Friday, April 26, 2024
Homeসংবাদ ও প্রেস বিজ্ঞপ্তিপার্টি সংবাদফিদেল কাস্ত্রোর মৃত্যুতে সিলেটে শোক শোভাযাত্রা ও স্মরণসভা অনুষ্ঠিত

ফিদেল কাস্ত্রোর মৃত্যুতে সিলেটে শোক শোভাযাত্রা ও স্মরণসভা অনুষ্ঠিত

img20161204155350-copy-2

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) সিলেট জেলা উদ্যোগে কমরেড ফিদেল কাস্ত্রোর মৃত্যুতে ৪ ডিসেম্বর ’১৬, রবিবার, বিকাল ৪ টায় নজরুল একাডেমীতে স্মরণসভার অনুষ্ঠিত হয়। এই সভার আগে এক শোক র‌্যালি সিলেট রেজিস্টারি মাঠ থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে নজরুল একাডেমীতে শেষ হয়। এর পর বাসদ (মার্কসবাদী), বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন, বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, শিশু কিশোর মেলা সিলেট জেলার পক্ষ থেকে ফিদেল কাস্ত্রোর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলার সদস্য এ্যাডভোকেট হুমায়ুন রশীদ সোয়েব এবং পরিচালনা করেন সদস্য সুশান্ত সিনহা সুমন। সভায় বক্তব্য রাখেন গণতন্ত্রী পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ব্যারিষ্টার মোঃ আরশ আলী, সিলেট জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রকৌশলী আইয়ুব আলী প্রমুখ। সভার শুরুতে প্রয়াত এই নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন করা হয়। এছাড়া কমরেড ফিদেল কাস্ত্রোর জীবন সংগ্রামের উপর দলের পক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি পত্র পাঠ করেন রুবাইয়াৎ আহমেদ।

বক্তারা বলেন, গত ২৬ নভেম্বর সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী আন্দোলনের বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর ও কিউবা সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের নেতা কমরেড ফিদেল কাস্ত্রো মৃত্যুবরণ করেছেন। তার মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের নেতৃত্বে বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদী শিবিরের ভীতি প্রদর্শন, ষড়যন্ত্র এবং আক্রমনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে কিউবায় সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং তাকে রক্ষার সংগ্রামে প্রসংশনীয় নেতৃত্বকারী ভূমিকা পালন করেছিলেন এই বীর কমিউনিস্ট বিপ্লবী নেতা।

কমরেড ফিদেল একটি ভাষনে বলেছিলেন, “জনগণ যদি তার অধিকার অর্জনের সংগ্রামে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়, তবে কোন অস্ত্র, কোন আক্রমন-অত্যাচারই তাকে পরাস্ত করতে পারেনা।” আজীবন একথার স্বাক্ষর তিনি রেখেছেন কিউবার জনগণের সকল সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে। তাই ১৯৫৬ সালে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত কিউবার স্বৈরাচারী শাসক বাতিস্তার বিরুদ্ধে এক সভায় ফিদেল শপথ করেন- ‘আমরা হয় কিউবার স্বাধীনতা অর্জন করব, না হয় শহিদ হব।’ ১৯৫৩ সালে এই বিপ্লব শুরু হয়ে জয়লাভ করে ১৯৫৯ সালে। বাতিস্তাকে দেশ ছাড়া করে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল কিউবা ২৬ বছরের সেই তরুনের নেতৃত্বে।
স্বাধীন শোষণমুক্ত, মর্যাদাময় জীবন, প্রেম-প্রীতি-মানবিক গুনে সমৃদ্ধ জীবনের জন্য মানবজাতির যে সংগ্রাম, তার মূর্ত প্রতীক ছিলেন কমরেড ফিদেল। সমগ্র বিশ্বের দেশে দেশে যে শোষিত-নিপীড়িত মানুষ আজ সংগ্রামে লিপ্ত আছে, ফিদেল কাস্ত্রো তাদের পরম মিত্র। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী শাসকরা তাঁর অস্তিত্বকে এতই ভয়ের চোখে দেখেছে যে, তারা বারবার তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছে, কিন্তু পারেনি। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের নাকের ডগায় ছোট্ট দেশ কিউবাকে সাম্রাজ্যবাদবিরোধিতার দূর্গে পরিণত করেছিলেন।
অসাম্য ও বৈষম্যহীন কিউবার সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা সমগ্র লাতিন আমেরিকা ও বিশ্বের জনগণকে অনুপ্রাণিত করছে। কমিউনিস্ট বিপ্লবী হিসাবে ফিদেল আজীবন আন্তর্জাতিকতার পতাকা তুলে ধরেছেন। লাতিন আমেরিকা, আফ্রিকার দেশে দেশে দরিদ্র মানুষের জন্য কিউবার চিকিৎসক দল সর্বদা প্রস্তুত থেকেছে। আ্যঙ্গোলা, নামিবিয়ায় স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পাশে দাঁড়িয়ে লড়েছে কিউবা।
সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতিবিপ্লবী গরবাচেভ আমলেই যখন কিউবা সোভিয়েত সাহায্য বঞ্চিত হয়ে কঠিন সমস্যায় পড়ে, তখনও ফিদেল কাস্ত্রো বলেছেন, “হয় সমাজতন্ত্র, নয় মৃত্যু”- যা সমগ্র বিশ্বের বিপ্লবীদের প্রেরণা দিয়েছে।
বক্তারা বাংলাদেশের আজকের এই চরম সংকটের মুহুর্তে এই বিপ্লবী নেতার জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে পুজিবাদ-সাম্রাজ্যবাদ-ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন।

RELATED ARTICLES

আরও

Recent Comments