শিশু কিশোর মেলা সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে বিজয় দিবস ২০১৪ উদযাপন উপলক্ষে ২৫ ডিসেম্বর ২০১৪ শ্রীহট্ট সংস্কৃত কলেজে দিনব্যাপী ‘মুক্তিযুদ্ধের কিশোর গাঁথা ’ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।
দিনব্যাপী এ আয়োজনে সিলেটের বিভন্ন স্কুলের দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীরা ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে দেয়ালিকা প্রতিযোগিতা, কিশোর মুক্তিযোদ্ধা ও বুদ্ধিজীবী চরিত, মুক্তিযোদ্ধার গল্প, ঐতিহাসিক সময়ের ছবি প্রদর্শনী, কুইজ, মুক্তিযোদ্ধের চিঠি লেখা , গান-আবৃত্তি ইত্যাদিতে অংশগ্রহণ করে। আংশগ্রহনকারী ছাত্রদের “শহীদ মতিউর”, “শহীদ রুমি”, “শহীদ আজাদ”, “ কিশোর মুক্তিযোদ্ধ পুতুল” এবং “কিশোর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল” নামে মোট ৫টি দলে ভাগ করা হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে স্কুল ছাত্রদের দ্বারা নির্মিত দেয়ালিকা ‘ মুক্তির জয়গান’ ,‘মুক্তির ডাকে আমরা’,‘কিশোরদের চেতনায় ৭১’ এবং ‘ফিরে দেখা’ প্রকাশিত হয়।
দেয়ালিকা মূল্যায়ন করেন সিলেটের সাংস্কৃতিক সংগঠক অনিমেষ বিজয় চৌধুরী, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক্স এন্ড ইলেকট্রিক্স বিভাগের শিক্ষক খন্দকার দাহিরুল ইসলাম মিথুন। এ সময় ৭১’রের রণাঙ্গণ থেকে ‘মুক্তিযোদ্ধার চিঠি’ পাঠিত হয় এবং পরবর্তীতে ‘মুক্তিযুদ্ধের চিঠি’ লিখা প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়। ‘মুক্তিযুদ্ধের চিঠি’র মূল্যায়ন করেন সিলেটের সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব এ্যাডভোকেট গোলাম সোবহান চৌধুরী দীপন এবং এ্যডভোকেট হুমাযুন রশীদ সোয়েব
পরবর্তীতে গত ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানের পেশোয়ারে তালেবান হামলায় নিহত শিশুদের প্রতি অস্থায়ী শোকস্তম্ভে শোকঞ্জাপনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের প্রথম অংশ শেষ হয়।
দুপুরের খাবার বিরতির পর বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবল চন্দ্র পাল তার যুদ্ধকালীন অভিঞ্জতা বিনিময়ের মধ্যমে অনুষ্ঠানের ২য় পর্বের সূচনা করেন। এ সময় অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে ৬ জন, কিশোর মুক্তিযোদ্ধা ও বুদ্ধিজীবীদের চরিত্র অভিনয়ের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলে এবং ঐতিহাসিক সময়ের ছবি দ্বারা নির্মিত ডকুমেন্টারি প্রদর্শনশিত হয়। সারা দিনের সমস্থ আয়োজনের ভিত্তিতে কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়, শিক্ষার্থীরা ২টি ভাগে বিভক্ত হযে কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। অনুষ্ঠানে আরোও বক্তব্য রাখেন শিশু কিশোর মেলার কেন্দ্রীয় সংগঠক নাঈমা খালেদ মনিকা, তাজ নাহার রিপন, লিপন আহমেদ প্রমুখ।সর্বশেষ গান -আবৃত্তি এবং ‘আমরা করবো জয়’ গানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
বক্তারা বলেন, আজ শিশু কিশোররা দেশের ইতিহাস জানে না, বুঝতে পারে না ইতিহাসের প্রতি তাদের দায় কি? তাই শিশু কিশোরদের মধ্যে দেশপ্রেম দায়বোধ এবং সৃজনশীলতা সৃষ্টির জন্যে কাজ করছে। কিন্তু পাঠ্যপুস্তকেও মুক্তিযোদ্ধের যথাযথ ইতিহাস নেই। তাই ছিন্নমূল হয়ে গড়ে উঠছে এ প্রজন্ন। বক্তারা এই সর্বগ্রাসী সংকট থেকে শিশুদেরর রক্ষা করতে সকল সচেতন মানুষের প্রতি আহ্বান জানান।