রেডিমেড পোশাক দর্জি শ্রমিকদের মজুরি হার বৃদ্ধি করা, মাস শেষে পাওনা পরিশোধ, উৎসব বোনাস, নিয়োগপত্রসহ দর্জি শ্রমিকদের অন্যান্য দাবিতে বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে ৭ ফেব্রুয়ারি রবিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শ্রমিক সমাবেশ ও পরে মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের ঢাকা মহানগর সংগঠক ফখ্রুদ্দিন কবির আতিক, বক্তব্য রাখেন শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শ্রমিক নেতা জহিরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল রায়, রাজীব চক্রবর্ত্তী, সদরঘাট এলাকার রেডিমেড দর্জি শ্রমিক নেতৃবৃন্দ মামুন খান, আবীর মাহমুদ, আরিফ হোসেন, মকবুল হোসেন, আবুল কালাম, মুজিবুর রহমান, আনোয়ার হোসেন, জাকির হোসেন প্রমুখ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, সারাদেশের সাধারণ মানুষ মার্কেট থেকে কমদামের যেসব দেশি রেডিমেড পোশাক কেনেন তার বেশিরভাগ তৈরি ও সরবরাহ হয় পুরনো ঢাকা ও কেরানিগঞ্জ থেকে। এখানকার পাইকারি ব্যবসায়ীরা নিজস্ব কারখানায় শ্রমিক খাটিয়ে রেডিমেড পোশাক উৎপাদন করায়। পুরোনো ঢাকার সদরঘাট, কেরানীগঞ্জ, গুলিস্থান, সাইনবোর্ডসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বহুতল ভবনে ছোট ছোট রুমে ২০/৩০ জন শ্রমিক নিয়ে গড়ে উঠেছে এক একটি কারখানা। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, গত ১৫ বছরে এই শ্রমিকদের মজুরি বাড়েনি। রেডিমেড দর্জি শ্রমিকরা বেশিরভাগ প্রোডাকশন ভিত্তিতে কাজ করে। তারা প্রতি পিস প্লেন ফুল শার্ট সেলাই বাবদ মাত্র ১৩ টাকা আর হাফ শার্ট সেলাইয়ে মাত্র ১১ টাকা মজুরি পায়। অথচ এইসব শার্ট খুচরা বাজারে গড়ে ২০০-২৫০ টাকা দামে বিক্রি হয়। গত ১৫ বছরে চাল-ডাল-নুন-তেল, বাড়ি ভাড়া-গাড়ি ভাড়া বাড়লেও বাড়েনি এই শ্রমিকদের মজুরির হার। শ্রমিকদের দাবি, ফুল শার্ট সেলাই ৩০ টাকা এবং হাফ শার্ট সেলাই ২৫ টাকা মজুরি নির্ধারণ করতে হবে।
সমাবেশ থেকে আরো দাবি জানানো হয় – মাসিক মজুরি মাস শেষে পরিশোধ করতে হবে। কাজের মাঝে নাস্তার ব্যবস্থা, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে হবে। ঈদ বা উৎসব বোনাস, সিজন বেনিফিট দিতে হবে। কারখানার স্বাস্থ্যসম্মত কর্মপরিবেশ, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা-প্রশস্ত সিঁড়ি নিশ্চিত করতে হবে। শ্রমিকদের নিয়োগপত্র-পরিচয় পত্র দিতে হবে, বিনা নোটিশে ছাঁটাই করা চলবে না। শ্রম আইন অনুসারে প্রাপ্য সকল অধিকার রেডিমেড দর্জি শ্রমিকদের দিতে হবে।