বেশ কিছুদিন ধরে কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী উচ্চাকাঙ্ক্ষার বশবর্তী হয়ে চাইছিলেন তিনি যে সাধারণ সম্পাদকের পরে সর্বোচ্চ নেতা হবেন তার স্বীকৃতি দল দিক। স্বাভাবিকভাবেই বাসদ (মার্কসবাদী)’র মতো একটি মার্কসবাদী-লেনিনবাদী দলে এ ধরনের অমার্কসবাদী নীতি কার্যকরী করা সম্ভব ছিল না। সেকারণে তাঁর প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। গত দুই বছর ধরে নানান বিষয়ে তিনি দলের ঘোষিত লাইন ও মূলনীতির বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন এবং দলের সকল শৃঙ্খলা ও নিয়ম-নীতি অগ্রাহ্য করে নীচের স্তরে ক্ষোভ-বিক্ষোভ ছড়াতে থাকেন। বহিস্কৃত ১৬ জনের সঙ্গে চক্রান্তমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়ে তিনি একটি অশুভ কোটারি গড়ে তুলেন। এই বহিস্কৃত কমরেডদের কেউ কেউ ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত দলের বিশেষ কনভেনশনে কেন্দ্রীয় কার্যপরিচালনা কমিটিতে স্থান না পেয়ে।
কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তীকে কারণ দর্শাও নোটিশ ও ১৬ জনের বহিষ্কার প্রসঙ্গে দলের বক্তব্য
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)-এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী আজ এক বিবৃতিতে বলেন, “গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় কার্যপরিচালনা কমিটির বৈঠকে নির্ধারিত ফোরামের ১৬ জন সদস্যকে দলবিরোধী কার্যকলাপ ও উপদলীয় চক্রান্তের অভিযোগে দল থেকে বহিস্কার করা হয়। একইসাথে দলবিরোধী চক্রান্তমূলক কার্যকলাপের অভিযোগে কেন্দ্রীয় কার্যপরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়।
বাসদ (মার্কসবাদী) বাংলাদেশের বুকে একটি যথার্থ মার্কসবাদী-লেনিনবাদী দল হিসেবে গড়ে উঠছে। গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতার নীতি অনুসরণ করে দল কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী ও তাঁর সহযোগীদের আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ঐক্য বজায় রাখার সমস্ত সুযোগ দেয়। অথচ সবরকম সুযোগ অগ্রাহ্য করে তাঁরা দলের শ্রেণিচরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেন এবং বেপরোয়াভাবে দলের অভ্যন্তরে বিশেষ করে নিচের স্তরে বলতে থাকেন যে, দল তার বিপ্লবী চরিত্র হারিয়েছে। আরও এক পা এগিয়ে তারা দাবি করেন, দল যেহেতু আদর্শচ্যুত, সেহেতু কেন্দ্রীয় কমিটি ও দলকে ভেঙে দিতে হবে। এরপর দলের পক্ষ থেকে তাদের বহিস্কার করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না।
আমরা মনে করি, পার্টি নেতৃত্ব ও কেন্দ্রীয় কার্যপরিচালনা কমিটিকে খারিজ করে দলের অভ্যন্তরের পরিবেশ বিষিয়ে তোলা ও সামাজিক মাধ্যমে নানা নিম্নরুচির প্রচার শুধু বিপ্লবী দলের ক্ষেত্রে নয়, সামগ্রিক বাম আন্দোলনের জন্যও ক্ষতিকারক। বাসদ (মার্কসবাদী) মার্কসবাদ-লেনিনবাদ ও কমরেড শিবদাস ঘোষের চিন্তাধারা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে একটি সর্বহারা শ্রেণির বিপ্লবী দল হিসেবে শোষিত-মেহনতী মানুষের মুক্তির সংগ্রাম পূর্বের মতোই অব্যাহত রাখবে।”