা মহিনউদ্দিন লিটন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক প্রমুখ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, “ধানের বাম্পার ফলন ফলিয়েও কৃষকের ঘরে আজ আহাজারি চলছে। বাজারে ধান-ভুট্টার দাম এতই কম যে, লাভ তো দুরের কথা উৎপাদন খরচের চাইতে মনপ্রতি ২০০ টাকা লোকসান দিয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে। সরকারের মূল্য নির্ধারণ ও ধান ক্রয়ের ঘোষণা প্রহসনে পরিণত হয়েছে। কারণ সরকার যখন ধান ক্রয় করবে, তখন কৃষকের ঘরে ধান থাকবে না এবং যে পদ্ধতিতে ক্রয় করবে, তাতে কৃষক বিক্রি করতে পারবে না। ফলে ধান ক্রয়ের সরকারী বরাদ্দ লুটপাঠ হয়ে যাবে এবং বরাবরই তাই যায়। একদিকে কৃষককে চড়া দামে সার-বীজ-কীটনাশকসহ কৃষি উপকরণ কিনতে হয়, অপরদিকে ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে হতে হয় বঞ্চিত। এভাবে ক্রমাগত সে সর্ব ̄শ্বান্ত হয়। অথচ, সরকারী উদ্যোগে হাটে হাটে ক্রয়কেন্দ্র খুলে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ফসল ক্রয় এবং ধান ভুট্টার জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে গোডাউন এবং আলুসহ সবজি সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় কোল্ডস্টোরেজ সরকারীভাবে নির্মাণ করে কৃষকদের ন্যায্য মূল্য পাওয়ার সমস্যা সমাধান সম্ভব।”
বিদেশে পাঠানোর নামে থাইল্যান্ডে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়ের সাথে জড়িত মানব পাচারকারী রাজনৈতিক-ব্যবসায়ী সন্ত্রাসী চক্রের অবিলম্বে গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানিয়ে বাম মোর্চার নেতৃবৃন্দ বলেন, “প্রশাসনের নাকের ডগায় দীর্ঘদিন ধরে অসহায় কর্মহীন মানুষকে প্রলুব্ধ করে পাচারের মাধ্যমে একদিকে দাসব্যবসা, অন্যদিকে মুক্তিপণ আদায় ও হত্যা চললেও সরকার কোন ব্যবস্থা নেয়নি। যা বাস্তবে এসব নিষ্ঠুরতম অন্যায়কারীদের মদদ দেয়ার সামিল। সম্পূর্ণভাবে সরকারকেই এর দায়-দয়িত্ব নিতে হবে।” নেতৃবৃন্দ সাগরে ভাসমান বিপন্ন বাংলাদেশীদের আশ্রয় দিতে থাইল্যান্ড-মালেশিয়া সরকারকে অনুরোধ জানাতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান এবং তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাবস্থা করার দাবি জানান।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।