Sunday, November 24, 2024
Homeসংবাদ ও প্রেস বিজ্ঞপ্তিপার্টি ও সংগঠন সংবাদআন্তর্জাতিক নারী দিবসে সিলেটে মিছিল ও নারী সমাবেশ অনুষ্ঠিত

আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সিলেটে মিছিল ও নারী সমাবেশ অনুষ্ঠিত

অশ্লীলতা-অপসংস্কৃতি ও নারী-শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে

ddddd copy 2
৮ মার্চ, ১০৬তম মহান আন্তর্জাতিক নারী দিবস। এই দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে ভাজপত্র ‘বিজয়া’ উন্মোচন, মিছিল ও নারী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ৮ মার্চ বিকাল ৩.৩০ টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাজপত্রের উন্মোচন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ভাজপত্র উন্মোচন করেন বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রাণী ভট্টাচার্য সোমা। ভাজপত্র উন্মোচন শেষে শহীদ মিনার থেকে মিছিল শুরু হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কোর্ট পয়েন্টে সমাবেশে মিলিত হয়। বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র সিলেট জেলা শাখার সংগঠক ইশরাত রাহী রিশতার পরিচালনায় এবং তামান্না আহমেদের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রাণী ভট্টাচার্য সোমা, সিলেট জেলা শাখার নেতা লক্ষ্মী পাল।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ আমেরিকার নিউইয়র্কের সুতা কারখানায় নারী শ্রমিকরা উপযুক্ত বেতন, কাজের উন্নত পরিবেশ ও দশ ঘন্টা কর্মদিবসের দাবিতে আন্দোলনে নামে। নারী শ্রমিকদের আন্দোলন দমন করার জন্য পুলিশ মিছিলের ওপর গুলি চালায়। সম্ভবত এটাই প্রথম। এতে আহত ও গ্রেফতার হয় অসংখ্য নারী শ্রমিক। তারই ধারাবাহিকতায় আসে ১৮৮৬ সালের মহান মে দিবসের রক্তাক্ত শ্রমিক অভ্যুত্থান। ১৯০৭ সালে জার্মানির স্টুটগার্ডে প্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯০৮ সালে ভোটাধিকারের দাবিতে নিউর্ইয়কের নারী দর্জি শ্রমিকরা বিভিন্ন কারখানায় কর্মবিরতি এবং ধর্মঘট পালন করে। ঐতিহাসিক এই আন্দোলনের ফলে ১৯০৯ সালে নারী শ্রমিকদের সভায় নারীর ভোটাধিকারের দাবি প্রস্তাব হিসেবে গ্রহণ করা হয়। নারী আন্দোলনের এই চেতনাকে ধরে রাখার জন্য ১৯১০ সালে ডেনর্মাকের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত কমিউনিস্টদের ২য় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ক্লারা জেটকিন ঐতিহাসিক ৮ মার্চকে ‘নারী দিবস’ ঘোষণার প্রস্তাব করেন, যা কমরেড লেনিনের উৎসাহে ও উদ্যোগে গৃহীত হয়। তারপর থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বামপন্থীদের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন শুরু হয় এবং ক্রমে দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়তে থাকে।

বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র প্রতিবছর এই দিবসটি পালন করে। কিন্তু যে সময় এই নারী দিবস পালিত হচ্ছে সে সময় নারী দিবসের ইতিহাসকে ম্লান করে দেয়ার জন্য বাহারি পণ্যের ব্যবসা চলছে। বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র নারীদিবসের চেতনার বিরুদ্ধে এই সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে দৃঢ় প্রত্যয়ী। একই ভাবে নারী দিবসের সাথে যে শোষণ মুক্তির ইতিহাস জড়িয়ে আছে সে চেতনাকে ভয় পায় পুঁজিবাদী-সা¤্রাজ্যবাদী শাসকশ্রেণী। আমাদের দেশের শাসকগোষ্ঠীর চরিত্রও এর ব্যতিক্রম নয়। বর্তমান সরকার একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করে নারীসহ সকল মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারকে শুধু ক্ষুন্নই করেনি বিপন্ন করেছে। রাষ্ট্রীয় এই শোষণ নিপীড়নর মধ্যে নারীদের জীবনের দৈন্যদশা আরো বেড়ে যায় ৮০ ভাগ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী গার্মেন্ট শ্রমিকদের সিংহভাগ নারী। তাদের নেই ন্যূনতম মজুরি, নেই নিরাপদ কর্মপরিবেশ, নেই মাতৃত্বকালীন ছুটি। প্রায় ২০ লাখেরও বেশি শ্রমিক গৃহকর্মে ১২-১৬ ঘণ্টা শ্রম দেয়। চা শ্রমিক হিসাবে যে নারীরা কাজ করে তাদের রয়েছ মজুরি বৈষম্য। সম্পত্তিতে নারীদের সমঅধিকার নিশ্চিত হয়নি। নারী নির্যাতন-পাচার, হত্যা, খুন, ধর্ষণ, গণধর্ষণ, যৌতুকের কারণে হত্যা, অশ্লীল ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে অসংখ্য নির্যাতনের ঘটনা ঘটে চলেছে প্রতিদিন। নারী জীবনের এই শোষণ বঞ্চনা অপমানের হাত থেকে মুক্তির একমাত্র পথ হল শোষণ-বৈষম্য থেকে মুক্তি। বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র নারী দিবসের চেতনাকে ধারণ করে সকল ধরণের শোষণ-বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম পরিচালনা করছে।

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments