র্যাব-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক গুম-ক্রসফায়ারের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যা অবিলম্বে বন্ধ করা, রাষ্ট্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে হত্যাসহ প্রতিটি গুরুতর অভিযোগের বিচারবিভাগীয় তদন্ত এবং নারায়ণগঞ্জে ৭ খুনের সাথে জড়িত র্যাব কর্মকর্তা ও সন্ত্রাসী-গডফাদারদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার-বিচারের দাবিতে বাসদ কনভেনশন প্রস্তুতি কমিটি রংপুর জেলা শাখার উদ্যোগে গত ১৫ মে বৃহস্পতিরবার বিকেল ৪টায় প্রেসক্লাব চত্বরে মানববন্ধন-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জেলা বাসদ সমন্বয়ক কমরেড আনোয়ার হোসেন বাবলুর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তৃতা করেন ড. মিজানুর রহমান নাসিম, জেলা কমিটির সদস্য পলাশ কান্তি নাগ, ছাত্র ফ্রন্টের জেলা সভাপতি আহসানুল আরেফিন তিতু প্রমুখ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকারের প্রশ্রয় ও মদদেই র্যাব আজ খুনী বাহিনীতে পরিণত হয়েছে এবং নারায়ণগঞ্জ সন্ত্রাসী-গডফাদারদের অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের সম্পূর্ণ দায়িত্ব সরকারের। অভিযুক্ত খুনী সরকারী দলের নেতা এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ড নেতৃত্ব দেয়া র্যাব অধিনায়ক সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রীর নিকটাত্মীয়। আজকে তাদের কর্মকাণ্ড ফাঁস হয়ে যাওয়ায় জনমতের চাপে এদের বিরুদ্ধে লোকদেখানো তদন্ত করা হচ্ছে, কিন্তু বছরের পর বছর ধরে তাদের বেআইনি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে প্রশ্রয় দেয়া হয়েছে। নারায়ণগঞ্জে কিশোর ত্বকীকে খুনের দায়ে অভিযুক্ত গডফাদার – যিনি প্রধানমন্ত্রীর মদদ পেয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাংসদ হয়েছেন – তারই প্রধান সহযোগী হিসেবে পরিচিত ৭ খুনের পরিকল্পনাকারী নূর হোসেন। ফলে সরকারি দল-প্রশাসন-র্যাব-পুলিশ ও গডফাদারদের মধ্যে গড়ে উঠেছে এক অশুভ চক্র যা দেশে জননিরাপত্তা ও আইনের শাসনের প্রধান অন্তরায়। এরা সারাদেশে বেপরোয়া লুটপাট-চাঁদাবাজি-দখলদারিত্ব ও সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। বিশেষত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেভাবে গুম-অপহরণ ও ক্রসফায়ারের নামে বিনা-বিচারে হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে তা আইনের আশ্রয় পাওয়ার ন্যূনতম গণতান্ত্রিক অধিকারকে বিপন্ন করছে।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, নারায়ণগঞ্জে ৭ খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত র্যাব কর্মকর্তাদের সেনাবাহিনী থেকে অবসর দিয়ে তাদের রক্ষা করলে দেশবাসী তা মেনে নেবে না, তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে ফৌজদারী আইনে বিচারের সম্মুখীন করতে হবে। যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে র্যাব এই কাজ করেছে, সরকার দলীয় সেইসব সন্ত্রাসী-গডফাদারদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও পক্ষপাতহীন তদন্ত-বিচার করতে হবে। নেতৃবৃন্দ জনগণের প্রতি আহ্বান জানান, সরকারি দলের আশ্রয়পুষ্ট গডফাদার ও রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাতে গুম-অপহরণ-বিনা বিচারে হত্যার বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তুলুন এবং খুনী-সন্ত্রাসী-গডফাদারদের লালনপালন ও রক্ষা করে যে রাজনীতি তাকে প্রত্যাখ্যান করুন|