সিলেটে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ও বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের স্মারকলিপি পেশ
সারাদেশে নারী নির্যাতন ও লাঞ্ছনার প্রতিবাদে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট এবং বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের উদ্যোগে ১৫ জুন ২০১৫, ৫ দফা দাবিতে, সিলেটে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি পেশ করা হয়। তার পূর্বে জিন্দাবাজার থেকে মিছিল শুরু হয়ে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে ডিসি ভবনের সামনে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, সিলেট নগর শাখার সভাপতি রেজাউর রহমান রানার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক রুবাইয়াৎ আহমেদের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র সিলেট জেলা শাখার সংগঠক ইশরাত রাহী রিশতা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সিলেট নগর শাখার স্কুল বিষয়ক সম্পাদক লিপন আহমেদ শাবিপ্রবি শাখার সাধারণ সম্পাদক অপু কুমার দাস, সদস্য প্রসেনজিৎ রুদ্র, নগর শাখার দপ্তর সম্পাদক মিজানুর রহমান, অর্থ সম্পাদক রুবেল মিয়া প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে ডিসি’র মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর গণস্বাক্ষর সম্বলিত স্মারকলিপি পেশ করা হয়। সিলেটের জেলা প্রশাসক মোঃ শহিদুল ইসলামের পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাবেরা আক্তার। সিলেট শহরের সকল প্রধান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থানে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ এবং নারী নির্যাতন বিরোধী প্রকাশনা বিক্রির মাধ্যমে মতামত গড়ে তোলা হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে সংঘটিত নারীর উপর সহিংসতা ও আক্রমণের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী নারীসমাজসহ সর্বস্তরের মানুষকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। এখনও পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি-তে সংঘটিত নারী লাঞ্ছনার বিচারকার্যে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি ঘটেনি। বরং দেশের চলমান অগণতান্ত্রিক পরিবেশের মধ্যে বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি তার কারণে একে একে ঘটনা বেড়েই চলেছে। উপরন্তু সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্তা ব্যক্তিরা মৌলবাদী শক্তিগুলোর মতই মেয়েদের বাইরে থাকা নিয়ে, পোশাক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। যেন মেয়েদের চলাফেরাই এই সমস্যার কারণ। এটি বাস্তবে অন্যায়কারীদের রক্ষা করারই আরেকটি কৌশল। এ রকম পরিস্থিতিতে অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
নারীর শ্রদ্ধা-সম্মান ক্রমাগত ভূলুণ্ঠিত হওয়ার পরিবেশ অব্যাহত রেখে একটি দেশ কখনই এগোতে পারে না। ছেলে-মেয়েরা তাদের শিক্ষার পাশাপাশি কোন সুস্থ বিনোদনের সুযোগ না পেয়ে পর্নোগ্রাফি-মাদকে বিনোদনের পথ খুজছে। নাটক-সিনেমা-বিজ্ঞাপনে নারী দেহকে অশ্লীলভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। এই ধরনের সামাজিক আয়োজন প্রতিদিন নারী নির্যাতকের জন্ম দিচ্ছে। এগুলো বন্ধ না হলে নারী লাঞ্ছনার ঘটনা প্রতিরোধ করা যাবে না। কাজেই নৈতিকতা বিরোধী এসকল কর্মকা- যা শুধুমাত্র বাণিজ্যের ফায়দা লোটার জন্য প্রচলিত হয়েছে তা এই মূহুর্তে বন্ধ করতে হবে। এর বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলতে হবে।