Monday, April 29, 2024
Homeফিচারনির্বাচন কমিশনের বক্তব্য দায়িত্বজ্ঞানহীন ও জনস্বাস্থ্যবিরোধী

নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য দায়িত্বজ্ঞানহীন ও জনস্বাস্থ্যবিরোধী

বাসদ (মার্কসবাদী) চট্টগ্রাম জেলা কমিটির আহবায়ক ও সদস্য সচিব যথাক্রমে কমরেড মানস নন্দী ও শফি উদ্দিন কবির আবিদ আজ ২০ মার্চ,২০২০ সংবাদপত্রে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে, করোনা মহামারীর মধ্যেও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হবে এই মর্মে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বজ্ঞানহীন ও জনস্বাস্থ্যবিরোধী ঘোষণায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা অবিলম্বে এ নির্বাচন বাতিলের আহবান জানিয়েছেন।

নেতৃবৃন্দ বিবৃতিতে বলেন, “করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ খুব ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে বলে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করেছে। গোটা দেশের মধ্যে চট্টগ্রাম সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে আছে। গণমাধ্যমে এই খবর বারবার এসেছে। ইতিমধ্যেই দেশে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সরকার করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সমস্ত জনসমাগম, সভা, সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে। অথচ এই জরুরী পরিস্থিতির মধ্যেও নির্বাচন কমিশন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছে- যা চূড়ান্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন ও জনস্বাস্থ্যবিরোধী আমলাতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত। সমস্ত ধরণের জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও আজ আড়াই হাজার নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে ফেলে নির্বাচনের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। মোট ষোল হাজার কর্মকর্তাকে আগামী ২৫ মার্চ পর্যন্ত এভাবে জমায়েত করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও যেখানে বলতে বাধ্য হয়েছে, ইভিএম মেশিনে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়বে, সেখানে সরকার ও সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন সব সতর্কবার্তা উপেক্ষা করে নির্বাচন করার একগুঁয়ে মনোভাব প্রদর্শন করছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন সচিব এদেশে করোনা মহামারী আকারে হবেনা, হাত ধুঁয়ে ভোট দিবেন-ইত্যাদি দায়িত্বহীন ও বালখিল্য বক্তব্য সমানে দিয়ে যাচ্ছেন।

এ সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবেনা-জনমনে এ আস্থাহীনতা আছে। ফলে এই মহামারী পরিস্থিতি না থাকলেও এ নির্বাচন বাস্তবে ভোটারশূণ্য হতো। ভোটারশূণ্য থাকলেও, সংক্রমণের আতঙ্ক নিয়ে নির্বাচনের দিন ষোল হাজার কর্মকর্তা, শত শত সাংবাদিক, হাজার হাজার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যকে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে হবে। পেশাগত দ্বায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এ হাজার হাজার মানুষ সংক্রমিত হলে, তার দায়দায়িত্ব কে নেবে? চট্টগ্রাম শহরকে সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে ফেলার অধিকার নির্বাচন কমিশনকে কে দিল? পুরো জনগোষ্ঠী যখন মারাত্মক একটি ছোঁয়াছে রোগের সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে আছে, তখন পৃথিবীর কোন সভ্য দেশে এধরণের নির্বাচনের নজির আছে কিনা আমাদের জানা নেই। ভোট ডাকাতির নির্বাচন মঞ্চস্থ করে বর্তমান নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যেই চূড়ান্ত ব্যর্থ ও জনগণের সমস্ত বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। তাই নির্বাচনে ভোটার শূণ্যতাকে করোনা আতঙ্কের ফলাফল হিসাবে দেখানোর দুরভিসন্ধিমূলক পরিকল্পনা থেকেই যে নির্বাচন কমিশন এ অনড় অবস্থান নিয়েছে,তা অবস্থাদৃষ্টে স্পষ্ট। তারপরও আমরা জোর দাবি জানাই, এ দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে জনস্বার্থ বিবেচনা করে সরকার ও নির্বাচন কমিশন অবিলম্বে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত বাতিল করবেন।“

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments