৩০ এপ্রিল ২০১৫ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষিকা লাঞ্ছনাকারী ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ছাত্র আরজ মিয়াকে গ্রেফতার ও ছাত্রত্ব বাতিলের দাবিতে মিছিল, সমাবেশ ও উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি পেশ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভবনের ও উপাচার্য কার্যালয়ের সামনে লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মাহিদুল ইসলামের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী সুইটি আক্তার রিমু, সিহাম সাজ্জাদ, বৃষ্টি, আজহার ও গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী তিথি চক্রবর্তী ও গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী প্রসেনজিৎ সরকার।
সমাবেশে বক্তরা বলেন “গত ২৬ এপ্রিল লোক প্রশাসনের শিক্ষিকাকে লাঞ্ছিত করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০০৯-২০১০ সেশনের ছাত্র’ বখাটে আরজ মিয়া। আমরা অবিলম্বে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আরজ মিয়াকে গ্রেফতার ও ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে। একইভাবে একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো: সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের যে অভিযোগ এনেছে বিভাগের দশম ব্যাচের একজন ছাত্রী। আমরা ঐ শিক্ষকের স্থায়ী অপসারণ দাবি করি।”
বক্তারা আরো বলেন, “ ঘরে ও বাইরে নারী নির্যাতনের ঘটনা আমাদের দেশে প্রতিনিয়ত ঘটছে। নারীরা যে কতটা অনিরাপদ, তা আরেকবার প্রমাণিত হলো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একজন শিক্ষিকা হবার পরও লাঞ্ছিত হবার ঘটনায়। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন অমানুষ কিভাবে জন্ম নিতে পারে? অভিভাবকসম একজন মানুষকে এভাবে অপমানিত করলো বিশ্ববিদ্যালয়েরই একজন শিক্ষার্থী? এমন জঘন্য ঘটনার যদি বিচার না হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক হিসেবে আমাদের দাঁড়াবার আর কোনো নৈতিক জায়গা থাকে না। আমরা মনে করি, একজন শিক্ষকের এই অপমান মানে আমাদেরই অপমান।সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের শিক্ষাদানকারী একজন মানুষের এই আর্তনাদ আমরা ধারণ করি। তাই আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব যতদিন না এই বর্বর ঘটনার বিচার হয়।”
সমাবেশ থেকে আগামী ০৩ মে ২০১৫ বেলা ১১টায় বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সমাবেশ শেষে উপাচার্য বরাবর নিম্নোক্ত দাবিতে স্মারকলিপি পেশ করা হয়-
- অবিলম্বে লোক প্রশাসন বিভাগে শিক্ষিকা লাঞ্ছনাকারী আরজ মিয়াকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার করতে হবে ও স্থায়ীভাবে ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে।
- যৌন নিপীড়ক একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো: সাখাওয়াত হোসেনকে স্থায়ীভাবে অপসারণ করতে হবে।
- ক্যাম্পাসে নারীর নিরাপত্তা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
- যৌন নিপীড়নবিরোধী নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে।