সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগে অর্থনীতি বিভাগে সান্ধ্যকালীন কোর্সের পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচিতে ২৬ জুন ২০১৫ সকাল ৯টায় ছাত্রলীগ ও পুলিশ দফায় দফায় হামলা করে। জবি শাখার সভাপতি মাসুদ রানার সভাপতিত্বে ও দপ্তর সম্পাদক প্রসেনজিৎ সরকারের পরিচালনায় অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক শরীফুল চৌধুরী, জবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক কিশোর সরকার, প্রচারও প্রকাশনা সম্পাদক কৃষ্ণ বর্মন, অর্থ সম্পাদক তিথি চক্রবর্তী। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক মলয় সরকার।
অবস্থান কর্মসূচিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, বাণিজ্যিক সান্ধ্যকালীন কোর্স চালুর সিদ্ধান্তের শুরু থেকেই আমরা ধারাবাহিক ভাবে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি।এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ২৭/৪ ধারা বাতিল করেছিল। সান্ধ্যকালীন কোর্স চালু হলে বিশ্ববিদ্যালয়কে একবেলা পাবলিক, একবেলা প্রাইভেট এ পরিণত হবে। শিক্ষা সম্পর্কিত বাণিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করবে।
অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রলীগের সভাপতি সিরাজ ও সাধারণ সম্পাদক এম এ মমিনের নেতৃত্বে প্রথম হামলা করে ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ। এই হামলা মদদ প্রদান করে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ড. আইনুল হক ও ইশতিয়াক সেলিম।
পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর পুলিশ বাহিনী নিয়ে এসে উপস্থিত হন। প্রক্টর নেতৃত্বে দিয়ে পুলিশ এবং ছাত্রলীগ দিয়ে অবস্থানরত ছাত্র ফ্রন্ট কর্মীদের উপর হামলা চালান। প্রক্টর এসময় পুলিশকে বলেন, “ ছাত্র ফ্রন্টের কর্মীদের মেরে সরিয়ে দিন”।
পরবর্তীতে ছাত্র ফ্রন্টের নেতা-কর্মীদের অবস্থানের ফলে অর্থনীতি বিভাগের পেছনের গেট দিয়ে পরীক্ষার্থীদের ঢুকানোর চেষ্টা করেন। অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে প্রক্টর ছাত্রলীগ কর্মীদের দিয়ে ছাত্র ফ্রন্টের এক কর্মীর হামলার ছবি সম্বলিত মোবাইল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
ছাত্রলীগ এবং পুলিশের হামলায় আহত হন জবি শাখার প্রচারও প্রকাশনা সম্পাদক কৃষ্ণ বর্মন, দপ্তর সম্পাদক প্রসেনজিৎ সরকার, সহ সম্পাদক আইরিন সুলতানা মিথুন, স্কুল বিষয়ক সম্পাদক সমিত ভৌমিক, সদস্য অনিমেষ রায়, শরীফুল ইসলাম।
অবস্থান কর্মসূচি শেষে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়। সমাবেশে নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানান।
জবিতে বাণিজ্যিক নাইটকোর্স বন্ধের দাবিতে পালিত অবস্থান কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসী, পুলিশ ও প্রক্টরের বর্বর হামলার তীব্র নিন্দা ও বিচার দাবি
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুজ্জামান সাকন এবং সাধারণ সম্পাদক স্নেহাদ্রি চক্রবর্ত্তী রিন্টু এক যুক্ত বিবৃতিতে ২৬ জুন ২০১৫ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বাণিজ্যিক নাইটকোর্স বন্ধের দাবিতে সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগে পালিত অবস্থান কর্মসূচিতে দফায় দফায় ছাত্রলীগ সন্ত্রাসী, পুলিশ ও প্রক্টরের বর্বর হামলার তীব্র নিন্দা ও বিচার দাবি করেছেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বাণিজ্যিক সান্ধ্যকোর্স চালু করে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় বানিয়ে গরীব-নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানের উচ্চ শিক্ষার দ্বার বন্ধের চক্রান্তের প্রতিবাদে সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ধারাবহিকভাবে আন্দোলন করে আসছে। বাণিজ্যিক নাইটকোর্স চালু হলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মৌলিক চরিত্রকে কলুষিত করা হবে। প্রশাসন যৌক্তিক আন্দোলনের সামনে নৈতিকভাবে দাঁড়াতে না পেরে আজ পূর্ব ঘোষিত অর্থনীতি বিভাগের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে প্রক্টরের নেতৃত্বে পুলিশ আর সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে হামলা করে গায়ের জোরে আন্দোলনকে দমন করার অপচেষ্টা করেছে। হামলা করে এ আন্দোলনকে বন্ধ করা যাবে না। সংগঠনের নীতিনিষ্ঠ নেতা-কর্মীরা বাণিজ্যিকীকরণবিরোধী এ আন্দোলন অব্যাহত রাখবে।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে হামলার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার ও শাস্তি দাবি করেন। একই সাথে বাণিজ্যিক নাইটকোর্স বন্ধের জোর দাবি জানান।