প্রশ্নপত্র ফাঁস ও শিক্ষা বাণিজ্যিকীকণের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলুন
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ৩১ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম নগর শাখার উদ্যেগে ২১ শে জানুয়ারি বেলা ৩টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। আরিফ মাইনুদ্দীনের পরিচালনায় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নগর শাখার সভাপতি তাজ নাহার রিপন। বক্তব্য রাখেন ছাত্র ফন্ট নগর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মিশু দত্ত, সহসভাপতি মুক্তা ভট্টচার্য, কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সত্যজিৎ বিশ্বাস, বাসদ (মার্কসবাদী) জেলা কমিটির নেতা শফিউদ্দিন কবির আবিদ।
বক্তারা বলেন , নতুন বছরের শুরুতেই সারা দেশের মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। প্রতিদিনই হরতাল অবরোধের কারণে মৃত্যু ও জীবন্ত দগ্ধ হচ্ছে আড়াই বছরের শিশু থেকে ষাট বছরের বৃদ্ধ । দ্বিদলীয় রাজনীতির সংঘর্ষে জীবন বলি হচ্ছে সাধারণ মানুষের। অন্যদিকে শিক্ষাক্ষেত্রে চলছে চরম অরাজকতা। প্রাইমারি থেকে শুরু করে উচ্চ শিক্ষা সর্বক্ষেত্রে শিক্ষা ব্যবসা চলছে রমরমা। প্রশ্নপত্র ফাঁসের মধ্য দিয়ে যে অনৈতিক চর্চা তার থেকে রেহাই পাচ্ছে না কোমলমতি শিশুরা । অন্যদিকে চট্টগ্রামে তীব্র ভর্তি সংকটে অভিভাবকরা দিশেহারা। প্রতিবছর জিপি এ ৫ পাওয়া ছাত্র সংখ্যা বাড়ছে কিন্তু বাড়ছে না নতুন সরকারি স্কুল এবং কলেজ। নগরীতে হাজার হাজার ছাত্রের বিপরীতে মাধ্যমিক স্কুল আছে মাত্র ৯টি আর সরকারি কলেজ ৬টি। এর ফলে গড়ে উঠছে বিভিন্ন বেসরকারি স্কুল কলেজ। স্কুল এখন আর পড়াশোনার মূলকেন্দ্র নয়। সৃজনশীল পদ্ধতির কথা বলে বাস্তবে গাইড এবং কোচিং নির্ভরতা বেড়েছে প্রাইমারী শিক্ষা সমাপনী ও জিইসি পরীক্ষার চাপে কোমলমতি শিশু কিশোরদের শৈশব। ভর্তি বাণিজ্য, কোচিং বাণিজ্য আর পরীক্ষায় অবৈধ বাড়তি ফি’র চাপে অসহায় অভিভাবক। এ বছর প্রায় সবকটি স্বুল কলেজেই এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে বোর্ড নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত অর্থ নেয়া হয়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সীমিত আসন সংখ্যার সুযোগে নগরীতে বাড়ছে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়। এসব বিশ্ববিদ্যালয় গুলো স্থায়ী ক্যাম্পাস, শিক্ষক সংকটসহ নানা সংকটে জর্জরিত।
বক্তারা আরো বলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় লক্ষাধিক ছাত্রের শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত রেখে নতুন আইন করে সরকারি ১৮১ টি কলেজকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় আনা হয়েছে ।শিক্ষক সংকট, ক্লাস রুম সংকটসহ পরীক্ষারহল নির্মাণ ও সেশনজট নিরসন না করে এ নতুন নিয়ম সমস্যার সমাধান করা যাবে না । শিক্ষা ধ্বংসের এ সর্বব্যাপক আক্রমণ চালিয়ে শাসকগোষ্ঠী আজ থেমে নেই। প্রতিবাদের শক্তি ছাত্র তরুণদের চরিত্রকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হচ্ছে। ব্যাপক মাদকের বিস্তার এবং বিকৃত যৌন চিন্তার প্রসার ঘটছে। বাড়ছে নারীর অবমাননা, সহিংসতা, সন্ত্রাস। তাই শিক্ষা আন্দোলনের পরিপূরক সংস্কৃতি ও মনুষ্যত্বের সংগ্রাম আজ জরুরী। সেই অঙ্গীকার নিয়ে এদেশের গৌরবোজ্জ্বল ছাত্র রাজনীতির ধারাবাহিকতায় ১৯৮৪ সালের ২১ জানুয়ারি সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এ যুগের মহান আদর্শ মার্ক্সবাদ-লেনিনবাদ-কমরেড শিবদাসঘোষের চিন্তাধারার ভিত্তিতে একটি সর্বজনীন, বিজ্ঞানভিত্তিক, সেক্যুলার, একইপদ্ধতির, গণতান্ত্রিক শিক্ষানীতির দাবিতে আমরা সেই লড়াই অব্যহত রেখেছি। সমাবেশ শেষে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।