মহান সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের ৯৮তম বার্ষিকী ও ৩৫তম পার্টি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বাসদ (মার্কসবাদী) ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে ১৩ নভেম্বর শুক্রবার বিকাল ৪টায় পুরানা পল্টনস্থ শহীদ তাজুল মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। মহানগর সংগঠক ফখরুদ্দিন কবির আতিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় মূল বক্তব্য রাখেন বাসদ(মার্কসবাদী) সাধারণ সম্পাদক ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী। আরো বক্তব্য রাখেন পার্টির কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য জননেতা কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী, উজ্জ্বল রায়, সাইফুজ্জামান সাকন। সভা শুরুর আগে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গণসঙ্গীত পরিবেশন করে।
কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বলেন, ১৯১৭ সালের ৭ নভেম্বর মহান লেনিনের নেতৃত্বে বিপ্লবের মাধ্যমে শ্রমিকশ্রেণী রাশিয়ায় সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিল। সমাজতন্ত্র মানুষের সত্যিকার গণতন্ত্র, মৌলিক মানবিক অধিকার প্রতিষ্ঠা, বিজ্ঞান-সাহিত্য-দর্শনসহ সার্বিক বিকাশের পথ খুলে দিয়ে মানবসভ্যতার সামনে এক অনন্য নিদর্শন প্রতিষ্ঠা করেছিল। কিন্তু আজ সারা বিশ্বব্যাপী সাম্রাজ্যবাদী-পুঁজিবাদী শাসকরা জনগণের সমস্ত রকম অধিকার হরণ করছে। আমাদের দেশেও পুঁজিপতি শ্রেণী মুক্তিযুদ্ধের সমস্ত আকাঙ্খা-চেতনাকে পদদলিত করে জনগনের উপর নির্মম শোষণ-নির্যাতন চালাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে বর্তমান মহাজোট সরকার একচেটিয়া পুঁজিপতি শ্রেণীর স্বার্থে দেশে ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠার চক্রান্ত করছে।
তিনি আরও বলেন, দেশে একের পর এক হত্যাকান্ড ঘটছে এবং কোন ঘটনার সঠিক বিচার হচ্ছে না। সব ব্লগারদের দৃষ্টিভঙ্গি আমরা সঠিক মনে করি না, কিন্তু শুধুমাত্র ভিন্নমত প্রকাশের জন্য তাকে হত্যা করা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। জনগণের নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব পালন না করে এসব হত্যাকান্ড থেকে সরকার দলীয় ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে। সরকার, বিরোধীদল ও সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠী সবাই মৌলবাদীদের ব্যবহার করার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। পরিশেষে তিনি বলেন, জনগণের সকল দুর্দশা থেকে মুক্তির একমাত্র পথ কার্যকর গণআন্দোলনের মাধ্যমে এ সমাজের পরিবর্তন।
কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, সরকার সকল প্রকার বিরুদ্ধ মত এবং জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলন ফ্যাসিবাদী কায়দায় দমন করছে। বুর্জোয়া রাজনীতির অপর অংশ যারা বিরোধী রাজনৈতিক জোটে আছে তারা যেন-তেন উপায়ে ক্ষমতায় যাওয়ার রাস্তা খুঁজছে, কিন্তু জনজীবনের সংকট নিয়ে তাদের কোন ভাবনা নেই। তথাকথিত বামপন্থীরা কেউ ক্ষমতায় থেকে ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনকে সহায়তা করছে, কেউ ফ্যাসিবাদী শাসকদের বন্ধু মনে করে আচরণ করছে। মৌলবাদী শক্তি ক্রমাগত বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এ অবস্থায় দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষার জন্য সঠিক বামপন্থী শক্তির নেতৃত্বে গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
শেষে কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনাল গাওয়ার মধ্য দিয়ে সভা সমাপ্ত হয়।